Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সুফল পেতে তিন মাস লাগবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

উৎক্ষেপণের একাদশ দিনে মহাকাশের নির্ধারিত কক্ষপথে (১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল ¯øট) পৌঁছেছে দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় স্যাটেলাইটটি তার জন্য নির্ধারিত কক্ষপথ অর্থ্যাৎ ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের অরবিটাল ¯øটে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান। তিনি বলেন, ফ্রন্সের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা ও বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কক্ষপথে পৌঁছায়।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল সংসদীয় কমিটির সভা শেষে জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এখন তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবস্থান করছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এর সুফল পাওয়া যাবে। এটিকে তিন মাসের মধ্যে কার্যকর অবস্থায় নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর আমরা অপেক্ষা করেছিলাম এটি কখন সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে এসে দাঁড়াবে। সুসংবাদ হচ্ছে গত রাত্রে এটির নির্দিষ্ট যে কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ সেই জায়গাতে স্থাপিত হয়েছে। এটিই তার সুনির্দিষ্ট জায়গা। সবচেয়ে বড় সুখবর যেটি তা হলো এখন পর্যন্ত আমরা কোনো ত্রæটি পাইনি। মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ থেকে স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা করা হবে। একে বাণিজ্যিভাবে ব্যবহার করার জন্য কিছু সময় লাগবে। প্রায় তিন মাসের মত সময় লাগবে। গত ১২ মে রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া মূলত দুটি ধাপে শেষ হয়। প্রথম ধাপটি হল ‘লঞ্চ অ্যান্ড আরলি অরবিট ফেইজ (এলইওপি)’ এবং দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে ‘স্যাটেলাইট ইন অরবিট’। এলইওপি ধাপে ১০ দিন লাগে। দ্বিতীয় ধাপে স্যাটেলাইটটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ২০ দিন লাগে। স্যাটেলাইটটি সম্পূর্ণ চালু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশনে হস্তান্তর করা হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায়।
‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ স্থাপনের লক্ষ্যে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল ¯øটের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারস্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব স্পেস কমিউনিকেশনসকে ১৫ বছরের জন্য দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার দিতে হবে। বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদেশী স্যাটেলাইটের ফ্রিকোয়েন্সি ভাড়া নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেল, টেলিফোন, রেডিওসহ অন্যান্য যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। এতে প্রতি বছর ভাড়া বাবদ বাংলাদেশকে ১৪ মিলিয়ন ডলার গুণতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কার্যক্রম শুরু হলে দেশে শুধু বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয়ই হবে না, স্যাটেলাইটের অব্যবহৃত অংশ নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে প্রতি বছর ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ আয় করা যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি ৪০টি ট্রান্সপন্ডার ক্যাপাসিটি সম্পন্ন। এই ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে বাংলাদেশের জন্য ২০টি রাখা হবে। স্যাটেলাইট ডিজাইন লাইফ ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে এই ২০টি ট্রান্সপন্ডার যথেষ্ট হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগযোগ মন্ত্রণালয়। আর বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় অবশিষ্ট ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিক্রি বা ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ১১ নভেম্বর ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের জন্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কিনতে থালিসের সঙ্গে চুক্তি করে বিটিআরসি।



 

Show all comments
  • rakib ২৩ মে, ২০১৮, ২:৩৬ এএম says : 0
    It's a big achievement for us
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ