Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় পার্টির এমপি মাঈদুল ইসলামের ইন্তেকাল

প্রেসিডেন্ট-স্পিকার-জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিএনপির শোক প্রকাশ

| প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : কুড়িগ্রাম-৩ আসনের জাতীয় পার্টির এমপি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সাবেক মন্ত্রী এ কে এম মাঈদুল ইসলাম মুকুল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। জাতীয় পার্টির নেতা মাঈদুল ইসলামের ইন্তেকালে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার, জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক জানিয়েছেন। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় উলিপুর স্টেডিয়াম মাঠে জানাযার পর আবার তার লাশ ঢাকায় আনা হবে।
তার ছোট ভাই তানভীরুল ইসলাম ইনকিলাবকে জানান, ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত মাঈদুল ইসলাম বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই রাজনীতিবিদের বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। পেশায় শিল্পপতি মাঈদুল ইসলাম ছয়বার কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনের জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে এসেছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানে হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, পরে এইচ এম এরশাদ সরকারের মন্ত্রিসভাতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বর্তমান এমপির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার রূহের মাগফিরাত কামনা করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এক শোকবার্তায় বলেছেন, মাঈদুল ইসলামের ইন্তেকালে বাংলাদেশ একজন জনদরদি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারাল। তানভীরুল ইসলাম জানান, গতকাল শুক্রবার জুমার পর আসাদ গেইটের নিউ কলোনি মসজিদে তার ভাইয়ের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিরোধী দলে চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির স্থীয় কমিটির সদস্য সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকার, সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, জাতীয় পার্টির এমপি এ কে এম মোস্তাফিজার রহমান, উলিপুর পৌরমেয়র তারিক আবু আলা চৌধুরী, বিএনপির নেতা আবদুল খালেক প্রমুখ। আজ শনিবার তার কফিন হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হবে কুড়িগ্রামের উলিপুরে তার নির্বাচনী এলাকায়। বেলা সাড়ে ১১টায় উলিপুর স্টেডিয়াম মাঠে জানাযার পর আবার তার লাশ ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। আগামী রোববার বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এবং আসরের পর গুলশানের আজাদ মসজিদের আরও দুই দফা জানাযা হবে মাঈদুল ইসলামের। পরে বনানী কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
জাতীয় পার্টির নেতা মাঈদুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন শুরু জিয়াউর রহমানের জাগো দলে। ১৯৭৯ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় সদস্য হন। জিয়ার মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভাতেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। জিয়া নিহত হওয়ার পর বিএনপিতে যে কজন নেতার সক্রিয় ভ‚মিকা ছিল, তাদের মধ্যে মাঈদুল ছিলেন অন্যতম। তিনি ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন ১৭ রংপুর ১৬ থেকে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন এবং প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিপরিষদের ডাক, তার ও টেলিফোন মন্ত্রী হন। ওই সময় তিনি ছিলেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী। এ সময় তিনি ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালে ডাক, তার ও টেলিফোন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, ১৯৮৫-৮৬ এবং ১৯৮৬-৮৭ সময়ে ভ‚মি মন্ত্রণালয়, ১৯৮৬ সালে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ১৯৮৮-৮৯ সালে পাট মন্ত্রণালয় এবং ১৯৮৯ সালে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু পরে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এইচ এম এরশাদের মন্ত্রিসভায় ভ‚মি, নৌ-পরিবহন, পাট, বন ও পরিবেশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর একবার পুরনো দল বিএনপিতে ফিরলেও পরে আবার তিনি এরশাদের দলে যান এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকেই এমপি নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক জানিয়েছেন। মাঈদুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগম ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি মারা যান। এই দম্পতি দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মো. জাফর আলী, জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীরুল ইসলাম, সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতি শিউলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আতিয়ার রহমান মুন্সি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হায়দার আলী মিঞা, পৌরমেয়র তারিক আবুল আলা চৌধুরীসহ উলিপুর প্রেস ক্লাব এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
মুসলিম লীগের শোক
সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান কুড়িগ্রাম-৩ আসনের এমপি এ কে এম মাঈদুল ইসলাম মুকুলের মৃত্যুতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা আহমেদ সুজা ও মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের এক শোকবার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তার রূহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্ট

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ