Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মসজিদ ভাঙা নিয়ে উত্তপ্ত নিংশিয়া

চীনে প্রশিক্ষণের নামে লাখ লাখ উইঘুর গোপন শিবিরে আটক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নিংশিয়া অঞ্চলে একটি নতুন মসজিদ ভাঙার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে মুসলিমরা। হুই স¤প্রদায়ের মুসলমানরা বৃহস্পতিবার উইঝু শহরের ওই মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করে। ওইদিন সকাল থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত বিক্ষোভ করে তারা। কেউ কেউ বলেছে, তারা সরকারকে মসজিদে হাতও লাগাতে দেবে না। উইঝু শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, উইঝু শাহী মসজিদ ভবন নির্মাণে কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমোদন ছিল না। একারণেই মসজিদটি ধ্বংস করার ঘোষণা গত ৩ আগস্ট এক নোটিসে জানায় শহর কর্তৃপক্ষ। আর এতেই উইঝুর বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সঞ্চার হয়। বিষয়টি নিয়ে হুই স¤প্রদায়ের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, যথাযথ অনুমোদনই যদি না থাকে তাহলে দুইবছর ধরে মসজিদটি তৈরির সময় কর্তৃপক্ষ এর নির্মাণকাজ বন্ধ করল না কেন? কিন্তু এ সমস্ত প্রশ্ন, বিক্ষোভের মুখেও সরকার নিজ অবস্থানে অটল রয়েছে। স্থানীয় এক অধিবাসী বলেন, “জনতা সরকারকে মসজিদে হাত লাগাতে দেবে না। কিন্তু সরকারও সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে না। ফলে আমরা অচলাবস্থায় পড়েছি।” এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক একটি প্যানেল শুক্রবার বলেছে, চীন অন্তত ১০ লাখ উইঘুরকে বড় বড় শিবিরে এনে রেখেছে, যেগুলোকে দেখে আটককেন্দ্র বলেই মনে হয়। দেশটি এই শিবিরগুলোর বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে চলছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স লিখেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫০ জন চীনা কর্মকর্তার কেউ এই অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেননি। জাতিসংঘের বর্ণবাদ নির্মূল কমিটির সদস্য গে ম্যাকডোগাল জানিয়েছেন, আটক দশ লাখের বাইরেও আর দুই লাখ উইঘুরকে ‘রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দানের’ নামে বিশেষ শিবিরে আটকে রেখেছে চীন। গে ম্যাকডোগাল চীন, হংকং এবং ম্যাকাওয়ের পরিস্থিতির ওপর পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় চীনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। চীনে মুসলিম সংখ্যালঘু আছে ২ কোটি ৩০ লাখ। নিংশিয়া বহুদিন থেকেই মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল। চীন দাপ্তরিকভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিলেও সা¤প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি মুসলিম অঞ্চলগুলোতে উগ্রবাদের অজুহাতে ধর্ম পালনে কড়াকড়ি আরোপ করছে। উইঝু শহরের শাহী মসজিদটি মধ্যপ্রাচ্যের মসজিদের ধাঁচে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটিতে একাধিক মিনার ও গম্বুজ আছে। বিবিসি’র এক সংবাদদাতা বলেছেন, দেশটিতে কয়েক শতক ধরে সবসময় চীনা ধাঁচেই মসজিদ নির্মাণ হয়ে আসছে। সে কারণে নতুন কাঠামোর ওই মসজিদকে চীনে আরব আধিপত্য বিস্তারের দৃষ্টান্ত হিসাবেই দেখছে স্থানীয় সরকার। আর তাই কর্তৃপক্ষ চাইছে মসজিদের গম্বুজগুলো ভেঙে চীনের প্যাগোডা ছাঁচে সেগুলো নির্মাণ করতে। কর্তৃপক্ষ আটটি গম্বুজ সরিয়ে ফেলতে চায় বলে জানানো হয়েছে কয়েকটি প্রতিবেদনে। কিন্তু এ প্রস্তাব মুসলিম স¤প্রদায় মানবে না বলেই জানিয়েছেন এক বিক্ষোভকারী। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মসজিদ

১৫ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ