Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারতকে কী কী দিয়েছেন: প্রধানমন্ত্রীকে বি. চৌধুরীর প্রশ্ন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন রেখেছেন বিকল্প ধারার সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ভারতকে কী কী দিয়েছেন, তা জনগণকে জানানো উচিত ছিল। ভারত আমাদের ভালো বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে। তাই তাদের সহযোগিতা ভোলার নয়। তিনি কবিগুরুর একটি কবিতার পংক্তি উল্লেখ করে বলেন, ‘যতটুকু দিবে ততটুকু নিবে। কিন্তু আমরা কী পেলাম? তিস্তার পানি নাই, পদ্মা পানিশ‚ন্য।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল মেট্রোপলিটনে বিকল্প স্বেচ্ছাসেবকধারা আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি। যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য যুক্তফ্রন্ট জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করবে। তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট বিন্দুতে নেই, এই ফ্রন্ট দেশের মানুষের মনে ঝড় তুলেছে।
বি. চৌধুরী বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট সৎ নেতৃত্বের তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির মঞ্চ হিসেবে ইতোমধ্যে জনগণের মনে ঝড় তুলেছে। জনগণের এই মঞ্চ দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে যা অন্য দুটি রাজনৈতিক শক্তিকে ভারসাম্যের মধ্যে রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনও আমাদের সঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। বি. চৌধুরী বলেন, ‘ভোট দিলে যুক্তফ্রন্ট জাতীয় নির্বাচনের পর পাঁচ বছরের জন্য একটি জাতীয় সরকার গঠন করবে।
বি. চৌধুরী যুক্তফ্রন্টের দাবির পুনরুল্লেখ করে বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন না হলে আগামী সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের ১০০ দিন আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে, যাতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা তাদের পদমর্যাদায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে না পারেন।’
বি. চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন কথা বলেছেন। এ বিষয়ে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের দাবিতে (পরবর্তী সময়ে আমার সমর্থিত) তত্তাবধায়ক সরকার বিল পাস করার প্রয়োজনে তাড়াহুড়োর মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হতো। ওই সময়ে আমার দল বিএনপি নির্বাচনকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যবহার করে নাই। ওই বিল পাস করার পরেই ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।’
এ প্রসঙ্গে বি. চৌধুরী আরও বলেন, ‘অন্যদিকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল অসম্প‚র্ণ, প্রশ্নবিদ্ধ এবং ওই নির্বাচন বিনাভোটে সব সংসদ সদস্য সৃষ্টি করেছে। ভোটারবিহীন ওই নির্বাচনের ওপর ভিত্তি করেই বর্তমান সরকার পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলো। চার বছর হয়ে গেলো, কিন্তু আপনারা ক্ষমতা ছাড়লেন না।
তিনি এরশাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘সংসদে একটা জামাই আদরের দল আছে। তাদের কাজ শুধু তেল মারা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দ‚তকে মাসে পাঁচ লাখ টাকা বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু তার কাজ কী? কী করেন তিনি?’
বি. চৌধুরী বলেন, ‘কাউকে তেল মারা বা খুশি করার জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করি নাই। তার ব্যাপারে আইনের শাসন লঙ্ঘিত হয়েছে। আদালতের আদেশ সত্তে¡ও তাকে মুক্তি দেওয়া হয় নাই।
মাদক ব্যবসার নামে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বি. চৌধুরী দেশের প্রচলিত আইনে মাদক ব্যবসায়ীদের বিচার করার দাবি জানান। তিনি বলেন, মাদক ব্যবসা এরশাদের আমলে শুরু হয়েছে।
গণভবনে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নাম বিকৃত করে বলায় উষ্মা প্রকাশ করে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘প্রথম কথা আমার নাম বদরুদ্দোজা। এই নামটি আমাদের প্রিয় রসুলের একটি সুন্দর পদবি। এর অর্থ হচ্ছে, ঘোর অন্ধকারে উজ্জ্বল প‚র্ণ চন্দ্র। এই পবিত্র নামটি আমার স্নেহময় নানা আমার জন্য রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, এই নামটিকে বিকৃত করে (অমুক কাকা) বলা প্রধানমন্ত্রীর সমীচীন হয় নাই। পবিত্র কোরআনুল করিমে নাম বিকৃতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এটা স্মরণে রাখলে কৃতজ্ঞ থাকবো।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরল্লাহ চৌধুরী বলেন, ডা. বি. চৌধুরী যখন শিক্ষক, আমি তখন ছাত্র। ওনার মতো একজন দেশবরেণ্য ব্যক্তির নাম বিকৃতভাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিষ্ঠাচার বহির্ভ‚ত কাজ করেছেন।’
তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নেওয়ার জন্য ডা. বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের প্রতি আহ্বান জানান।
বিকল্প স্বেচ্ছাসেবকধারার সভাপতি বিএম নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের কার্যকরি সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রউফ মান্নান, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, শাহ আহম্মেদ বাদল, আবুল বাশার, গণ-সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি এস আই মামুন প্রমুখ।



 

Show all comments
  • ২ জুন, ২০১৮, ৯:১৬ পিএম says : 0
    যোর যার দখল তার
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতকে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ