Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আজও থাকবে খরার দহন

অসহনীয় তাপদাহে জীবনযাত্রা স্থবির

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শফিউল আলম : তাপদাহ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। অসহনীয় ভ্যাপসা গরমে রাজধানী ঢাকাসহ সর্বত্র জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রত্যাশিত শীতল বাতাস কোথাও বইছে না। যখন বাতাস থাকে তখনও যেন লু-হাওয়া বয়ে চলে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরম অনুভূত হচ্ছে বেশিহারে। ঘরে-বাইরে মানুষ মাত্রাতিরিক্ত ঘামাচ্ছে। ঘামে-গরমে দ্রুত কাহিল হয়ে যাচ্ছে। কোথাও স্বস্তি মিলছে না।
গতকাল (বুধবার) ১৪২২ বাংলা সনের চৈত্রের শেষ দিনটিতেও সারাদেশ পুড়েছে প্রচ- খরতাপে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সাথে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও অতিবেশি হওয়ায় (অধিকাংশ জায়গায় ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সে.) গরমের দাপট বেড়ে গেছে। আর আজ (বৃহস্পতিবার) ১৪২৩ সনের পহেলা বৈশাখের দিনেও দেশের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, কোথাও কোথাও তাপদাহ তীব্র আকারে হতে পারে বলে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গেছে। তবে শুধু সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া, কিংবা কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে বৃষ্টি কিংবা বজ্রবৃষ্টি হলে সাময়িক খরার দহন কমে আসতে পারে। বৈশাখের দ্বিতীয়-তৃতীয় দিন থেকে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টির মধ্যদিয়ে বর্তমান গনগনে গরম পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতির সম্ভাবনার পূর্বাভাসে জানা গেছে।    
আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পূবালী বায়ু প্রবাহের সাথে পশ্চিমা বায়ুর সংমিশ্রণ না হওয়ার কারণেই আকাশে বৃষ্টিবাহী মেঘ জমছে না, বৃষ্টিপাতও হচ্ছে না। পশ্চিমা উষ্ণম-লীয় আবহ থাকার কারণে বৃষ্টিপাতের আবহ সৃষ্টি হচ্ছে না। অথচ খরতাপের মাস চৈত্রের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আকাশে ছিল মেঘ-বাদলের ঘনঘটা, ছিল বৃষ্টি। গত মার্চ মাসে বর্ষণও হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি। তবে চলতি এপ্রিল মাসেও সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে ছিটেফোঁটাও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অবিরাম খরার দহনে বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষজন আয়-রোজগারের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়েছেন। দিনমজুরদের আয় কমে গেছে। তাপপ্রবাহের কারণে দেশের অনেক জায়গায় ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন পেটের পীড়া, চর্মরোগ, ভাইরাস জ্বরের মতো মৌসুমি রোগ-ব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের কষ্ট-দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। গরমের যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণ পেতে শহর-নগরে-বাজার-গঞ্জে রাস্তাঘাটে শরবৎ, আইসক্রিম বেচাকেনা বেড়ে গেছে। এগুলো খেয়েও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।   
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সাতক্ষীরায় ৩৯ ডিগ্রি সে.। এ সময় ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৩৬.৮ ও ২৭.৫ ডিগ্রি সে., চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ৩২.৪, সৈকত শহর কক্সবাজারে ৩২.৭, সিলেটে ৩৫.৫, রাজশাহীতে ৩৮.১, রংপুরে ৩৫, খুলনায় ৩৮.৮, বরিশালে ৩৬.৫ ডিগ্রি সে.।   
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্ধিত ৫ দিনে দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আজও থাকবে খরার দহন

১৪ এপ্রিল, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ