Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্মকে আঘাত মুক্তচিন্তা নয়, নোংরামি : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৩ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তচিন্তা প্রকাশের নামে কোনো ধর্মের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মুক্তচিন্তার নামে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া বিকৃত ও নোংরা রুচির পরিচয়। একটা ফ্যাশন দাঁড়িয়ে গেছে, ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখলেই তারা হয়ে গেল মুক্তচিন্তার। আমি তো এখানে মুক্তচিন্তা দেখি না।
গত বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তাদের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার ধর্ম আমি পালন করি, কিন্তু আমার ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি নোংরা কথা লেখে, বাজে কথা লেখে সেটা আমরা কেন বরদাশত করবো। তিনি বলেন, এখন একটা ফ্যাশন দাঁড়িয়ে গেছে যে ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তা হয়ে গেলো মুক্তচিন্তা। আমি তো এখানে মুক্তচিন্তা দেখি না, আমি এখানে দেখি নোংরামি।
তিনি বলেন, যাকে আমি নবী মানি তার সম্পর্কে নোংরা কথা কেউ যদি লেখে সেটা কখনও আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য না। নোংরা কথা, পর্ণ কথা এগুলো কেন লিখবে? এটা তো সম্পূর্ণ নোংরা মনের পরিচয়। আবার একজন লিখলে আরেকজন খুন করে প্রতিশোধ নিবে এটা তো ইসলাম ধর্ম বলেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা বা মানুষের জীবনের ওপর হুমকি দেয়া, এটা ধর্মে কোথায় বলা আছে? যারা এ ধরনের হুমকি দেয় তারাই তো ধর্মকে অবমাননা করে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকাল থেকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশবাসীর আনন্দ উদযাপন দেখে ভাল লাগছে। বছরটা সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে, এটা যেন অব্যাহত থাকে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে তো বহু পার্বণ আছে। আমরা ঈদ করি, সাথে সাথে পহেলা বৈশাখও উদযাপন করি। এখানে ধর্মীয় কোনো বাধা দেয়ার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী পহেলা বৈশাখ উদযাপনের বিরোধিতাকারীদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, যারা বৈশাখ উদযাপন করতে নিষেধ করে, তারা কেন করে তা করে আমি জানি না। তারা কোন ধর্ম পালন করে সেটা নিয়েও সন্দেহ আছে। আদৌ তারা কোনো ধর্ম পালন করেন কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
তিনি বলেন, এটাকে অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করার চেষ্টা করে। কেউ বলে ফেলেন এটা হিন্দুয়ানি। আমরা মুসলমান হলেও আমরা তো বাঙালি। কারণ বাঙালি হিসেবে যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা বাঙালি হলে যে মুসলমান হতে পারবো না এ রকম তো কোনো কথা নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে জাতিগত সাংস্কৃতিক উৎসব পালনে বিরোধিতা করা দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের খুব দুর্ভাগ্য যে, একেক দল একেক রকম করে কথা বলতে শুরু করে।
তিনি বলেন, সহনশীলতা নিয়ে আমরা বসবাস করব, যেন আমাদের দেশে শান্তি বজায় থাকে। সবচেয়ে বড় কথা শান্তি। কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া কখনও উন্নতি হয় না। সবসময়ই দুঃশ্চিন্তায় থাকি, কখন কী ঘটে যায়। আশা করি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে শান্তি আছে বলেই প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে এবং এই পহেলা বৈশাখ একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বলেছি বিকেল পাঁচটার মধ্যে প্রকাশ্য-বহিরাঙ্গনের অনুষ্ঠানগুলো শেষ করতে হবে। এতেই কারও কারও আপত্তি। কিন্তু কেন? যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে, কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তা সম্ভব। আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটা কোন পথে কিভাবে দিতে পারবো, তার নির্দেশনা সরকারই দেবে। আর আশা করি সকলেই এই নির্দেশনা মেনে চলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মকে আঘাত মুক্তচিন্তা নয়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ