Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইলিশের জোড়া ৯ হাজার টাকা!

| প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৮, ২:১৫ এএম


মো: শামসুল আলম খান : এক জোড়া ইলিশের দাম ৯ হাজার টাকা! দাম শুনেই যেন চোখ কপালে ওঠলো রাইসুল আহমেদ নামে এক ক্রেতার। বিক্রেতার আকাশছোঁয়া দামে মেজাজটা খিটমিট হয়ে ওঠলো। খেই হারিয়ে বললেন, ‘এখনো কী আর ইলিশের দাম এতো আছে। আপনার দোকানে মোবাইল কোর্ট হওয়া দরকার।’ বসে থাকলেন না বিক্রেতাও। ‘আপনি কি আর মাছের ব্যবসা করেন? কোন মাছের দাম কত, এটা বোঝার বয়স আপনার হয় নাই।’ ক্রেতা এবং বিক্রেতার মাঝে ইলিশের দরদাম নিয়ে এমন বচসা হচ্ছিল গত বুধবার রাতে নগরীর নতুন বাজারে। এই প্রতিবেদক এগিয়ে যেতেই আব্দুল্লাহ (৪০) নামে ওই মাছ বিক্রেতা বললেন, ‘দেখেন তো স্যার। দামে বনতাছে না, না কিনলেই তো হয়। অহেতুক গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধাচ্ছে।’ মাছের রাজা ইলিশের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে বাক-বিতÐার এ ঘটনাটি কেবল একদিনের নয়। হরহামেশাই ঘটছে এমনটি। রীতিমতো ক্রেতাদের পকেট কাটছে এই ইলিশ। ফলে ইলিশের দামে অস্বস্তি নিয়েই বাজার ছাড়তে দেখা গেছে ক্রেতাদের।
জানা যায়, ঈদে পোলাও-মাংসের স্বাদ নেয়া হয়েছে অনেকবার। এখন স্বাদে একটু পরিবর্তন আনতে মাছের বাজারে ছুটছেন সবাই। কিন্তু বাজারগুলোতে রীতিমতো মাছের আকাল। প্রাকৃতিক ও দেশি জাতের কং, শিং, মাগুর, শোল, পুঁটি, টেংরা মাছ তো জুটছেই না। উল্টো দুই একজাতের মাছ থাকলেও দাম বেশ চড়া। গত বুধবার রাতে ও গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কয়েক দফা ময়মনসিংহের নতুন বাজার, মেছুয়া বাজার ও মিন্টু কলেজ রেলক্রসিং বাজার ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্রের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের পর এখনো জমে উঠেনি ময়মনসিংহের মাছের বাজার। সামান্য পরিমাণে যে কয়েক জাতের মাছ মিলছে তাও দাম নাগালের বাইরে। নগরীর ধনাঢ্যদের বাজার হিসেবে পরিচিত নতুন বাজারে অন্যান্য সময় কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ জন ব্যবসায়ী মাছ বিক্রি করেন। কিন্তু গত দু’দিন যাবত মাছ নিয়ে বসেছেন জনা তিনেক ব্যবসায়ী। তাদেরই একজন ইনসান (৩০)। এই ব্যবসায়ী’র আড়তে মিলছে কাজলি, বাগদা চিংড়ি ও ফিশারির রুই মাছ। এর মধ্যে ৬০০ টাকা কেজিতে কাজলা, ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বাগদা ও সাড়ে ৪’শ টাকা কেজিতে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে। খানিক দূরেই আব্দুল্লাহ নামের এক মাছ ব্যবসায়ী হাঁক দিচ্ছিলেন ‘এই নিয়ে যান রাজা ইলিশ’। এই মাছ ব্যবসায়ী জানান, তিনি পদ্মার ইলিশ বিক্রি করছেন। তাঁর এখানে ১ কেজি ৬’শ গ্রাম ৫ হাজার টাকা ও ১ কেজি ৪’শ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকায়। ইলিশ কিনতে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে রীতিমতো বচসায় জড়িয়ে পড়লেন এই বিক্রেতা। ‘আমি যাত্রাবাড়ি থেকে এই পদ্মার ইলিশ কিনেছি। আমাদের মাছের মান অন্যান্য বাজারের তুলনায় ভালা (ভালো)’ এমন গুণকীর্তন মন গলাতে পারেনি রাইসুল আহমেদ নামে ওই ক্রেতার।
নগরীর মেছুয়া বাজারের ব্যবসায়ী বারেক মুন্সী’র কাছে অল্প সংখ্যক পাবদা, গুলশা ও পোনা মাছ দেখা গেলো। তাঁর সঙ্গেই থাকা এক ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী জানান, ‘বাজারে সব মাছের আকাল থাকলেও ইলিশের অভাব নেই। বড় ইলিশের দাম বেশি, আবার ছোটা ইলিশের দামও ক্রেতার সাধ্যের মধ্যেই।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ