Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত

| প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায়ের পর দীর্ঘদিন প্রবাসে রিফ্যুজি হিসেবে প্রবাসে কাটাতে বাধ্য হবার পর আওয়ামী লীগ তাকে সভাপতি নির্বাচন করলে ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি দেশে ফিরে আসেন। সেদিন বিকাল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের নেতারা গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। প্রথমে দলের সিনিয়র নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এবং সাহারা খাতুন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এবং ডা. দীপু মনিসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে একে একে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন এবং মহিলা শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা শুভেচ্ছা জানায় প্রধানমন্ত্রীকে।
শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়–য়া গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি বøকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই দেশ আজ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি, অবকাঠামো, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রেই উন্নতি লাভ করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এসময় দেশের উন্নতি, অগ্রগতি, সফলতা ও প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া- মোনাজাত পরিচালনা করেন।
দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এদিন আলোচনা সভার আয়োজন করে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এসময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে তারা রেহাই পান।
পরবর্তীতে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রæয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত প্রায় ১৫ লাখ মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসার জবাবে তিনি এদিন বলেন, বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসাবে, মেয়ে হিসাবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।

 


‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ আরো স্পষ্ট হয়েছে : টিআইবি
স্টাফ রিপোর্টার : বিরোধী দল হিসেবে নিজস্বতা না থাকায় বর্তমান সংসদের শুরুর দিকে সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ বলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। কয়েক বছর পরে এসে সংস্থাটি মনে করছে, তাদের সেই বিতর্কিত মন্তব্যের বাস্তবতা এখন আরো স্পষ্ট হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দশম জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট ওয়াচ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। চলতি সংসদের ১৪তম থেকে ১৮তম অধিবেশন পর্যন্ত (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত অধিবেশন শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের সংসদ অধিবেশন নিয়ে টিআইবির গবেষণা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অভিমত তুলে ধরেন দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো সংসদে উত্থাপন না করাকে সন্দেহজনক হিসেবেও চিহ্নিত করেছে টিআইবি। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে বিশ্লেষণটা করেছিলাম, সেই জায়গায় আমাদের বিশ্লেষণ এখনো সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত আছে। আমরা মূল যে কথাটি বলেছি, সেটা এখনো বলছি। সেটা হচ্ছে, বিরোধী দল হিসেবে যারা নিজেদের দাবি করছে বা যাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে বা উত্থাপন করা হচ্ছে, তারা শুরু থেকেই একটি আত্মপরিচয় সঙ্কটে ভুগছেন এবং এখন পর্যন্ত। পরিবর্তন যেটা হয়েছে, সেটা হচ্ছে এই পর্যায়ে আমরা দেখেছি, তাদের নিজেদের কণ্ঠে তার প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা যে কথাগুলো বলেছিলাম, একদম একই কথা তাদের মুখ থেকে আমরা শুনেছি। অর্থাৎ আমাদের বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। টিআইবি তাদের গবেষণায় যে বিষয়টিকে অত্যন্ত সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তা হলোÑ গত বছর যে আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো হয়েছে তা সংসদে উত্থাপন না করার প্রবণতা। সেইসঙ্গে আইন পাসের ক্ষেত্রেও রয়েছে এক ধরনের তড়িঘড়ি করার প্রবণতা।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে, মাত্র ৩৫ মিনিটে একেকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে সম্মতি আছে কি নাই, আমাদের সেখানে কতখানি ভালো হবে কি মন্দ হবে, কতখানি সেটা দেশের ভালোর জন্য করা হচ্ছে, কতখানি অন্য কোনো কারণে করা হচ্ছে, কোনো কিছুই আমাদের জানানো হচ্ছে না। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘চুক্তির বিষয়বস্তু এবং সেটা নিয়ে আলোচনা করার এখতিয়ার সবার আগে কিন্তু জনগণের। জনগণের পক্ষ হয়েই কিন্তু আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পন্ন হয়। কাজেই এই জায়গাটায় যে ঘাটতি হচ্ছে, সেটাই আমাদের চিহ্নিত করার ইচ্ছা ছিল। বেশ কিছু চুক্তি এ সময় গত বছরে স্বাক্ষরিত, যেটা আপনারাও প্রতিবেদন করেছেন। কাজেই এই বিষয় বেশ উপকৃত হয়েছে এবং আমি জানি না প্রকাশিত যে হচ্ছে না, যেহেতু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না, সেটি উদ্দেশ্যমূলক কি না সেটাও দেখার বিষয় আছে।
গত বছর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৩০ মিনিট কোরাম সঙ্কটের কারণে অপচয় হয়েছে। এর প্রতি মিনিটে গড় অর্থমূল্য ৬৩ হাজার ৬৮৬ টাকা। এই হিসাবে গত বছর কোরাম সঙ্কটের সময়ের অর্থমূল্য ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৮ টাকা। চলতি দশম সংসদে কোরাম সঙ্কটের অর্থমূল্য ১২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া অধিবেশনে মোট ব্যয় হওয়ার ২৬০ ঘণ্টা ৮ মিনিটের মধ্যে অশালীন ভাষার (আক্রমণাত্মক, কটু ও অশ্লীল শব্দ) ব্যবহার হয়েছে ১৩ ঘণ্টা। আর এতে ব্যয় হয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮০ টাকা। সরকার ও বিরোধী দলের নেতা ও সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করা হলেও এ ধরনের আলোচনা বন্ধে স্পিকারের কার্যকর ভ‚মিকার ঘাটতি রয়েছে বলা হয়। সুশাসন ও জাবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে সংসদের প্রত্যাশিত ভ‚মিকায় ঘাটতি রয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, বিভিন্ন আলোচনা পর্বে সংসদ সদস্যরা অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছেন মোট সময়ের ৫ শতাংশে। সদস্যদের ভেতরের প্রতিপক্ষ দল সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে ১৯৫ বার অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছে। বিশ্বব্যাংক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার হয়েছে ২৩ বার। সরকার ও বিরোধী দলের নেতা ও সংসদের বাইরের (বিএনপি) রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করা হলেও এ ধরনের আলোচনা বন্ধে স্পিকারের কার্যকর ভ‚মিকার ঘাটতি দেখা যায়। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংসদের কোরাম সঙ্কট সবসময়ই ছিল। এখন সেটি গড়ে ৩০ মিনিট, যা উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের ভ‚মিকা পালনে ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। বিরোধী দল হিসেবে যাদের উপস্থাপন করা হয়েছে, সংসদের শেষ দিকে এসে তাদের নিজেদের আত্মপরিচয়ের সঙ্কট একাধিকবার তাদের নিজেদের মুখেই শোনা গেছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত ভ‚মিকা পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছে। কোরাম সঙ্কটের অর্থমূল্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা প্রাক্কলিত আনুমানিক অর্থমূল্য। এটাকে টিআইবি দুর্নীতি বলছে না। একটি ধারণা দেয়ার জন্য এই অর্থমূল্যের প্রাক্কলন করা হয়েছে। সংসদে ৩৫০ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন। কোরাম হলো সংসদ অধিবেশন বসার ন্যূনতম যোগ্যতা। সংসদে ন্যূনতম ৬০ জন সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম গঠিত হয়। সংসদে ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না থাকলে কোরাম সঙ্কট হয়।
সংসদে অশালীন ভাষার ব্যবহার হয়েছে ১৩ ঘণ্টা \
তিনি জানান, অধিবেশনে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৩০ মিনিট কোরাম সঙ্কটের কারণে অপচয় হয়েছে। এর প্রতি মিনিটে গড় অর্থমূল্য ৬৩ হাজার ৬৮৬ টাকা। এই হিসাবে গত বছর কোরাম সঙ্কটের সময়ের অর্থমূল্য ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৮ টাকা। চলতি দশম সংসদে কোরাম সঙ্কটের অর্থমূল্য ১২৫ কোটি টাকা। কোরাম সঙ্কটের অর্থমূল্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা প্রাক্কলিত আনুমানিক অর্থমূল্য। এটাকে টিআইবি দুর্নীতি বলছে না। একটি ধারণা দেয়ার জন্য এই অর্থমূল্যের প্রাক্কলন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে তার আগের সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ নেয়নি। চলমান সংসদের বিরোধী দলের ভ‚মিকায় রয়েছে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার ভ‚মিকায় রয়েছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারপারসন রওশন এরশাদ। আর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়েছেন এরশাদ। এরপর ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর টিআইবি বর্তমান সংসদ সম্পর্কে পুতুল নাচের নাট্যশালা’ হিসেবে মন্তব্য করে।
বিশেষ দূত এরশাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবি’র
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার দায়িত্ব থাকলেও তিনি তা পালন করেননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডির টিআইবি কার্যালয়ে পার্লামেন্ট ওয়াচ দশম জাতীয় সংসদ চতুর্দশ থেকে অষ্টাদশ অধিবেশন (জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০১৭) শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধান বিরোধী দলের চেয়ারম্যানকে (এরশাদ) ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তার এই নিয়োগের সরকারি কোনও গেজেট প্রকাশ হয়নি এবং কোনও দাফতরিক নির্দেশনাও পাওয়া যায়নি। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, বিশেষ দূত হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল আধুনিক মুসলিম প্রধান গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এবং দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অসা¤প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্য বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়া। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রফতানির বাজার প্রসারে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করা। দায়িত্বকালীন সময়ে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ (চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভুটান) সফর করলেও বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালনে ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের অনিয়মিত সদস্যদের তালিকাতেও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নাম অন্যতম বলে মন্তব্য করেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতীয় সংসদে তিনি সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা খুব একটা না করলেও বাইরে বিশেষ করে দলীয় প্ল্যাটফর্মে কঠোর সমালোচনা করেন। এই সমালোচনা কতটুকু বাস্তব আর রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য সেটাও প্রশ্নের বিষয়। টিআইবি’র গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, দশম জাতীয় সংসদের মোট ১৮টি অধিবেশনের ৩২৭ কার্যদিবসে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত উপস্থিত ছিলেন ৭৯ কার্যদিবস। তার উপস্থিতি শতকরা ২৪ ভাগ। তিনি সংসদে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করেননি। গবেষণাটি উপস্থাপন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের ডেপুটি প্রোগাম ম্যানেজার মোরশেদা আক্তার, নিহার রঞ্জন রায় ও অ্যাসিসট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিত সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ