পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন সকলে রাজপথ ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাও। যে উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছিলেন, তা সফল হয়েছে। অনিয়ম-অসংগতির বিরুদ্ধে তাদের চেষ্টা সফল হয়েছে, তারা জাতিকে একটা জায়গায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। তাদের এই অর্জন ধরে রাখার জন্য এ পরিস্থিতি আর চলতে দেয়া যায় না। কারণ, এতে সুযোগ-সন্ধানীরা সুযোগ নিতে পারে। স্বার্থান্বেষী মহল গুজব রটিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করতে পারে। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে তাদের এ সাফল্য হারিয়ে যায়। গতকাল (রোববার) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরীর সকল কলেজের (সরকারি-বেসরকারি) প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দু’জন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে মর্মান্তিক উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুঃখ, কষ্ট-বেদনা ও সেন্টিমেন্ট আমি ধারণ করি। তাদের অনুভূতিটা আমি স্বীকার করি। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সকল দাবী মেনে নিয়েছেন। এগুলো এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন প্রজন্মকে আধুনিক যুগের উপযোগী দক্ষতা দিতে চাই। তোমরা ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে রাজপথ ছেড়ে পড়াশুনায় মনোযোগ দাও। ভবিষ্যতে তোমাদেরকে আরো বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে। সমগ্র শিক্ষা পরিবারের পক্ষ হতে তিনি শিক্ষার্থীদের আগামীকাল থেকে ক্লাসে যোগ দেয়া আহবান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী কলেজের প্রিন্সিপাল ও ভাইস-প্রিন্সিপালদের উদ্দেশে বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ছাত্র-অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করতে হবে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে তাদেরকে শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসতে হবে। তাঁরা যেহেতু প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব প্রদান করছেন, এটা তাদের দায়িত্ব। তবে আন্দোলনরত যারা রাস্তায় রয়েছে তারা সবাই শিক্ষার্থী কিনা তা নিয়ে সভায় উপস্থিত অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান সন্দেহ প্রকাশ করেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে অভিভাবকদের নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোর পরিচালনা পর্যদের সভাপতিকে ভ‚মিকা রাখারও দাবি জানিয়েছেন তারা। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষক কানিজ মাহমুদ আক্তার বলেন, অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের যেন ঝামেলা না হয় সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।
নজরুল শিক্ষালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা জাহান বলেন, যেসব শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হবে না তাদের চিহ্নিত করতে হবে। নতুন পোশাকে সবাই ছাত্র কি না তাও সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত। যেসব শিক্ষার্থী কলেজে অনুপস্থিত থাকছে তাদের অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি জানানোর পরামর্শ রাখেন ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান খান। অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের সময় শিক্ষার্থীদের নির্বিঘে যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার দাবিও জানান তিনি। যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের আলাদা করে ডেকে কাউন্সিলিং করার পরামর্শ দেন ঢাকা কমার্স কলেজের শফিকুল ইসলাম। পরিবহন শ্রমিকরা যেন শিক্ষার্থীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করেন সে বিষয়ে তাদের কাউন্সিলিং দেওয়ার পরামর্শ দেন এ কে এম রহমতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় নয় দাবি করে ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন বলেন, সরকারি চাকরি করেও অনেক শিক্ষক ফেইসবুকে উসকানিম‚লক বক্তব্য দিয়েছেন, এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশিরভাগ অধ্যক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফেরাতে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদের সভাপতিকে ভ‚মিকা রাখার পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের ডেকে কথা বলার পরামর্শ তাদের। এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমে অভিভাবকদের সচেতন করা, শিক্ষার্থীদের বোঝাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর নিয়োগ দেওয়ারও দাবি জানান কোনো কোনো অধ্যক্ষ।
সভায় শুরুতে সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, আমরা আপনাদের কাছ থেকে সমাধান চাই। কারণ নানান রকমের উসকানি, অডিও-ভিডিও বাজারে আসছে, এজন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, মিথ্যা তথ্য প্রচার হচ্ছে সেজন্য আমরা আতঙ্কিত।
দেড় ঘণ্টা ধরে ৩৯ জন শিক্ষকের বক্তব্য শুনেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. মাহাবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভাটি দুটি শিফটে সম্পন্ন হয়। প্রথম শিফটে ঢাকা মহানগরীর ২৪২টি সরকারি-বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ এবং দ্বিতীয় শিফটে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।