Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিআইবিএম গবেষণা প্রতিবেদন তারল্য সঙ্কট আরো বাড়ার আশঙ্কা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং ব্যবস্যায় যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন না করলে তারল্য সংকট আরও বাড়ার আশংঙ্কা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঋণের প্রবৃদ্ধি যে হারে বাড়ছে তার চেয়ে অনেক কম হারে বাড়ছে আমানত। ২০১৫ সালের জুনে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক সাত শতাংশ আর আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল একই সময়ে ১২ দশমিক চয় শতাংশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক এক শতাংশ সেখানে আমানতের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ছয় শতাংশ। এ অবস্থা চলতে থাকলে তারল্য সংকট আরও বাড়বে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ট্রেজারি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। তিনি দক্ষতার সঙ্গে ট্রেজারি ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের মুজাফফর আহমেদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. বরকত-এ-খোদা, বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর ইয়াছিন আলি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ কামাল খান চৌধুরী, বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ বারিকুল্লাহ।
কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের প্রফেসর মো. নেহাল আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের প্রভাষক রিফাত জামান সৌরভ, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিডেটের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং হেড অব ট্রেজারি মেহেদী জামান এবং ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং হেড অব ট্রেজারি আরেকুল আরেফিন।
ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ব্যাংকের ট্রেজারি ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংককে বিষয়টি সর্তক থাকতে হবে। বর্তমানে ডলারের দাম একটু উর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশ ব্যাংক পুরো বিষয়টি নজরদারী করছে, যাতে এটি আর না বাড়ে।
প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে বর্তমানে অ্যাডভান্সড ডিপোজিট রেশিও (এডি) ৮৪ দশমিক সাত শতাংশ। ট্রেজারি ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে না হলে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে ৮৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ হতে হবে।
প্রফেসর ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ব্যাংকাররা ব্যাংকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদেরকে ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষতার পরিচয় না দিলে পুরো ব্যাংকিং খাত ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
প্রফেসর হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, স্বার্থের বাইরে ঋণপত্র খুলে পরবর্তীতে তারা বৈদেশিক মুদ্রা তথা ডলার সংস্থাপনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ফান্ডের যোগান চায় বাজারে ডলারের ওপর চাপ পড়ে। এতে ডলারের দাম উর্দ্ধমুখী হয়। ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় কর্মরত কর্মীদের ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের সঠিক তথ্য দিতে হবে। এটি না করলে বাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।
প্রফেসর ইয়াছিন আলি বলেন, স্প্রেড পাঁচ শতাংশের নীচে আনতে হবে। বন্ড মার্কেট উন্নয়নে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্র কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের জন্য নিষিদ্ধ থাকা প্রয়োজন।
মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় ভুল নীতির কারণে ২০০৭ সালে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংক। এ কারণে ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় কোন ভুল করলে চলবে না।
আহমেদ কামাল খান চৌধুরী বলেন, ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় জড়িত ব্যাংকারদের ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এবং শীর্ষ ব্যক্তিদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহজ হবে। ড. শাহ মো. আহসান হাবীব বলেন, ব্যাংকের ট্রেজারি ব্যবস্থাপনা বৈশ্বিকভাবে তাল মিলিয়ে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ##

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ