Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তরুণদের জ্বলে উঠার অপেক্ষা

ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ তৃতীয় ওয়ানডে আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

 লাতিন অঞ্চল গায়ানার সঙ্গে বাংলাদেশের আবহাওয়ার নাকি বেশ মিল। যে কারণে সিরিজ জয়ের কাজটি গায়ানাতেই সারতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তা হয়নি। শেষ ওভারের সেই নিয়তি এখনো কুরে কুরে খাচ্ছে টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১-১ সমতায় থাকা সিরিজটা জিততে তাই আজ ‘কঠিন মাঠ’ সেন্ট কিটসেই নামতে হচ্ছে মুশফিকদের।
গায়ানা থেকে সেন্ট কিটসে যেতে বিমানেই লাগে প্রায় ছয় ঘণ্টা। ক্যারাবিয়ান সাগরের মাঝে ছবির মত ছোট্ট একটা দ্বীপ সেন্ট কিটস। আয়াতনে যা বাংলাদেশের একটি উপজেলার সমান, মাত্র ২৬১ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যাও সাকুল্যে হাজার ষাটের মত। সেখানেই আজ তিন ম্যাচের শেষ ওয়ানডেতে উইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
সিরিজ নিশ্চিত করতে যে জেসন হোল্ডারের দল মরণ কামড় দেবে তা না বললেও চলে। একই লক্ষ্য মাশরাফির দলেরও। এজন্য দলের সিনিয়র পঞ্চপান্ডবের সহায়তা নিয়মিতই পাচ্ছেন টাইগার দলপতি। কিন্তু মাঠে কথা বলছেন না তরুণরা। প্রথম ম্যাচে জয়ের অবদান রাখেন তামিম, সাকিব ও মাশরাফি নিজে। শেষ সময়ে মুশফিকের ক্যামিও ইনিংসও দারুণ অবদান রাখে। হতাশার দ্বিতীয় ম্যাচেও তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জয়ের পথ রচনা করেন। কিন্তু এদিনও কথা বলেনি সাব্বির-মোসাদ্দেকের ব্যাট। একটু তাল মেলাতে পারলেও সিরিজ জয়ের কাজটা গায়ানাতেই সারতে পারত বাংলাদেশ। আজ নামতে পারত হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু তা হয়নি। মাশরাফির চিন্তা তাই এই তরুণদের নিয়েই।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে নবীনদের অবস্থাটাই কেন জানি এমনÑ ক্যারিয়ারের শুরুই হয় উত্তেজনা সৃষ্টি করে, এরপর ধীরে ধীরে হয়ে পড়েন নিস্তেজ। সাব্বির-মোসাদ্দেকদের মত মুস্তাফিজুর রহমানও ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন উজ্জ্বলভাবে। আশা ছিল অন্তঃত মুস্তাফিজ বাকিদের পথে হাটবেন না। কিন্তু তার কাছ থেকেও যে প্রত্যাশিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে একথা বলা যাবে না।
বিশেষ করে ধারাবাহীকভাবে হতাশ করছেন সাব্বির রহমান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচও ছিল এর বড় প্রমাণ। যখন তিনি ক্রিজে নামেন তখন জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২৮ বলে ৩৯। যে পরিস্থিতির বিবেচনায় সাব্বিরকে দলে নেওয়া তার সঙ্গে যা পুরোপুরি মানানসই। প্রত্যাশা ছিল এদিন নিশ্চয় হতাশ করবেন না ডানবাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু ব্যর্থতার ধারাবাহীকতা বজায় রেখে এদিনও কিছুই করতে পারেননি সাব্বির। আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে পুলটস বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। ওয়ানডেতে টানা ১৩ ইনিংস কোন ফিফটি নেই তার ব্যাটে। সব সংস্করণ মিলে শেষ ৩০ ইনিংসে ফিফটি মাত্র দুটি!
মোসাদ্দেক অবশ্য বোলিংয়ে কিছুটা ব্যাকআপ দেন। তবে তার কাছে দলের আসল চাওয়া তো ব্যাটিং-ই। বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি যে কাজটি অবলীলায় করেন সেই ফিনিসিংটা। কিন্তু তিনিও কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছেন। শেষ ওয়ানডেতে যখন তিনি উইকেটে এলেন জয়ের জন্য তখন চায় ৫ বলে ৮ রান। এই অবস্থায় প্রথম দুই বলে কোন রানই নিতে পারেননি। বাংলাদেশও ম্যাচ হারে ৩ রানে। সব সংস্করণ মিলে তার ব্যাটেও ফিফটি নেই ১৫ ইনিংস।
নতুনভাবে দলে প্রবেশ করা এনামুলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সাব্বির-মোসাদ্দেকের অনেক আগেই (২০১২) রঙ্গিন জার্সি গায়ে চড়ানো এনামুল দলে ফিরে নিজেকে নতুনভাবে প্রমাণ করতে পারছেন না। যদিও অধিনায়ক মাশরাফির বেশ আস্থাভাজন এনামুল। কিন্তু তার প্রতিদান দিতে পারছেন কই এই ওপেনার। এ বছর যে ছয়বার ওপেন করেছেন তার মিলিত রান ৭৮। শূন্য রানে ফিরেছেন দুবার।
তামিমের সঙ্গী হিসেবে সৌম্য সরকার ভক্তদের চরমভাবে হতাশ করার পর সৌম্য থেকে মুক্তি মিলেছে বটে কিন্তু এবার এনামুল নিয়েছেন তার জায়গা। অথচ বার বার নিজেকে প্রমাণ করেও দলে স্থির হতে পারেননি ইমরুল কায়েস। দুই-এক ম্যাচ ব্যর্থ হলেই তাকে ছুড়ে ফেলা হয় দল থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেখানে বাকি ব্যাটসম্যানরা নাকানিচুবানি খেয়েছেন সেখানেও কথা বলেছে ইমরুলের ব্যাট। শেষ ১৪ ইনিংসে তার রান প্রায় ছয়শ (৫৯৯), ম্যাচপ্রতি গড় প্রায় ৪৩। অথচ চলতি বছর দলেই ডাক পড়েনি তার। তরুণদের পাশাপাশি তাই দলের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সেচ্ছাচারিতাও কম দায়ি নয়। এই সমালোচনা চাপা দিতে হলেও আজ জ্বলে উঠতে হবে এনামুল-সাব্বির-মোসাদ্দেকদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওয়ানডে


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ