Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বোয়ালখালী থেকে বাজারজাত হচ্ছে নষ্ট সার, পরিবেশ দূষণের অভিযোগ এলাকাবাসীর, নীরব প্রশাসন

| প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এম এস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) থেকে : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় পাথরের মতো শক্ত নষ্ট সার গুড়ো করে বাজরজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী চরখিজিরপুর এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে এস এ সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লি: এর জায়গায় এ নষ্ট সার বাজার জাতের উপযোগী করে বস্তা ভর্তির কাজ সম্পন্ন করছেন শ্রমিকরা। এসব নষ্ট সার নৌ ও সড়ক পথে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে প্রশাসন এ বিষয়ে কিছুই জানেনা বলে জানান। এ্লাকাবাসীর অভিযোগ্ স্থানীয় প্রশাসন মোটা অংকের উপরি নিয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। তারা আরো বলেন, এ নষ্ট সারের কারণে এলাকাটি মারাত্মক পরিবেশ দূষণ করছে। ফলে এলাকায় বিভিন্ন রোগ ব্যাধির সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ মাস ধরে একটি প্রভবশালী অসাধু চক্র এসব নষ্ট সার নদী পথে বড় নৌকা বোঝায় করে কয়েক হাজার হাজার টন নষ্ট সার উপজেলা পশ্চিম গোমদন্ডী চরখিজিরপুর একটি চর এলাকার এস এ সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লি: এর জায়গায় মজুদ করেন। পরে তা গুঁড়ো করে ও চালুনি দিয়ে ছেকে প্রক্রিয়াজাতের উপযোগী করে বস্তায় ভর্তি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। বিএসটিআই এর লোগো যুক্ত পঞ্চাশ কেজি ওজনের প্রতিটি প্লাাস্টিকের বস্তার গায়ে লেখা আছে, ‘টিএসপি সার, ফসফেট ৪৬%। এ নষ্ট সার প্রক্রিয়াজাত করতে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত শ্রমিক কাজ করেন । দিনের পর দিন খোলা জায়গায় এ সার প্যাকেটজাত করার ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা জানায়, তাঁরা দৈনিক ৫’শ টাকা বেতনে এখানে কাজ করছেন। প্রতি বস্তা সারের দাম এক হাজার টাকা থেকে ১২শত টাকা পর্যন্ত।
এ নষ্ট সার উন্মুক্ত স্থানে রাখায় পরিবেশ দূষণের কথা উল্লেখ করে গত কয়দিন আগে বোয়ালখালী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন স্থানীয় এক শিল্প প্রতিষ্টান। কিন্তু ডায়েরী করার র্দীঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কার্যকর কোন ব্যবস্থ নেয়া হয়নি।
তবে বোয়ালখালী থানা পুলিশ গত ১৭ মার্চ রাতে অভিযান চালিয়ে বস্তা সেলাইয়ের মেশিনসহ দুই শ্রমিককে আটক করেন। পরবর্তীতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে বিষয়টির ব্যাপারে বার বার জানানো হলেও কেউই এ বিষয়ে স্থায়ী ও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে অসাধু চক্রটি দেদারছে বিক্রি ও বাজারজাত করে যাচ্ছে। তারা আরো জানান, স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন প্রায় সময় এসে মোটা অংকের উপড়ি নিয়ে যায়। ফলে প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছে। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, দিনরাত সমান তালে হাজার হাজার বস্তা ভর্তি করছে শ্রমিকরা। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় আটককৃত দুই শ্রমিককে ছেড়ে দিতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে এস এ সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লি:এর ম্যানেজার (ভুমি) মো. সাইফুদ্দিন বলেন, নষ্ট সার পেকেট ও বাজার জাতের খবর পেয়ে এলাকা দূষন হওয়ার সম্ভাবনায় আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। তবে তারা কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় দুষ্কৃতকারিরা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিমাংশু কুমার দাস বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ বলেন, নষ্ট সার বাজার জাতের বিষয়ে কেউ তাঁকে জানায়নি। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এ নষ্ট সার বাজার জাতের ঘটনাটি তিনি সরেজমিনে গিয়ে দেখবেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আছিয়া খাতুন বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই অবগত নন। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে জানায় তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রশাসন

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ