Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কলম্বিয়ার নির্বাচনে আজ দ্বিতীয় দফার ভোট

ইনকিলাব অনলাইন | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৮, ২:৩৮ পিএম | আপডেট : ৩:২৮ পিএম, ১৭ জুন, ২০১৮

কলম্বিয়ায় আজ রোববার দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এত দু’জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন ইভান ডিউক ও গুস্তাভো পেট্রো। যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হোন না কেন, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোষের স্থলাভিষিক্ত হবেন। খবর আল জাজিরা ও এএফপি।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট সান্তোষ গত আগস্টে পদত্যাগ করার পর নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ প্রক্রিয়ায় দু’দফা নির্বাচনের প্রথম দফা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৭ মে। সে সময় প্রেসিডেন্ট পদে দক্ষিণপন্থী প্রার্থী ইভান ডিউক ৩৯.১ ও বামপন্থী প্রার্থী গুস্তাভো পেট্রো ২৫.১ শতাংশ ভোট পান।
প্রথম দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এ ফলাফল বিস্ময়কর কিছু ছিল না। গোটা ল্যাটিন আমেরিকায় রাজনীতির ক্রমবর্ধমান মেরুকরণের প্রভাবই কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিফলিত হয়েছে।
ডিউক ও পেট্রো দু’জনেই ভিন্ন রাজনৈতিক ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যারা ব্যক্তিগত সম্পদের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পক্ষপাতী তারা কঠোর পুলিশি ব্যবন্থার মাধ্যমে দেশে আইন-শৃঙ্খলার পুনঃ প্রতিষ্ঠা চান, তারাই হচ্ছেন ডিউকের ভোট দাতা। অন্যদিকে বহু কলম্বিয়ান দেশে ক্রমবর্ধমান সামাজিক, অর্থেনৈতিক ও পরিবেশগত অসমতার অবসান চান ও সে সাথে কঠোর ও দমনমূলক সরকারের পুনরাবির্ভাবকে ভয় পান তারা হচ্ছেন পেট্রোর ভোটদাতা।
এদিকে নির্বাচনের আগে দেখা গেছে, ৪১ শতাংশ ভোটারের পছন্দের প্রার্থী ডিউক তার প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী গুস্তাভো পেট্রো থেকে ১২ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।
মধ্যপন্থী প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান এবং ব্যালট পেপার ফাঁকা রাখার আহবান জানিয়েছেন। তাদের এ সিদ্ধান্ত ডিউকের চেয়ে পেট্রোর জন্য বেশি ক্ষতিকর হবে বলে ধারণা। অন্যদিকে তা ডানপন্থী প্রার্থীকে বিজয়ী করবে যা কলম্বিয়ার দুর্বল শান্তিচুক্তিকে বিপন্ন করতে পারে। তবে পেট্রো সম্প্রতি কয়েকজন মধ্যপন্থী রাজনীতিকের অনুমোদন লাভ এবং মধ্যপন্থী কিছু ভোট দাতার সমর্থন পেয়েছেন। এর ফলে রোববারের নির্বাচনে তিনি বিস্ময়কর সাফল্য পেলেও পেতে পারেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রবিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিদ্রোহীদের সঙ্গে করা সরকারের ফার্ক শান্তি চুক্তির ওপর প্রভাব ফেলবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট সন্তোষ ২০১৬ সালে এ চুক্তি সম্পন্ন করেন। দেশটির রক্ষণশীল প্রার্থী ইভান ডিউক এই শান্তি চুক্তি নতুন করে লেখার অঙ্গীকার করেছেন। উল্লেখ্য, ফার্ক বিদ্রোহীরা দীর্ঘদিন লড়াই চালিয়ে আসার পর শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করেছে।
বাম রাজনৈতিক দলের নেতা ও বোগোটার সাবেক মেয়র গুস্তাভো পেট্রো শান্তি আলোচনার সমর্থক। তিনি দুর্নীতি ও বৈষম্য বিরোধী নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে দেশটির প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে তিনি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তিনি রাজধানী বোগোটার মেয়র থাকাকালে তার প্রশাসন সমস্যা সৃষ্টিকারী ও অসংগঠিত বলে সমালোচনা আছে। তিনি জনগণের কাছে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে প্রচলিত শাসন পন্থার পরিবর্তে তিনি সুশাসনের মডেল প্রতিষ্ঠা করতে চান।
কলম্বিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে শান্তি চুক্তির বর্তমান অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে নিশ্চিত করার পাশাপাশি টেকসই ও পুনঃবিনিময়যোগ্য প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
এতদিন কলম্বিয়ার রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে ছিল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। কিন্তু এখন শান্তি চুক্তি-উত্তর সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লাগামহীন দুর্নীতি, সংগঠিত অপরাধ ও চরম বৈষম্য। কে নির্বাচিত হবেন ও এ সব বিষয় মোকাবেলায় কতটা গুরুত্ব দেবেন তা বোঝা যাবে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কলম্বিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ