Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘টার্গেট ১২শ’ ভোট, আধঘন্টা তো লাগবেই’

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ১২:৫৬ পিএম

ঘড়িতে তখন বেলা দশটা। খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভোট কেন্দ্র রূপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পুলিশী পাহারায় হৈ হৈ করে কেন্দ্র ঢুকলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর একদল কর্মী। প্রথমেই তারা কয়েকটি বুথ থেকে বের করে দিলেন ভোটার ও অন্যান্য প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের। তারপর প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষ থেকে নিয়ে আসলেন বেশ কয়েকটি নতুন ব্যালট বই। চারটি বুথের প্রতিটিতেই দুই-তিনটি করে নতুন ব্যালট বই নিয়ে ঢুকলেন তারা।
এরপর প্রকাশ্যে চালালেন সিল মারার মহোৎসব। দু চারজন ভোটার নিজেদের ভোট দিতে চাইলে তাদের ধাক্কা মেরে ও ধমক দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এ সময় প্রিসাইডিং অফিসারসহ নির্বাচনী দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ছিলেন পুতুলের মতো নিশ্চুপ, নিশ্চল। খবর পেয়ে সাড়ে দশটার দিকে সাংবাদিকরা সে কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই কেন্দ্রের মোট ১৩৬০ ভোটের বেশিরভাগই ঢুকে গেছে বাক্সে। প্রতিটি বুথের বাক্সগুলো সাড়ে দশটার মধ্যেই উপছে পড়ছিল সিলমারা ব্যালটে। এ কেন্দ্রে ভোট দিতে না পারা বেশ কয়েকজন ভোটার এমন অভিযোগ করেছেন। তাদের একজন বয়স্কা হাসিনা বেগম। তিনি বলেন, আমি ভোট দিকে কেন্দ্রে ঢুকলে আমাকে ধাক্কা মেরে বের করে দিয়েছে। ছেলেগুলো বলেছে, আপনি বয়স্ক মানুষ, কষ্ট করে ভোট দেয়া লাগবে না। আমরাই দিয়ে দিয়েছি। আরেকজন ভোটার আম্বিয়া ২ নম্বর বুথের ভোটার ছিলেন। তার ভোটার নাম্বার ৪৭২। তিনিও একই ধরনের অভিযোগ করেন। কেন্দ্রের বাইরে একজন বয়স্ক ভোটার নিরস বদনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার কাছে ভোট দিতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে বললেন, আমাদের ভোট হয়ে গেছে। এদিকে খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে ছুটে গেলে কেন্দ্রের গেটে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্যকে বলতে শোনা গেছে, সিল মারতে এতো সময় লাগে নাকি। সাংবাদিকরা এসে পড়েছে। এ সময় পাশে থেকে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, টার্গেট ছিল ১২শ’, আধঘন্টা তো লাগবেই। ওদিকে সকাল থেকেই এ কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগন্য। তাহলে বেলা সাড়ে দশটার মধ্যেই কিভাবে এতগুলো ভোট কাস্ট হয়েছে তা জানতে চাইলে ২ নম্বর বুথের পোলিং অফিসার রাশেদা আক্তার বলেন, এ বুথে তিনশ ভোটই কাস্ট হয়ে গেছে। কোন সমস্যা হয়নি। সাংবাদিকদের দেখে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত ডিবি পুলিশের এসি ইমরান প্রিসাইডিং অফিসারকে ধমক দিচ্ছিলেন। এ সময় প্রিসাইডিং অফিসার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সামান্য একটু গণ্ডগোল হয়েছিল। আমরা সাময়িকভাবে কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছি। একই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে নগরীর রূপসা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। সেখানেও ভোটারদের বের করে দিয়ে সরকার সমর্থকরা জোর করে ব্যালট ছিড়ে সিল মেরেছেন বলে জানিয়েছেন অনেক ভোটার।



 

Show all comments
  • শওকত আকবর ১৫ মে, ২০১৮, ২:০৬ পিএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন হায়েরে দেশ ,হায়েরে দেশে এর স্বাধিনতা??
    Total Reply(0) Reply
  • ams ১৫ মে, ২০১৮, ২:৪৫ পিএম says : 0
    Eta ki vote? dekhon ei holo digital Bangladesher gonotontro.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনা সিটি

৩০ নভেম্বর, -০০০১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ