Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খাকদোন নদীতে সেতু নির্মাণে মন্থর গতি: দু’তীরের মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি

বরগুনা থেকে মোঃ মোশাররফ হোসেন | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বরগুনা শহর দ্বিধা বিভক্তকারী খাকদোন নদীতে নির্মাণাধীন মাছবাজার সংলগ্ন ৩য় সেতুর নির্মাণ কাজে মন্থর গতির ফলে গত প্রায় বছরাধীক সময়ধরে মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আদিকাল থেকে নদীর দু’তীরের মানুষের খেয়া পারাপারে কষ্টের কথা চিন্তা করে নব্বই দশকে বরগুনা জেলার প্রথম জেলা প্রশাসক মোঃ বদিউজ্জামান তার বিদায়ের প্রাক্কালে খুলনা উন্নয়ন তহবিলের আর্থিক সহায়তায় একটি লোহার সেতু নির্মাণ করে ছিলেন। সময়ের ব্যবধানে লোহার সেতুটি ধসে পরার উপক্রম হলে এবং মাঝখানের অংশ ভেঙে গেলে বরগুনা জেলা পরিষদের আর্থিক সহায়তায় রডের ওপর কাঠ বিছিয়ে দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ঝুঁকি নিয়ে মানুষ পারাপার হয়েছে। এ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় দুই তীরের লাখ লাখ মানুষ। বরগুনা ছাড়াও বামনা, বেতাগী ও মঠবাড়ীয়ার মানুষ এ সেতু পার হয়েই বরগুনা শহরে প্রবেশ করে। এসব মানুষের দাবি ও প্রয়োজনের তাগিদে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেতুটি নির্মাণে এলজিইডির মাধ্যমে অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রথম দিকে একাধীকবার দরপত্র আহবান ও বাতিলের কারণে কাজ শুরু বিলন্বিত হতে থাকে। এক পর্যায়ে পটুয়াখালীর ঠিকাদার সোহেল আহম্মেদ কাজ পেলেও কাজের শুরুতে রিভাইজ স্টিমিট করাতে আরো বিলন্ব ঘটে। সর্বশেষ ৪ কোটি ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকায় তিনি কাজ বাস্তবায়নে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কাজ সমাপ্তির নির্ধারিত সময় গত ৩০ ডিসেন্বর ২০১৭ পেরিয়ে যাওয়ায় আবেদন করে আগামী ৩০ জুন ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত সময় বর্ধিত করেন। পুরাতন সেতুটি ভেঙে ফেলায় পাশেই পারাপারের জন্য একটি নরবরে বাঁশের সাকো নির্মাণ করা হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই সাকোটি বেশ কয়েকবার ভেঙে পরে। এ সময়ে খেয়ার মাধ্যমে পারাপার হতে গিয়ে প্রতিদিন বহু সংখ্যক মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হন। বর্তমানেও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের এ সাকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এটির বর্তমান অবস্থা এতই নরবরে যে কোন মুহূর্তে ধসে পরে মারাত্মক দুঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে সেতু নির্মাণ কাজে মন্থর গতির ফলে ২ তীরের মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সেতুর ২ দিকের ঢালাই কাজ শেষ হলেও মধ্যের মূল অংশের ঢালাই কাজের প্রস্তুতি চলছে। হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক যে হারে কাজ করছে তাতে আগামী ৬ মাসেও সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হবে না বলে ধারণা করছেন স্থানীয় জনগন। মাঝখানের অংশের কাজ শেষে দুই দিকের এ্যাপ্রোজ রোড এবং রেলিং-এর কাজসহ আনুসাংগিক কাজ সবই বাকি।
সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে গেলে কাজের তদারকির জন্য ঠিকাদার কিংবা এলজিইডির কোন লোক পাওয়া যায়নি। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ.এস.এম কবীর এ প্রতিনিধিকে বলেন ঈদের আগে মধ্যাংশের কাজ শেষ করে স্বভাবিক পারাপারের জন্য খুলে দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। তবে ঠিকাদারকে ৩০ জুনের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করে হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় ঠিকাদারের পাওনা বাজেয়াপ্ত করা হবে। সাধারন মানুষের পাশে দাড়িয়ে আমাদেরও প্রত্যাশা, এলজিইডি কর্র্তৃপক্ষ তাদের অতীত ঐতিহ্য বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে কাজ শেষ করে সেতুটি পারাপারের জন্য উম্মুক্ত করে দিয়ে সীমাহীন ভোগান্তির হাত থেকে পথচরীদের বাঁচাবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ