Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিএসএফের নির্যাতনে আরো একজনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : সীমান্তে বিএসএফ বাংলাদেশীদের গুলি করে না মেরে নির্যাতন করে সীমান্তের বাইরে মেরে ফেলছে। গতকাল বুধবার সকাল ৬টায় কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের কাজিয়ারচর সীমান্তে এ কায়দায় আব্দুল বারেক (৩৫) নামের এক গরুর রাখালকে নির্যাতন করে তারা বাড়ির পাশে ছেড়ে দেয়। ভাইয়ের বাড়ি এসে এক গ্লাস পানি খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। নিহত বারেক উত্তর ধলডাঙ্গা গ্রামের এন্তাজ আলীর ছেলে। নির্যাতনে মৃত্যুর বিষয়টি প্রথমে বিজিবি অস্বীকার করলেও পরে পতাকা বৈঠকের চিঠি দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। একইভাবে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারী ওই শালঝোড় কাইজারচর সীমান্তের ৯৮৮ নম্বর সীমানা পিলারের কাছে গরু ব্যবসায়ী আব্দুল গনিকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। সেবারও দুই দফা পতাকা বৈঠক হলেও ঘটনা অস্বীকার করে ভারতের ৯৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ঝুলোলী ক্যাম্পের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ওই ঘটনায় বিএসএফের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া দুই ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন ও রইস উদ্দিন আহত অবস্থায় ফিরে এসে প্রথসে গোপনে চিকিৎসা নিলেও পরে ঘটনা জানাজানি হয়।
আব্দুল বারেকের পরিবার জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের ভিতর থেকে গরু আনতে তাকে কে বা কারা ফোনে ডাকে। বিকেলে সীমান্তের ৯৯৮-এর সাব ৬নং আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের কাছ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। বুধবার ভোর ৬টার দিকে গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে দৌড়ে এক ভাইয়ের বাড়িতে এসে পানি খেতে চায়। তাকে দ্রুত পানি দেয়া হলে নিস্তেজ হয়ে পরে। এ সময় স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে নিয়ে আসলে তিনি মৃত ঘোষণা করেন। এলাকাবাসী জানান, সে মাঝেমধ্যে ভারত থেকে গরু আনতো। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর গরু কাঁটাতার পার করে দিলে এক জোড়া গরুতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা পেতে তা দিয়ে অভাবী সংসার চালাতো। কয়েকজন জানান, লাশে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার বুকে রাইফেলের গোড়া দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থল থেকে সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দেয়া হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি। তবে বৈঠকে এসে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছে বিএসএফ। নিহতের পিতা এন্তাজ আলী ইন্তু বলেন, আমার ছেলের শরীরে অনেক মারের আঘাত। তাকে রাইফেলের গোড়া দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারী গরু পারাপারের সময় আব্দুল গণি, আলাউদ্দিন ও রইস উদ্দিনকে ধাওয়া করে ধরে বেধড়ক পেটায় বিএসএফ। এতে শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামের সুজুর উদ্দিনের ছেলে আব্দুল গণি ঘটনাস্থলে মারা যায়। বিএসএফরা ঘটনা ধামাচাপা দিতে আব্দুল গণির লাশ সীমান্তবর্তী কালজানী নদীতে ফেলে দেয়। ঘটনার পর দুপুরে বিজিবি এর প্রতিবাদ জানিয়ে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দিলে পরপর দু’দফা বৈঠক হলেও আব্দুল গণিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ অস্বীকার করে বিএসএফ।
শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বিএসএফ নির্যাতন করে মেরেছে সীমান্তবাসীরা সবাই বলছে। এর আগেও বিএসএফ একজনকে পিটিয়ে মারলো। কিন্তু স্বীকার করল না।
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়া লতিফুল ইসলাম বলেন, লাশের কয়েকটি স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএসএফের নির্যাতনে আরো একজনের মৃত্যু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ