Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ভট বক্তব্য মানুষ তামাশা মনে করে-----রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ১:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাগামহীন উদ্ভট বক্তব্য মানুষ তামাশা মনে করলেও ক্ষমতাসীনরা লজ্জা পায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন লাগামহীন উদ্ভট বক্তব্য দিয় যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়াকে উদ্দেশ্য করে। এসব বক্তব্য শুনে দেশের মানুষেরা তামাশা মনে করলেও ক্ষমতাসীনরা তাতে লজ্জা পায় না। কারণ তারা জনসমর্থনের পরোয়া করে না। মিথ্যা বলার জন্য তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। গতকাল (শনিবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উচ্চতর আদালতের একটি পর্যবেক্ষণ ছিল। সেই মানসিক স্বাস্থ্য বোধহয় এখন আরো অবনতিশীল হয়েছে। তা না হলে দেশনেত্রীকে বন্দি করে নানাভাবে যন্ত্রণা দিয়ে, সুচিকিৎসায় বাধা দিয়ে, পরিত্যক্ত কারাভবনের নির্জন কক্ষে আটকে রেখে আত্মস্লাঘা লাভ করার পরও প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে জলজ্যান্ত মিথ্যা অপপ্রচারের তুবড়ি ছোটাতে কোন কার্পন্য করেন না।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিহিংসার শিকার তার প্রমাণ মিলছে কয়েকদিন পর-পর প্রধানমন্ত্রীর উদ্ভট বক্তব্যে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় বন্দি করে রাজনৈতিক ফায়দা লাভ করতে চেয়েছিলেন, শান্তিতে থাকতে চেয়েছিলেন কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি তার নাগালে বাইরে চলে যাওয়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সর্বত্রই আজ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ধিক্কার তুলেছে। এ জন্যই প্রধানমন্ত্রীর মানসিক যন্ত্রণা বেড়ে গেছে। তাই তিনি আরও বেশী উল্টা পাল্টা খাপছাড়া কথাবার্তা বলছেন। তবে তাঁর সকল অপকর্মের জবাব জনগণের কাছে দিতেই হবে। দুঃশাসনের কালো রাত পোহাবেই। বেগম জিয়ার অটল, অবিচল নেতৃত্ব জন মানুষের মনে দৃঢ় প্রত্যয়রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। এ প্রত্যয় শেখ হাসিনা নিষ্ঠুর দমনের চাকায় পিষ্ট করতে পারবেন না। অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা ও অন্যায় সাজা প্রত্যাহার করতে হবে। কোন গড়িমসি বা বাহানা না করে ঈদের আগেই বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নানা রকম দুঃস্বপ্নে অস্থির ও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, মানুষের বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হরণ করে যে শুন্যতার সৃষ্টি করেছেন তাতে ধেয়ে আসা প্রতিবাদী মানুষের টর্নেডোতে ভয় পেয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বেসামাল হয়ে পড়েছেন। তাই কখনও ভয়ের কথা বলছেন, কখনও ধমকের সুরে কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে বলতে চাই যারা নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নেয় তারা আগ্রাসী শক্তি, যারা জনগণের দাবিকে রক্তাক্ত করে তারা দেশের শত্রু। যারা শিশু-কিশোরদের রক্ত নিঙড়ে নেয় ও প্রতারণা করে, তারা মনুষত্বহীন। তাদের দ্বারা দেশের সার্বভৌমত্ব দুর্বল হয়। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও নিরন্তর, সংগ্রাম ন্যায় সঙ্গত। কাদের সাহেব, ধমক দিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে পারবেন না। চারিদিকে আপনাদের পতনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
এসময় তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। রিজভী বলেন, আমরা ক্ষতিকর গুজবের পক্ষে নই, তবে প্রকাশ্যে হাতুড়ি দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে পা গুড়া করে পঙ্গু করে দেওয়া এবং শহীদ মিনারে একজন ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করা কি গুজব? পুলিশ ও হেলমেটধারী সন্ত্রাসীদের একযোগে শিশু-কিশোর ও সাংবাদিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া কি গুজব? এগুলোতো সবার সামনেই ঘটেছে। এদের কেন বিচারের আওতা থেকে দুরে রাখা হয়েছে? বেশ কিছু মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে অর্থাৎ আন্দোলনকারী ও সমর্থনকারীদের যে কাউকে এর আওতায় গ্রেফতারের সুযোগ রাখা হয়েছে। প্র্রতিবাদ করলে কি সে উসকানি দাতা হবে? তাহলে ৫২ থেকে শুরু করে ৯০ এ গণআন্দোলনে সমর্থনকারীরা কি অপরাধি? মূলত: আওয়ামী লীগ অমানবিক নষ্ট বুদ্ধির দল। মিথ্যাচার আওয়ামী লীগের প্রথাগত টেকনিক। মুঢ় অহঙ্কারের কারণেই এদের পতন হয়। মিথ্যা বলা ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গই এদের রাজনীতীর জীবিকা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদকে নোয়াখালির কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার মানিকনগর নিজ বাড়িতে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তিনি অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদের সাথে এ আচরণ সরাসরি গুন্ডামি। সড়ক ও সেতু মন্ত্রী তার মন্ত্রণালয় চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। জনগণের ভোটে ওবায়দুল কাদের জিততে পারবেন না, সেজন্যেই মওদুদ আহমেদকে নিজ বাড়িতে পুলিশকে দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ওবায়দুল কাদের
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভ‚ইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ