Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কেন্দ্রীয় শাসন জম্মু ও কাশ্মীরে

জোরালো হচ্ছে জঙ্গিবিরোধী অভিযান : শিগগিরই ভোট দাবি ওমরের

| প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব ডেস্ক : মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির পদত্যাগের পর গতকাল বুধবার জম্মু-কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় শাসন জারি হয়েছে। সে দেশের স¤প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ গভর্নরের পাঠানো সুপারিশ অনুযায়ী অশান্ত ওই উপত্যকায় কেন্দ্রীয় শাসন জারির নির্দেশ দেন। এ নিয়ে ১৯৭৭ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে অষ্টমবারের মতো কেন্দ্রীয় শাসন জারি হল। কেন্দ্রীয় শাসন জারির প্রথম দিনেই নিরাপত্তা ইস্যুকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা জানিয়ে দুপুরে এক বৈঠক ডাকেন গভর্নর এনএন ভোহরা। নিরাপত্তা বৈঠকের পর জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরালো হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে এনডিটিভি।
জম্মু-কাশ্মীরে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-পিডিপি ও ভারতীয় জনতা পার্টির মধ্যকার জোট ভেঙে যাওয়ার পর রাজ্যতে পরবর্তীতে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। বিজেপি জোট সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার ধারাবাহিকতায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়েন পিডিপি নেতা মেহবুবা মুফতি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আসন পাওয়ার দিক থেকে যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেস মেহবুবার দলের সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়। নতুন জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনার অনুপস্থিতিতে সেখানে গভর্নরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শাসন জারি হলো। এনডিটিভি জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল এনএন ভোরা রাজ্যটিতে কেন্দ্রীয় শাসন জারির জন্য প্রেসিডেন্ট কোবিন্দের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন, যার একটি কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠিয়েছিলেন। ২০০৮ সাল থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নরের দায়িত্বপালন করছেন ভোহরা। তাকেই এই সংকট উত্তরণে সবচেয়ে অভিজ্ঞ বলে মনে করা হচ্ছে। তার ১০ বছর সময়কালে তিনবার গভর্নরের শাসন ব্যবস্থা আরোপ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন গভর্নর। এই মুহূর্তে নিরাপত্তাই তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারও প্রদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে। আগামী কয়েকদিনে কাশ্মীরে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান আরও জোরালো হতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও স¤প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন যে, রমজান উপলক্ষে চলা অস্ত্রবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে না। রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা এসপি ভায়েদ বলেন, ‘অভিযান চলবে। শুধুমাত্র অস্ত্রবিরতির সময় আমরা অভিযান চালাইনি। সন্ত্রাসীরা ঠিকই হামলা চালিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে অভিযান জোরালো হবে আরও। আর এবার কাজ করা আরও সহজ হবে।’ রমজানে মেহবুবা মুফতির দেওয়া অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবকে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তবে রাজনাথ সিংয়ের দাবি, এতে করে পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী হামলা চালানোর সুযোগ পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তাই অস্ত্রবিরতি বাড়াতে চায়নি। অস্ত্রবিরতি চলাকালীন অবস্থাতেই সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দ্য রাইজিং কাশ্মীর পত্রিকার সম্পাদক সুজাত বুখারি। সেই হামলার কারণেই অস্ত্রবিরতি ভঙ্গ করা হয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের। গত তিন বছর ধরে কাশ্মীরে বিজেপি-পিডিপি জোট সরকারের শাসন চলছে। তবে বুরহান ওয়ানির হত্যা, কাঠুয়ায় আট বছরের শিশুর ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অনেক বিষয় নিয়েই জোটের দুই দলের মতবিভেদ চলছিল।
‘ঘোড়া কেনাবেচা’ করতে পারে বিজেপি, বিধানসভা ভেঙে শিগগিরই ভোটের দাবি ওমরের
জম্মু ও কাশ্মীরে সরকার গড়তে ঘোড়া কেনাবেচা করতে পারে বিজেপি। এই আশঙ্কা ব্যক্ত করে রাজ্য বিধানসভা ভেঙে দিয়ে যত শিগগির সম্ভব ভোটের দাবি জানালেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বিজেপিকেও একহাত নিয়েছেন। ওমর বলেছেন, সদ্যপ্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা কবিন্দর গুপ্তা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, রাজ্যে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ঘোড়া কেনাবেচা নিয়ে বিজেপিকে ভরসা করা যায় না।
উল্লেখ্য, গতকাল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যে শিগগিরই নতুন সরকার গঠিত হবে বলে মনে করি না। অনিশ্চয়তা রয়েছে, কিন্তু আমরা কিছু করছি। পরে সবাই জানতে পারবে’।
গুপ্তার এই মন্তব্যের পরই ওমর বলেন, ‘আমরা কিছু একটা করছি মানে কী? ওই কিছুটা হতে পারে অন্য দলকে ভাঙানো এবং বিজেপি সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা যোগাড় করা। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কি অসাবধানতাবশত হাটে হাঁড়ি ভেঙেছেন?’ সূত্র : এনডিটিভি ও এবিপি আনন্দ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীরে

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ