২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
রমযানে মৃগী রোগীদের রোযা রাখা, অনেকটা কষ্টকর ও সাধনার ব্যাপার । এসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ ও রোগীর অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে নিজেকে যথেষ্ট সামলে চলতে না পারলে তার বিভিন্ন রকম বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে । মৃগী রোগীদের রোযা থাকার জন্য সৎসাহস, অপরের সহযোগিতা গ্রহণের সদিচ্ছা, আধ্যাত্বিক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে কিছু নিয়ম মেনেচলা অবশ্যই দরকার ।
নিয়মিত ঔষধ গ্রহণঃ মৃগী রোগীদের সুস্থভাবে রোযা রাখার জন্য প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এপিলেপ্সির নির্দিষ্ট ঔষধ নিয়মিত ভাবে খেয়ে যাওয়া । রোযা রাখতে গিয়ে একটা ডোজও যেন মিস না হয় সে ব্যাপারে দ্বিগুণ সচেতন (নিজের খেয়াল রাখা, অপরের মনে করিয়ে দেওয়া, অ্যালার্মের সাহায্য নেওয়া ইত্যাদি) থাকা দরকার । নিয়মিত ঔষধ সেবন নিশ্চিত করার জন্য বাসায় কিছু অতিরিক্ত ঔষধ জমা রাখা প্রয়োজন । মৃগী নিয়ন্ত্রণে সকালে ও বিকালে ঔষধ খেয়ে আসলে ইফতার ও সেহেরির পর ঔষধ খেয়ে সুস্থভাবে রোযা রাখা সম্ভব । দিনে দুবারের বেশি ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হলে, তার জন্য রোযা রাখা কঠিন ও বিপদজনক হতে পারে ।
পর্যাপ্ত ঘুমঃ মৃগী রোগীদের ভাল থাকার জন্য পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন ঘুম একান্ত দরকার । রোযায় সেহেরি করতে গিয়ে দৈনন্দিন ঘুমের পরিমাণ কমে যায় এবং বছরের বাকি সময়টায় যে ধাঁচে ঘুমিয়ে সে অভ্যস্ত, এসময়ে তার ব্যাঘাত ঘটে । তাই রোযার দিনে, বিশেষ করে ভোররাতে যখন সে সেহেরির জন্য ঘুম থেকে উঠে হাত থেকে কিছু পড়ে যাওয়া, কথা আটকে যাওয়া, মাটিতে বা সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাওয়া ও অজ্ঞান হওয়াসহ বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে । এসকল বিপদ মোকাবেলায় যা করা উচিত,
সন্ধ্যারাতে ইবাদাতসহ অন্যান্য কাজ সংক্ষিপ্ত করে একটু আগেভাগে ঘুমিয়ে পড়া, যেন ঘুমের ঘাটতি যথাসম্ভব পুষিয়ে নেওয়া যায় ।
ভোররাতে ‘সময়’ ও শরীরের সুবিধা অনুযায়ী বিছানা ত্যাগ করা ।
টয়লেটের কাজ সারা, টুথব্রাশ করা, সেহেরি খাওয়া, ওযু করা ও নামায পড়া ছাড়া অন্যান্য কাজ অবস্থা বুঝে যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়া উচিত । খারাপ লাগলে বা মৃগীতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে প্লেট ধোওয়া, ভাত-তরকারি বাড়া, গ্লাসে পানি নেওয়া ও পানি পান করাসহ অন্যান্য ব্যাপারে নিঃসংকোচে অপরের সহযোগিতা চাওয়া যেতে পারে । তাতে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়িয়ে তার পক্ষে মহামূল্যবান রোযা আদায় করা অনেকটা সহজ হয়ে যায় ।
পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানি গ্রহণঃ মৃগী রোগীদের খাদ্য চাহিদা সাধারণের চেয়ে বেশী । অল্প খেয়ে বা সেহেরি না করে রোযা রাখলে, রোজাদার এপিলেপটিকসদের বিভিন্ন অসুবিধা হতে পারে । তাই রোযায় ইফতার থেকে শুরু করে সেহেরি পর্যন্ত টাটকা, পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাদ্য খেতে হবে অল্প অল্প করে বারবার । যেন এপিলেপ্সির কোন অসুবিধা না করে, শরীর সুস্থভাবে টিকে থাকতে পারে উপবাসের একটা বড় সময় । পানিশূন্যতায়ও মৃগীর প্রকোপ হতে পারে । তাই রোযা ভাঙ্গা থেকে শুরু করে প্রচুর পানি খেতে হবে রয়ে সয়ে । চা, কফি, চকলেট ও অ্যালকোহল প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেহে পানির ঘাটতি ঘটাতে পারে । তাই এসময়ে এগুলো না খাওয়াই ভালো ।
শারীরিক ও মানসিক চাপঃ মৃগী রোগীদের শারীরিক ও মানসিক চাপ সহ্য করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম । তাই রোযা থাকা অবস্থায় তাদের দাঙ্গা হাঙ্গামা, ঝগড়াঝাটি, মানসিক অশান্তি ও অধিক কাজকর্ম এড়িয়ে চলা উচিত । রোযায়, মৃগী রোগীদের দীর্ঘক্ষণ নামায ও কুরআন তেলাওয়াত করতে গিয়েও, খুব একটা জানান না দিয়ে সে পড়ে যেতে বা অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে । তাই ফরয ইবাদতের পাশাপাশি শরীরের অবস্থা বুঝে অন্যান্য ইবাদতে শামিল হওয়া উচিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা অসীম দয়ালু, অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময় । তিনি রোজাদার মৃগীরোগী ও অন্যান্য অসুস্থ ব্যক্তিদের ইবাদত পালনে যাবতীয় দোষ-ত্রুটি ও অনিচ্ছাকৃত অপারগতা তাঁর নিজ গুণে সহজেই ক্ষমা করে দিতে পারেন ।
-ডাঃ এন ইউ মাহমুদ
বাংলাদেশ এপিলেপ্টিক সোসাইটি
মোবাইল: ০১৮২৮৬০৪৯৬৩
ইমেইল: [email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।