Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা গুম নির্যাতন চলছে, ব্রিটিশ মানবাধিকার প্রতিবেদন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৮, ১:৩১ পিএম

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা অব্যাহত রয়েছে। নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতন কমার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা দেয়ার অভিযোগ করে আসছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে বিশ্বের ৩১টি দেশের ২০১৭ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ গত সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, আলোচ্য বছরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি এজেন্সিগুলোর গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতন অব্যাহত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে। মৃত্যুদণ্ড বিলোপের উদ্যোগেও বাংলাদেশের অগ্রগতি নেই। গত বছর ২৫৩টি মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে; কার্যকর করা হয়েছে ছয়টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ব্রিটেনের অগ্রাধিকারে থাকবে রোহিঙ্গা ইস্যু, জেন্ডার সমতা, কন্যাশিশুর পড়ালেখা ও আধুনিক দাসত্ব মোকাবেলা। এ ছাড়া গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দেয়া হবে। মত প্রকাশসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে সমর্থন এবং দীর্ঘমেয়াদে এ দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ওপর যুক্তরাজ্য জোর দেবে।
এতে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক একটি মামলা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত নভেম্বরে চাপের মুখে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিচারব্যবস্থা থেকে দুর্নীতি দূর করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সরকার ৫৭ ধারা বিলোপ করে যে আইনের প্রস্তাব করেছে, তা নিয়েও মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ রয়েছে বলে এতে জানানো হয়।
তবে ২০১৭ সালে বড় ধরনের কোনো সন্ত্রাসী হামলা না হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্মীয় বৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বারোপের লক্ষ্যে পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর সফল হয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে ছয় লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও সহায়তা দেয়ায় ব্রিটেন বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর সহিংসতার উচ্চহার রয়েছে। ৮০ ভাগের বেশি বাংলাদেশী নারী ও কন্যাশিশু স্বামী বা সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক, মানসিক, যৌন বা আর্থিকভাবে নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে। রোহিঙ্গা শিবিরে নারীরা বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মিয়ানমারে বর্বর নিপীড়নের শিকার হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ব্রিটেন জাতিসঙ্ঘ ও অন্য সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করবে।
ব্রিটিশ সরকারের মানবাধিকার প্রতিবেদনটির প্রচ্ছদ তৈরি করা হয়েছে একজন রোহিঙ্গা মা ও শিশুকে নিয়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। সেখানে জাতিগত নিধনযজ্ঞ এবং ধর্মীয় ও অন্যান্য স্বাধীনতার বিধিনিষেধে ব্রিটেন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিচারবহির্ভূত হত্যা গুম নির্যাতন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ