Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভয়ঙ্কর হচ্ছে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষম ব্যাকটেরিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

যাবতীয় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন ধরে যে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে সেই এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধে ভয়ানকভাবে সক্ষম হয়ে উঠছে কিছু ব্যাকটেরিয়া। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে শুক্রবার জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কাগুশিমা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ৮ জন রোগী মারা গেছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। হাসপাতালটির আরও সাত রোগী একই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা। ২০১৬ সাল থেকে অজ্ঞাত কারণে অন্তত ১৫ জন রোগীর মারা যাওয়ার ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষম ব্যাকটেরিয়া দায়ী বলে দেখতে পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার তালিকায় প্রথমে যে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সেই আসিনেটোব্যাক্টর দ্বারা সংক্রমিত হয়ে এইসব রোগী মারা গেছেন বলে জাপানের এই হাসপাতারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা ক্ষেত্রে আতংক তৈরি করা এই ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে এন্টিবায়োটিক ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও)। মূলত এন্টিবায়োটিক ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার ও সংক্রমিত রোগের ব্যাকটেরিয়ার জীনগত পরিবর্তন এদেরকে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষম করে তুলছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। বিষয়টি সর্তকতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে, জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাসুনোবু কাতো সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা চিকিৎসা সেবার আইন অনুযায়ী বিষয়টি দেখছি। এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একবছরে দেশটিতে ৩৫ জন এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে মারা গিয়েছিলেন। এন্টিবায়োটিক বিরোধী ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী ভয়ানক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অণুজীববিদ্যা নিয়ে গবেষণা করা ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আসাকো সুকাহারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সত্যি উদ্বিগ্ন। এন্টিবায়োটিক যেভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে, তাতে চিকিৎসাবিদ্যা প্রবল হুমকিতে পড়তে পারে। এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে, তাই এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া দরকার। তা না হলে ওষুধ হিসেবে এটা কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলবে।” এন্টিবায়োটিক মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ব্যবহৃত হয়, যা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। কিন্তু যে ব্যাকটেরিয়া এই এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে কাজ করে, অর্থাৎ এন্টিবায়োটিকের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া হলো এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষম ব্যাকটেরিয়া। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া মানুষ ও অন্যন্য প্রাণীর দেহে ছড়িয়ে মারাত্মক রোগ তৈরি করতে পারে, যা কোন ঔষধ ব্যবহার করে নিরাময় করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। ব্যাকটেরিয়ার জীনগত পরিবর্তন এক ধরনের চলমান প্রক্রিয়া। সাধারণত পরিবেশগত কিংবা সহজাত প্রবৃত্তিগত কারণে ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ কোডন (আমিনো এসিড) পরিবর্তন ঘটায়, যাকে মিউটেশন বলে। আর এই মিউটেশনে ব্যাকটেরিয়ার জিনোমে (সমগ্র ডিএনএ) এক ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। পরিবর্তিত এই ডিএনএ থেকে তৈরি হয় রোগের জীবাণু বা এক ধরনের প্রোটিন। নিদিষ্ট এন্টিবায়োটিক সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার নির্দিষ্ট জীনের বিরুদ্ধে কাজ করে, তা থেকে নতুন প্রোটিন তৈরি করে করতে দেয় না।কিন্তু যখন সেই প্রোটিন প্রাকৃতিকভাবেই ব্যাকটেরিয়ার ভিতর তৈরি হয় তখন সেটাকে প্রতিরোধ করার কোনো কৌশল এখনও পর্যন্ত মানুষের জানা নেই।এছাড়াও ফুসফুস আর রক্তে মিশে থাকা এই ভয়ানক ব্যাকটেরিয়া অন্যান্য রোগ জীবাণুকে এন্টিবায়োটিকের বিপরীতে একধরনের প্রোটিন তৈরি করে দেয়, আর তাতে এন্টিবায়োটিকও অকার্যকর হয়ে যায়। ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাকটেরিয়া

৬ জানুয়ারি, ২০২২
২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ