Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অবাধ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে সব দলকে কাজ করার আহ্বান

যুক্তরাজ্যের প্রতিবেদন

প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৩৪ এএম, ২২ এপ্রিল, ২০১৬

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : বাংলাদেশে ২০১৫ সালে সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি আগের বছরের চেয়ে কোনো উন্নতি হয়নি। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মধ্যে উত্তেজনাও প্রশমিত হয়নি। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে ব্রিটিশ সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সরকারী ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্বের যে ৩০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগের পর্যায়ে রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক- এমন ৩০টি দেশের মধ্যে মিসর, ইরাক, ইরান, কঙ্গো, সিরিয়া, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, ইসরায়েল, সুদানের সঙ্গে চীন ও মিয়ানমারের নামও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আমরা আবারো স্পষ্টভাবে বলছি, কার্যকর বিচার ব্যবস্থা, স্পন্দনশীল সুশীল সমাজ ও মুক্ত গণমাধ্যম, চ্যালেঞ্জ ও জবাবদিহিতা দিতে সক্ষম কর্তৃপক্ষ একটি সফল গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ; ২০১৯ সালের নির্বাচনে সেই লক্ষ্য অর্জনে সব রাজনৈতিক দলকে কাজ করতে উৎসাহিত করছি।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাস বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার, পরিবহন ধর্মঘট এবং লাগাতার হরতালসহ নানা বিষয়ে এই দুই দল মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। জনগণের নিরাপত্তা ও জীবিকার ওপর এর প্রভাব পড়ে। ৩০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক পৌর নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য এটি ইতিবাচক উন্নতি।
২০১৫ সালে চরমপন্থীরা কয়েকজন সেক্যুলার লেখক ও সংখ্যালঘুর ওপর হামলা চালিয়েছে। বাক স্বাধীনতার ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে ব্লগারদের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর পর্যালোচনাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে সহযোগিতা করেছে।
বিলম্বিত বিচার প্রক্রিয়ার কারণে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, বেসরকারি সংস্থাগুলোর দেয়া তথ্যানুয়ায়ী, যেখানে আইনে সবোর্চ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, গুমের মতো ঘটনা ঘটেছে।
২০১৫ সালে তিন যুদ্ধাপরাধীসহ কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ বাংলাদেশে বিচার খাতের সংস্কারের জন্য ৩৭ লাখ পাউন্ড (চার হাজার ২১৮ লাখ টাকা) এবং পুলিশ বিভাগের সংস্কার কর্মসূচির জন্য ১২ লাখ পাউন্ড (এক হাজার ৩৬৮ লাখ টাকা) দিয়েছে।
নারীদের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদন বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। অনেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করছে। তারপরও নারীরা এখনো পুরুষের মতো সামাজিক অবস্থান উপভোগ করতে পারছে না। লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা এখনো উল্লেখযোগ্য সমস্যা। বাল্যবিবাহ এখনো উদ্বেগের বিষয়।   
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির প্রশংসা করা হয় প্রতিবেদনে। বলা হয়, ‘বাংলাদেশের রয়েছে ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার উচ্চাকাক্সক্ষা। ২০১৬ সাল ও এরপর একটি ইতিবাচক মানবাধিকার গতিপথের নিশ্চয়তা দেয়ার ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করছি।’
‘আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আগামী অক্টোবরে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে উৎসাহিত করব।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবাধ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে সব দলকে কাজ করার আহ্বান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ