Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাহাড়ে যথেষ্ট নয় নারীর অংশগ্রহণ জাতীয় পরামর্শ সভায় অভিমত

| প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৮, ১০:১৭ পিএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন সরাকরী-বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে নারীর অংশগ্রহণ কিছুটা বাড়ালেও তা যথেষ্ট নয়। নারীর ক্ষমতায়ন ও সমাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ওই সকল প্রতিষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রথাগত আইন বিশ্লেষণের মাধ্যমে বৈষম্যমূলক উপাদান চিহ্নিত করে তা অপসারণে সার্কেল চিফ ও সিএইচটি মন্ত্রণালয়কে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে ২০১১ সালের জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও পার্বত্য শান্তি চুক্তির আলোকে সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী নারীর অংশগ্রহণ : বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যত করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় পরামর্শ সভায় তারা এই দাবি জানান। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস), কাপেং ফাউন্ডেশন, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, উইমেন হেডম্যান কারবারী নেটওয়ার্ক, সিএইচটি উইমেন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম, প্রগেসিভ, অনন্যা কল্যাণ সংগঠন ও খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির যৌথউদ্যোগে আয়োজিত সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা। বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল প্রধান ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন মং সার্কেল প্রধান রাজা সাচিং প্রæ চৌধুরী ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) রমা রাণী রায়। বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্ছিতা চাকমা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, বিএনপিএস’র উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি সোমা দত্ত, সিএইচটি নেটওর্য়াকের সদস্য থুয়াই ইয়ং মারমা, অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ড. নই প্রæ নেলী প্রমুখ। ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বলেন, কিছু নারী মূল দ্বায়িত্বে আসলেই নারীর ক্ষমতায়ন হয় না। ক্ষমতা কাঠামোতে আদিবাসীদের জন্য কোটা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে নারীদের উপস্থিতি ব্যাতীত বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারবে না, এমনি বিধান প্রণয়ন করা প্রয়োজন। আর ভূমি বন্টণ ও কেনাবেচার ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণের আহŸান জানান তিনি। সাচিং প্রæ চৌধুরী বলেন, মং সার্কেলে নারী হেডম্যান-কারবারী নিয়োগ হলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের সক্ষমতা বাড়ছে না। রমা রানী রায় বলেন, সব প্রথাগত আইনই যুগোপযোগী করতে হবে। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলেকেই প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতা দুর করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে নারীদের অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দুর করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহŸান জানান মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর। মূল প্রবন্ধে সুস্মিতা চাকমা বলেন, অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মতো আদিবাসী সমাজের নারীদের অধস্তন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ অধস্তনতার বেড়াজাল ছিন্ন করে এ সময়ে যেসব নারী হেডম্যান ও কারবারী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, পুরুষতান্ত্রিক বলয়ে তাদের প্রতিনিয়ত নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। অধ্যাপক আইনুন নাহার বলেন, প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে শুধুমাত্র নারীর অংশগ্রহণ নয়, গুণগতভাবে বাড়াতে হবে। নারীর যোগ্যতা নিরুপনে নারীদের দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখতে হবে। প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে। বাঞ্চিতা চাকমা বলেন, আদিবাসী ব্যবস্থায় পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরো কঠোর। এই ব্যবস্থার অবসান হওয়া দরকার। নিরুপা দেওয়ান বলেন, পার্বত্য এলাকায় প্রথাগত প্রতিষ্ঠান নারীদের অংশগ্রহণ সন্তোষজনক নয়। তবে গত পাঁচ বছরে নারী হেডম্যান কারবারী সংখ্যা বেড়েছে। ড. নাই প্রæ নেলী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের রাজপরিবারগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে। যোগ্য নারীদেরকে হেডম্যান-কারবারী নিয়োগ করতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ