Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে ছেলের বন্ধুর হাতেই খুন সেই ব্যাংক কর্মকর্তা

লোভী তিন কিশোরের ভয়ঙ্কর কান্ড !

| প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘বাবা ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ টাকা লোন পেয়েছেন। এ টাকা দিয়ে আমরা বাড়ি করব।’ বন্ধুদের আড্ডায়-গল্পে দেয়া এমন তথ্য যে তার বাবার মৃত্যুর কারণ হবে তা ভাবতেও পারেনি স্কুল ছাত্র সৈকত নন্দী দ্বীপ (১৬)। বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দী খুনের ঘটনায় তিন বন্ধুকে গ্রেফতারের পর চমকে উঠে সে। এমন ভয়ঙ্কর বন্ধুদের প্রতি প্রচÐ ঘৃণার পাশাপাশি গল্প করতে গিয়ে এমন তথ্য দেয়ার জন্য নিজেকে অপরাধীও ভাবতে শুরু করে পিতৃহারা এ কিশোর। অন্যদিকে টাকার লোভে বন্ধুর বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার দায় স্বীকার করে তিন কিশোরের বক্তব্যে হতবাক পুলিশ কর্মকর্তারাও।
গত রোববার নগরীর বন্দর থানার মধ্যম হালিশহর এলাকার বাসা থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিন কিশোরকে গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে চার দিনের মাথায় আলোচিত এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হলো। ২৯ লাখ টাকার লোভে আটক ওই তিনজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। এ খুনের ঘটনায়, দুই কিশোর ও এক তরুণকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতারকৃতরা হলো- দ্বীপের বন্ধু নগরীর একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র প্রতীক মজুমদার (১৬), সদ্য এসএসসি পাশ করা জয় (১৭) এবং এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জিকু বড়ুয়া (১৯)।
পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, নিহত ব্যাংক কমকর্তার ছেলে তার বাবা ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ টাকা লোন পাওয়ার কথা বন্ধুদের জানায়। এরপরপরই তারা ওই বাড়িতে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই বাসায় হানা দেয়। তখন তাদের চিনে ফেলে সজল নন্দী। এসময় তাকে বিছানায় চেপে ধরে তার গলাকেটে হত্যা করা হয়। হত্যাকাÐে ব্যবহৃত ছোরা ও ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া চাবি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পুরো বাসা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ২৯ লাখ টাকা পায়নি তারা। কারণ লোন মঞ্জুর হলেও তখনো ব্যাংক থেকে টাকা তোলেননি তিনি।
পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মেট্রো) মোঃ মইনউদ্দিন বলেন, হত্যাকাÐের ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। ২৯ লাখ টাকার লোভে ঘরে ডাকাতি করতে ঢুকে ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দীকে তারা হত্যা করেছে বলেও স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত তিনজনই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) সদীপ কুমার দাশ বলেন, সজল নন্দীর ছেলের বন্ধু প্রতীক। সজল যে ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ টাকা লোন পেয়েছে সেই তথ্যটি সজলের ছেলে প্রতীককে জানিয়েছিল। প্রতীক তার দুই বন্ধুকে নিয়ে সেই টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে। এরপর সেখানে গিয়ে হত্যাকাÐ ঘটায়। তবে সজলের ছেলে বিষয়টি জানত না। সজল নন্দীর ছেলে নগরীর চান্দগাঁও এলাকার রহমানিয়া স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। সজল নন্দী নগরীর সল্টগোলা এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত রপালী ব্যাংকের শাখায় ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী। সজলের স্ত্রী রুমা নন্দী এনজিওকর্মী। সজলের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ