Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যাকান্ড, বিএনপি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায়

| প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের নামে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাÐগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যেসব হত্যাকাÐ ঘটিয়েছে, এসব হত্যাকাÐের বিচার হতে হবে। আমরা মনে করি একরামের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, এই বক্তব্যের অর্থ কী। একরামের এই ঘটনা হত্যা না বন্দুকযুদ্ধ সেটা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। একরাম হত্যার বিচার হতেই হবে। গতকাল (সোমবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রজন্ম ’৭১ আয়োজিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নোমান বলেন, এসব হত্যাকাÐের বিষয়ে উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ অথবা এর সমপর্যায়ের বিচারপতিদের নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করা প্রয়োজন। ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অথবা প্রশাসন দিয়ে ওই তদন্ত কমিটি হলে প্রকৃতপক্ষে যারা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে তারা কোনো দিন সুবিচার পাবে না। বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমাদের প্রশ্ন হলো একরাম (টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর) হত্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক) যেসব বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছেন এই বক্তব্যের অর্থ কী? নির্দোষ যারা হত্যার শিকার -তাদেরকে রাজনৈতিক কারণে হত্যা করা হচ্ছে- এটা শুধু আমরা নই, সারা বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলো, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো সবাই একবাক্যে বলছে, এই ধরণের আইনবর্হিভূত হত্যা চলতে পারে না। গণতান্ত্রিক সমাজে এই ধরণের হত্যা পাপ, এই ধরণের হত্যা অমানবিক, আইনবিরোধী।
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, দেশে এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। সংবিধান থেকে মৌলিক কিছু বিষয় বাদ দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের মাধ্যমে যে নির্বাচন হয়েছিল সেগুলো মন্দের ভাল ছিল। কাজেই আজকে দেশে নির্বাচন করতে হলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি ষড়যন্ত্রের নির্বাচন করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ এবার অতীতের আন্দোলনের মতো ঠেকিয়ে দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দলের এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কোনো আলোচনায় অথবা কোনো বৈঠকে দেশনেত্রীকে সরকার মুক্তি দেবে না। কারণ তাকে সবচেয়ে বড় বেশি ভয় পায় বলেই দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে তারা (সরকার) নির্বাচন করতে চায়। তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু মুক্তির জন্য আমাদের আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। এই আন্দোলন বেগবানের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী মুক্তি পাবেন। আসুন, সবাই মিলে আন্দোলন গড়ে তুলি, আন্দোলন গড়ে তুলি নির্বাচনের জন্য, আন্দোলন গড়ে তুলি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, আন্দোলন গড়ে তুলি গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন সব সময় জয়লাভ করেছে। আর যারা অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি করেছে তাদের সেই শক্তি কোনো না কোনো সময় পরাজিত হয়েছে। যেমন আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, এরশাদ পরাজিত হয়েছে। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল, টাকা ছিল, গুÐা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা জনতার হাতে নিগৃহীত হয়ে পালিয়েছে। আজকে অনেকে সংকিত তারা মনে করেন এই আন্দোলন সফল হবে কি না। তাদের তো জেল খানা আছে। তাদের অস্ত্র, গুÐা বাহিনী আছে, অর্থ আছে। কিন্তু এই অস্ত্র-অর্থ-গুÐা কোনোটা কাজে আসে না, যখন জনতার রুদ্ররোশে প্রাসাদ আক্রমণ হয়। যখন জনতার রুদ্ররোশ শাসকগোষ্ঠীকে আক্রমণ করে তখন আর তাদের যাওয়ার জায়গা থাকে না। কাজেই এখন আওয়ামী লীগ যত অস্ত্র ব্যবহার করুক, যতই মাদকের নামে নিরীহ মানুষকে হত্যা করুক, আমাদের কারাগারে নিয়ে যাক, তাতে আওয়ামী লীগ রক্ষা পাবে না। কারণ নিজেদের কর্মকাÐ তাদের যে পথে নিয়ে যাচ্ছে এই পথ থেকে তারা ফিরতে পারবে না।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খালেদা ইয়াসমীন ও মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বক্তব্য দেন।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্দুকযুদ্ধে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ