Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লালপুরে আমের দরপতন

| প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৮, ১০:৩১ পিএম

লালপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা : নাটোরের লালপুরের বাজারগুলোতে বর্তমানে প্রতি কেজি পাঁকা আম ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে, আমের ভরা মৌসুমে হঠাৎ দরপতন হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে উপজেলার আম চাষী ও ব্যবসায়ীদের।
গত বছরের তুলনায় এই বছর আমের ফলন বেশি হলেও বাজারে আমের আশানুরূপ দাম না থাকায় উৎপাদিত আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। আমের এমন দরপতনের কারণে এ বছর আম চাষীদের লাভ তো দূরের কথা লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন এখানকার চাষী ও ব্যবসায়ীরা। আম চাষীরা বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে আমের দাম ও চাহিদা ভালো থাকলেও বর্তমানে হঠাৎ করেই দরপতন হওয়ায় চাষী ও ব্যবসায়ীরা হতাশায় দিনগুনছেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার লালপুর, গোপালপুর, ওয়ালিয়াসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, গত বছর বাজারে লক্ষনা আম বিক্রয় হয়েছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে এক মন ২ হাজার টাক, খেরসাপাতি বিক্রয় হয়েছে প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা দরে যার প্রতি মন ছিলো ২ হাজার ৮ শ থেকে ৩ হাজার টাকা, লেংড়া ৮০-৯০ টাকা দরে যার প্রতি মন ছিলো ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা মন। বর্তমানে লক্ষনা আম বিক্রয় হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে এক মন ৪শ’ টাকা, খেরসাপাতি বিক্রয় হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি প্রতি মন ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা, লেংড়া বিক্রয় হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি প্রতি মন ১ হাজার ২শ’ থেকে ১৪শ টাকা।
অনেক আম চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর আমের উৎপাদন কম থাকলেও বাজারে আমের দাম ও চাহিদা ছিলো ভালো কিন্তু এ বছর এই অঞ্চলের আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় আশানুরূপ ভালো হয়েছে তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে আমের দাম কমেছে অর্ধেক। তারা আরো বলেন, রপ্তানির সমস্যা, প্রশাসন কর্তৃক আম পাড়ার নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া এবং বাজার দাম কম থাকায় এ বছর আমের এমন দরপতন হয়েছে।
উপজেলার আম চাষী সোহেল রানা, মোস্তাফিজুর রহমান ও মিল্টন বলেন, কিছু দিন আগেও আমের বাগানের যে দাম বলেছিলো দাম কম হওয়ায় সেই বাগান বর্তমানে অর্ধেক টাকাতেও কেউ কিনতে চাচ্ছে না।
আম ব্যবসায়ী আসলাম, মুনির, সাদেকুল বলেন, বর্তমানে আমের দাম কমে যাওয়া যে দামে বাগান কেনা আছে বাগানের সম্পূর্ন আম বাজারে বিক্রয় করলে লাভ তো দুরের কথা তার অর্ধেক টাকাও উঠবে না। তারা আরো বলেন, এই কারনেই বাগানে আম পেঁকে মাটিতে পাড়ে যাচ্ছে তবুও আম পাড়ছি না কারন আম বিক্রয় করে পাড়ার দামও হচ্ছে না।
ওয়ালিয়া বাজারের আমের আড়তদার আব্দুস সামাদ বলেন, মৌসুমের শুরুতে আমের দাম ভালো থাকায় চাষীরা আড়তে প্রতিনিয়োতই আম বিক্রয় করতে এসেছে। হঠাৎ আমের দাম ও চাহিদা কম হওয়ায় এখন চাষীরা আড়তে আগের মত আম তারা আনছে না। তবে কিছু দিনের মধ্যেই আমের দাম বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুল ইসলাম খাঁন বলেন,‘রমজানের কারণে বাজারে আমের চাহিদা কম থাকায় আমের দাম কমে গেছে, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আবার আমের দাম বাড়বে বলে জানান তিনি।
এখন লালপুরে বাণিজ্যিক ভাবে আমের উৎপাদন হচ্ছে, তবে উৎপাদিত আম দেশ ও দেশের বাহিরে রপ্তানির জন্য এখন পর্যন্ত তৈরী হয়নি সুব্যবস্থা। সরকারের মাধ্যমে এখানকার উৎপাদিত আম যদি দেশ ও দেশের বাহিরে রপ্তানির সুব্যবস্থা করা যায় তবে চাষী ও ব্যবসায়ীরা যেমন উৎপাদিত আমের ভালো দাম পাবে সেই সাথে আম চাষের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করেন এলাকার স্থানীয়রা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দরপতন

১০ নভেম্বর, ২০১৬
২৮ জুলাই, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ