Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কক্সবাজারে অজ্ঞাত কারণে নিহত হচ্ছে ,শঙ্কিত তিন সহস্রাধিক বিদেশী কর্মকর্তা

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৮, ৮:০৯ পিএম


কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তাদের একেক করে অজ্ঞাত কারণে মারা যাবার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে কক্সবাজারের প্রশাসনকে। শুধু প্রশাসন নয় বিষয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত অন্যান্য তিন সহস্রাধিক কর্মকর্তাদের মাঝে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলেও জানাগেছে।
শঙ্কিত হয়ে পড়েছে তারা। পুলিশের এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য আছে বলে জানা যায়নি।
এতে করে একদিকে কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের।
সম্প্রতি এক সপ্তাহর মাথায় আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত দু' জন কর্মকর্তা অজ্ঞাত কারণে নিহত হওয়ার কারণে কক্সবাজারের সচেতন মহলে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

গত সোমবার সকাল থেকে ইউএনএইচসিআর এর কক্সবাজার কার্যালয়ের শরণার্থী সুরক্ষা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলেমান মুলাটা নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই ইউএনএইচসিআর এর এক কর্মকর্তা সদর থানায় জিডি করেন।

এর তিনদিন পর গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে মহেশখালীর সোনাদিয়া পয়েন্টে জেলেদের জালে আটকা পড়া অবস্থায় সোলেমান মুলাটার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের সঙ্গে পাওয়া কিছু ডকুমেন্ট দেখে সোলেমান মুলাটার পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। মৃতদেহটির মুখমণ্ডলসহ পুরো শরীর ফুলেফেঁপে বিকৃত অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনায় সন্দেহভাজন একই অফিসের দুই কর্মকর্তা জাফরীন আফসারী ও তার স্বামী রবিনকে আটক দেখিয়ে গতকাল কারাগারে পাঠিয়েছে সদর মডেল থানা পুলিশ।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ওই দম্পতিকে থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ১৫৪ ধারায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকার অভিজাত হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইজ থেকে আটক করা হয়।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি খন্দকার ফরিদ চৌধুরী বলেন, 'মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া থেকে 'ইউএনএইচসিআর' এর কক্সবাজার কার্যালয়ের শরণার্থী সুরক্ষা বিষয়ক কর্মকর্তা সোলেমান মুলাটার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে একই অফিসের কর্মকর্তা জাফরীন আফসারী ও তার স্বামী রবিনকে আটক করা হয়। আটকের পর থানায় তাদের দুজনকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জাফরীন আফসারী নিহত ইথিওপিয়ার নাগরিক সোলেমান মুলাটার সাথে পরকীয়ায় জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে।
তবে তার মৃত্যুর বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই, সন্দেহজনকভাবে ১৫৪ ধারা মতে আদালতের মাধ্যমে ওই দম্পতিকে কক্সবাজার কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে'।

ওসি আরো বলেন, 'মৃত উদ্ধার হওয়া সোলেমান মুলাটারর মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তাকে কি হত্যা করা হয়েছে, নাকি তিনি নিজেই আত্মহত্যা করেছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে পরকীয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে এরও এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজারের হোটেল থেকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম (৩২) নামের একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) রাত ১০ টার দিকে কক্সবাজার শহরের হোটেল হলি ডে থেকে তার মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত তৌহিদুল ইসলাম (২৫) চট্টগ্রাম জেলার পটিয়ার মো: সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করে আসছিলেন বলে জানাগেছে।

তার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যু রহস্য জানা সম্ভব হবে’ জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর আরেক কর্মকর্তা মো: আলমগীর তার 'মৃত্যু রহস্যজনক’ বলে দাবী করেছেন।

তবে একাধিক সূত্রমতে চড়া বেতনে আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত এসব কর্মকর্তাদের অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত মাদক গ্রহণ, পরকীয়া ও নারী আসক্তিসহ নানা বদভ্যাসে অভ্যস্ত। অজ্ঞাত কারণে মারা যাওয়ার পেছনে এসব কারণও থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।

উল্লেখ্য রোহিঙ্গাদের সুবাদে এখন কক্সবাজারে শতাধিক এনজিও কাজ করছে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় তিন সহস্রাধিক বিদেশী কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজারে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ