Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৩৫০০ কোটি রুপির দুর্নীতি, জড়িত জারদারি!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

 সন্দেহজনকভাবে ৩৫০০ কোটি রুপি লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পাকিস্তানের তিনটি ব্যাংকের প্রধানকে দেশ ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রোববার দেয়া ওই নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে সংশয় আছে। এ জন্য ওই তিনটি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের নাম ‘বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ তালিকা’য় (ইসিএল) রাখারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা দেশ ছাড়তে পারবেন না। আর এই আইনী লড়াইয়ের ফাঁদে আটকে যেতে পারেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। কারণ, তিনি এই সন্দেহজনক লেনদেন থেকে সুবিধা পেয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।
খবরে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসারের নেতৃত্বে তিন বিচারকের বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছেন। রায়ে সামিট ব্যায়ক, সিন্ধু ব্যাংক ও ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্টদেরকে তলব করা হয়েছে। ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) তাদের এফআইআরে এসব ব্যক্তি ও অন্যদের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দিয়েছে। যদিও তারা এফআইএ’র হেফাজতে রয়েছেন তবু তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের এই অভিযোগ আনা হয়েছে। এখন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওইসব ব্যক্তির নাম এক্সিট কন্ট্রোল লিস্টে তুলবে। এফআইএ’র তদন্তে আরো কিছু নাম বেরিয়ে এসেছে। বলা হয়েছে, সন্দেহজনক ওই লেনদেনে তারা সুবিধা পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও তার বোন ফারিয়াল তালপুর। তারা জারদারি প্রাইভেট লিমিটেডের সদস্য হিসেবে এ লেনদেনে সুবিধা নিয়েছেন। শত শত কোটি রুপি ভুয়া একাউন্ট ব্যবহার করে লেনদেন এবং সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনা তদন্ত করতে ধীরগতির কারণে এফআইএ’কে সুয়োমোটা দিয়েছে। বলা হয়েছে, ওইসব একাউন্ট ব্যবহার করে মোটা অংকের ঘুষ ও দুর্নীতি করা হয়েছে। সেই অর্থ এসব একাউন্টের মাধ্যমে হাত বদল হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে সামিট ব্যাংকের করপোরেট ইউনিট প্রধান তাহা রাজাকে ও পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান হোসেন লাওয়াইকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে এফআইএ। এর মধ্যে হোসেন লাওয়াই হলেন আসিফ আলী জারদারির ঘনিষ্ঠ। এফআইএ’কে তদন্তে ও অন্যান্য কাজে সহায়তা করতে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্যদিকে যেসব ব্যাংকের প্রসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সমন পাঠানো হয়েছে তাদেরকে আদালতে উপস্থিত করতে সিন্ধু পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেলকে নির্দেশনা দিয়েছে আদালত। এফআইএ’র মহাপরিচালক বশির মেমনের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে তরল অর্থ হিসেবে সামিট ব্যাংক যে ৭০০ কোটি রুপি জমা রেখেছে তা জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এফআইএ’র প্রধান আদালতে বলেন, ২০১৫ সাল থেকে সন্দেহভাজন এসব লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে একটি সূত্রের রিপোর্টের ভিত্তিতে। এ তদন্তে ২৯টি বেনামি একাউন্টের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে ১৬টি সামিট ব্যাংকে। আটটি সিন্ধু ব্যাংকে। পাঁচটি ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেডে। ৩৫০০ কোটি রুপির সন্দেহজনক লেনদেনে জড়িত থাকায় সাতজনের নাম পাওয়া যায়। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, স¤প্রতি তিনি যখন করাচি গিয়েছিলেন সেখানে তিনি একটি ক্লু পেয়েছেন। তা হলো, সিন্ধু ব্যাংকের সঙ্গে মিলিত হয়েছে সামিট ব্যাংক। এ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে তিনি স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। শুনানির সময় এফআইএ’র মহাপরিচালক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এসব বিষয়ে তার এজেন্সির যেসব তথ্য বা রেকর্ড প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো তা সরবরাহ করছে না। এক্ষেত্রে তিনি একটি একাউন্টের কথা উল্লেখ করেন। এটি হলো এ-ওয়ান ইন্টারন্যাশনালের নামে। বশির মেমন বলে, এই একাউন্টে জমা পড়েছে ৪৪০ কোটি রুপি। ২০১৫ সালের ৬ই মার্চ থেকে ২০১৬ সালের ১২ই জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১০ মাসের মধ্যে এই পরিমাণ অর্থ জমা হয়েছে ওই একাউন্টে। এতে যারা অর্থ জমা দিয়েছেন তারা হলেন মেসার্স বাহরিয়া টাউন করাচি প্রজেক্ট ও কৈন মালিক, সুজাওয়াল এগ্রো ফার্মস প্রাইভেট লিমিটেড, তান্দো আল্লাইয়ার সুগার মিলস প্রাইভেট লিমিটেড, ওমনি প্রাইভেট লিমিটেড, এগ্রো ফার্মস থাট্টা প্রাইভেট লিমিটেড, আলফা জুলু কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, হাজি মুরিদ আকবর, শের মুহাম্মদ মুঘেরি অ্যান্ড কোং, সরদার মোহাম্মদ আশরাফ ডি বেলুচ প্রাইভেট লিমিটেড, এ-ওয়ান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড, লাকি ইন্টারন্যাশনাল, লজিস্টিক ট্রেডিং, ইকবাল মেটালস, রয়েল ইন্টারন্যাশনাল এবং উমাইর এসোসিয়েটস। সূত্র : ডন।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ১০ জুলাই, ২০১৮, ২:৫০ পিএম says : 0
    Eairokom jodi bangladesheo taka pacharkari banke looterder biroddhe action neoa hoy tahole hoyto vobishshte eai rokom karjo kolap bondo hobe
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতি

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ