Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সংগ্রাম জোরদারের শপথে দৃপ্ত কুদস দিবস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইসরাইল-বিরোধী সংগ্রাম জোরদারের শপথে পালিত হলো বিশ্ব কুদস দিবস। মুসলমানদের প্রথম কিবলার শহর বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করতে বিশ্বব্যাপী ইসরাইল-বিরোধী সভা-সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসরাইল ও মার্কিন-বিরোধী নানা শ্লোগানে মুখরিত ছিল এসব মিছিল। কুদস-দিবসের প্রাক্কালে ইহুদিবাদী দখলদার সেনারা পবিত্র আল-আকসা মসজিদের চারদিক ঘিরে রাখে এবং এ অঞ্চলকে সেনা-নিবাসে পরিণত করে। বৃহস্পতিবার ইসরাইলি হানাদাররা হামলা চালিয়ে বহু ফিলিস্তিনি মুসল্লিকে আহত করেছে। আর নির্বিচার গ্রেফতার তো আছেই। কিন্তু দেখা গেছে ইসরাইল যতই দমন অভিযান জোরদার করছে ফিলিস্তিনি জাতির সংগ্রাম ও মনোবল ততই ইস্পাত-কঠিন হয়ে উঠছে। নিরস্ত্র ও মজলুম ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রায়-নিয়মিত হয়ে পড়া ইসরাইলি গণহত্যা অভিযান বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবিও জানানো হয়েছে নানা সমাবেশ ও মিছিলে। ফিলিস্তিন মুক্তির প্রসঙ্গটি যে এখনও জীবন্ত বরং আগের চেয়েও জোরালো রয়েছে তা আবারও প্রমাণ হল। এবার এমন সময় বিশ্ব-কুদস দিবস পালন করা হচ্ছে যখন মার্কিন সরকার পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস তথা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সমপ্রতি মার্কিন দূতাবাসকে তেলআবিব থেকে এই ঐতিহাসিক শহরে সরিয়ে এনেছে। সব আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন সরকার তার ইহুদিবাদি চেহারাকে আরও স্পষ্ট করে। আর এই লজ্জাজনক ধৃষ্টতার প্রতিবাদে বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হানাদার সেনাদের হামলায় কেবল এক দিনেই শহীদ হয়েছে ৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেম তথা পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাসকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ ও রাজধানী বলে প্রচার করে আসছে। বিশ্ব-কুদস দিবসের শোভাযাত্রায় কেবল মুসলমানরাই নয়, অনেক অমুসলিম দেশের বিবেকবান অমুসলমানরাও অংশ নিচ্ছেন। কুদস-দিবস এ বাস্তবতা তুলে ধরছে যে, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব ও অপরাধযজ্ঞের অবসান ঘটানো মুসলিম উম্মাহসহ বিশ্ব-জনমতের কাছে এখনও শীর্ষস্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে যদিও অনেক মুসলিম ও আরব সরকার এ সঙ্কটকে ছোট ও প্রান্তিক বিষয় হিসেবে তুলে ধরছে। কুদস দিবসে বিশ্বের নানা অঞ্চলে ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি জনগণের সমর্থন তাদের প্রতি খুব বড় ধরনের নৈতিক সহায়তার উৎস। বিশ্বের মুক্তিকামী জনগণ এ দিনে এটাই বলছেন যে বর্ণবাদী ইসরাইল ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনকে জবর-দখলের নাগপাশ বন্দি করে রাখলেও আমরা মজলুম এই জাতির মুক্তি সংগ্রামের সমর্থক। ফিলিস্তিনকে দখলমুক্ত করা ও মুসলমানদের প্রথম কিবলা উদ্ধারে ব্যর্থতা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর এবং বিশেষভাবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসি আর আরব লিগের মত বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অকার্যকারিতা তুলে ধরছে। সংগ্রামী ফিলিস্তিনি নেতা ইসমাইল হানিয়া সমপ্রতি বলেছেন, মার্কিন সরকারের নেতৃত্বাধীন কিছু বিজাতীয় শক্তি ন্যায়বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইসরাইলি জল্লাদগুলোকে সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা বস্তুগত ও আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হলেও তারা বিশ্ব-কুদস দিবস ও বিপর্যয় দিবসের মত দিনগুলোতে ব্যাপক নৈতিক সমর্থন পাচ্ছে বলে আতঙ্কিত ইসরাইলি দখলদার গোষ্ঠী। পার্সটুডে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ