Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পুলিশ পাহারায় দেশে গুন্ডাতন্ত্র চলছে

গোলটেবিল বৈঠকে ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

দেশের চালচিত্র তুলে ধরে এবং ‘বঙ্গবন্ধুর দেশে এখন আওয়ামী লীগের গুন্ডাতন্ত্র চলছে’ মন্তব্য করে গণফোরোম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজমান। বঙ্গবন্ধুর দেশে চলছে পুলিশ প্রহরায় আওয়ামী লীগের গুন্ডাতন্ত্র। কোথাও গণতন্ত্র আইনের শাসন নাই। কিসের গণতন্ত্র? দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। আমি এই গুন্ডাতন্ত্রের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই না। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হউক। আমাদের গুলি করে মারা হউক। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের আয়োজনে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন। মতবিনিময় সভায় দেশের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশ প্রহরায় গুন্ডাদের নামিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পেটানো হচ্ছে। এটা কোন দেশ? বঙ্গবন্ধু কী এই দেশ চেয়েছিলেন?
ড. কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্রে পুররুদ্ধারে আমাকে গুলি করে হত্যা করলে অন্তত বলতে পারবো গুন্ডাদের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার থেকে মারা গেছি। দেশে তরুণ সমাজ আজ জাগ্রত হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় শক্তি। কিন্ত আমরা গুন্ডা মুক্ত বাংলাদেশ চাই। পুলিশের পাশে লাঠি নিয়ে কারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। কারা এদেরদের লেলিয়ে দিয়েছে। আমরা পুলিশের পাশে গুন্ডা দেখতে চাই না।
কামাল হোসেন বলেন, যে দেশে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমদকে জীবন দিতে হয়েছে; সেই বাংলাদেশে গুন্ডাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। যে দেশের জন্য লাখো শহীদ জীবন দিয়েছে; যাদের লাশও আমরা পাইনি। তারা আমাদের ঋণী রেখে গেছেন। তারা একটা দে রেখে গেছেন যেখানে সভ্যতা থাকবে। মানুষ মানবাধিকার ভোগ করবে। সেখানে গুন্ডাতন্ত্র থাকা মানে তাদেরকে অপমান করা। দেশে অসুস্থ শাসন ব্যবস্থা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারণে বলবো যে এটা অসুস্থ শাসন ব্যবস্থা। কারণ, এই তরুণ ছাত্রদের সাহায্য না করে তাদের ওপরে গুন্ডা লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তরুণ ছাত্ররা যা দেখালো তা হলো জাগ্রত বিবেক। তা এখনও আমাদের মধ্যে আছে, যা প্রবলভাবে গোটা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। কোনও অস্ত্র নাই তাদের কাছে।
কামাল হোসেন বলেন, যারা লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছে, তাদেরকে কোনও ছাত্র সংগঠন বলবো না। এদের একটাই শব্দ আছে— তা হলো গুন্ডা। যারা লাঠি নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা করে, তাদেরকে আমরা গুন্ডা ছাড়া আর কোনোভাবে চিহ্নিত করতে পারি না।
গুন্ডামুক্ত বাংলাদেশ চাই উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, এদের থেকে দেশকে মুক্ত করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। এরা থাকলে আমরা থাকতে পারবো না। সম্মান নিয়ে বাঁচা তো দূরের কথা, বেঁচেও থাকতে পারবো না। এই গুন্ডাদের কারা লেলিয়ে দিয়েছে, তা চিহ্নিত করতে হবে।
আগস্ট মাসে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা হচ্ছে উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, এই মাসে গুন্ডারা লাঠি নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা করছে। এটা কি বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানোর প্রক্রিয়া? উনার ছবি লাগালেই সম্মান জানানো হয় না। বঙ্গবন্ধু জীবনের বিনিময়ে যে সভ্যতা আমাদের মধ্যে রেখে গেছেন, সেই সভ্যতার বিরুদ্ধে আজকে গুন্ডা লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলেন আমরা রাস্তায় নামি।
দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আছে জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, এই ঐক্যবদ্ধ মানুষের ওপর গুন্ডা লেলিয়ে দিয়ে ধ্বংস করা যাবে না বলে আমরা বিশ্বাস। আমাদের গুলি করে মেরে ফেলা হলেও এটা শেষ হবে না। এটা আরও চাঙা হবে। আমরা ভয়ে ভীত নই। মেরে ফেলেন।
সংবিধানকে ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, সংবিধানের কোথাও লেখা আছে যে, পুলিশের পাশে লাঠিয়াল থাকবে। পুলিশের পাশে থেকে লাঠিয়াল বাহিনী বেআইনিভাবে নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ করবে। আর পুলিশ এদের সহযোগী হবে। এটা পুলিশকে অপমান করা এবং তাদেরকে ধ্বংস করা।
পুলিশের আইজিপির উদ্দেশ্যে সংবিধানের অন্যতম এই প্রণেতা বলেন, সাংবিধানে বলা নেই পুলিশের পাশে লাঠি নিয়ে গুন্ডাদের থাকতে হবে। এটা পুলিশ বাহিনীকে অপমান করা হচ্ছে। আমরা সাদা পোশাকের গুন্ডা মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চাই। আপনি পুলিশ বাহিনীর পাশ থেকে গুন্ডা সরাতে না পারেন তাহলে আপনি পদত্যাগ করুন। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ