Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুুপ্রিম কোর্ট আজ খুলছে : সরগরম থাকবে আদালত

আপিলকারী আমরা, তাড়াহুড়ো দুদকের : ব্যারিস্টার কায়সার

মালেক মল্লিক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৮, ১১:৩৬ পিএম

0 আজ ও কাল খালেদা জিয়ার চার মামলার শুনানি  0 প্রস্তুতি নিচ্ছেন উভয় পক্ষের আইনজীবীরা


অবকাশ, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের ছুটি শেষে সুপ্রিম কোর্ট খুলছে আজ রোববার। প্রথম দিনের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার ২টি মামলা। আগামীকাল মানহানির অভিযোগ অপর ২টি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও চলতি সপ্তাহেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিলের আইনি লড়াই শুরু হতে যাচ্ছে।
এদিকে আপিলের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আবেদন করবেন রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানির জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন উভয়পক্ষের আইনজীবীরা। পর্যালোচনা করছেন মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। এসব নিয়ে আবার সরগরম হয়ে উঠতে পারে উচ্চ আদালত। এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ইনকিলাবকে বলেন, আজ কুমিল্লার দুটি মামলা ও কাল মানহানির দুটি মামলা শুনানির জন্য রয়েছে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির আদেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা আইনে প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেই অনুযারী আমরা যথা সময়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি। একটি বিষয় আমাদের অবাক করেছে। সেটি হলো আপিলকারী হলাম আমরা। অথচ তাড়াহুড়ো শুরু করেছে দুদক। আর এটাই ইঙ্গিত করে দুদক রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে আপিল শুনানির চেষ্টা চালাচ্ছে।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদÐ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। মামলায় তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদÐ দিলেও বয়স ও সামাজিক মর্যাদার কথা বিবেচনা করে আদালত খালেদা জিয়াকে এ দÐাদেশ দেন। রায় ঘোষণার পর থেকেই তিনি পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা গত ২০ ফেব্রæয়ারি ওই সাজা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। তাছাড়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া। তিনি আপিলে নি¤œ আদালতের দেয়া সাজা বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেয়ার আবেদন জানান। একইসঙ্গে জামিনও চান তিনি। গত ২২ ফেব্রæয়ারি আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে নথি তলব করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। গত ১২ মার্চ এ মামলায় হাইকোর্টের একই বেঞ্চ খালেদা জিয়ার চার মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক ওই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানালে ১৪ মার্চ তার জামিন স্থগিত করা হয়। গত ১৬ মে ওই আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখেন। একইসঙ্গে সাজার বিরুদ্ধে তার করা আপিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশনা দেন। এখন হাইকোর্টে সাজার বিরুদ্ধে করা মূল আপিল শুনানি নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হতে যাচ্ছে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির আদেশ অংশটুকু আমরা পুনর্বিবেচনা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করব। কারণ এ সময়ের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে আপিল নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। তবে দুদকের আইনজীবী বলেছেন, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ থাকায় তারা আপিল শুনানির উদ্যোগ নিতে পারেননি।
চার আপিলের শুনানি : বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও হাইকোর্টে শুনানি হবে দÐপ্রাপ্ত কারাবন্দি আরো দুই আসামির আপিলের। এরা হলেন সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমদ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুইজনই ১০ বছরের সশ্রম কারাদÐপ্রাপ্ত। ওই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন তারা। এদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছে দুদক। ওই তিন আপিলের সঙ্গে এই রুলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই চারটি আপিলের ওপর শুনানির দিন ধার্যের জন্য আবেদন করা হবে।
কুমিল্লার ২টি মামলা কার্যতালিকায় : কুমিল্লার দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষের লিভ টু আপিল সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আজকের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় মামলা দু’টি ৯ ও ১০ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। গত ২৮ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কুমিল্লার নাশকতার দুই মামলায় খালেদাকে জামিন দেন। জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আবেদনের পর ২৯ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত রেখে ৩১ মে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির আদেশ দেন। সে অনুসারে ৩১ মে শুনানির পর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত রেখে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে আদেশ দেন।
এছাড়া ২৪ জুন এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিনও ধার্য করেন আদালত। পরে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল দায়ের করেন। গত ২০ মে হাইকোর্টে ওই দুই মামলায় জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ২৭ মে কুমিল্লায় নাশকতার দুই মামলার ওপর শুনানি শেষে ২৮ মে খালেদাকে জামিন দেন হাইকোর্ট।



 

Show all comments
  • কামরুল ২৪ জুন, ২০১৮, ৩:৩৪ এএম says : 0
    আশা করি মামলাগুলোর সমাধান খুব দ্রুত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তপন ২৪ জুন, ২০১৮, ৩:৩৫ এএম says : 0
    কোর্টের কাছে আমরা সব সময়ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি।
    Total Reply(0) Reply
  • বাতেন ২৪ জুন, ২০১৮, ৩:৩৬ এএম says : 0
    দেখা যাক কি রায় আসে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুুপ্রিম কোর্ট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ