Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তিন রুটে নিহত ২৭৮

ঈদযাত্রার ১৩ দিন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সড়ক, রেল ও নৌপথে ২৭০ দুর্ঘটনা


এবার ঈদযাত্রার ১৩ দিনে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ২৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন মোট ২৭৮ জন। এ সময়ে আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে সড়কপথে। এ পথে ১৩ দিনে ২৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৫৯ জন। আর আহত হয়েছেন ৯৬০ জন। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘১৬ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১৩ দিন ঈদযাত্রা হিসেবে ধরা হয়েছে। এ সময়ে সারা দেশেসড়ক, নৌ ও রেলপথে মোট ২৭০টি দুর্ঘটনায় ২৭৮ জন নিহত হয়েছেন। এই তিন রুটে মোট আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন। এ সময়ে সব চেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে সড়কপথে ২৩৭টি। এতে ২৫৯ জন নিহত ও ৯৬০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের মধ্যে ১২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৪ জন চিকিৎসক, ২ জন প্রকৌশলী, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন শিক্ষক, ২০ জন শিক্ষার্থী, ৪২ জন চালক-হেলপার, ৫৯ জন নারী, ৩৪ জন শিশু ও ৮ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ঈদযাত্রায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নানামুখী তৎপরতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার কারণে বিগত ঈদুল ফিতরের তুলনায় দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, প্রাণহানী ২৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং আহত ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে। তবে গত ঈদুল আজহার তুলনায় দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ও আহত ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংগঠিত দুর্ঘটনার যানবাহন পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২৯ দশমিক ১৮ শতাংশ বাস, ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৬ দশমিক ৬ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৫ দশমিক ৯ শতাংশ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক, ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৯ শতাংশ কার-মাইক্রো ও ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ অনান্য যানবাহন দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।
মোট সংগঠিত দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৩৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়া, ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, ১ দশমিক ১০ শতাংশ চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে, ১ দশমিক ২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ও ৫ দশমিক ২ শতাংশ অনান্য কারণে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন; বিরতি বা বিশ্রামহীন যানবাহন চালানো; অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও অদক্ষ চালক-হেলপার দিয়ে; মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নসিমন-করিমন ও মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল; বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো; সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা ও সড়কের বেহাল দশা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল উপরের প্রতিবেদন তৈরি করে।
সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সেইফ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, পিএসসির সাবেক চেয়্যারম্যান ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সংগঠন ফুয়ারার সভাপতি ইকরাম আহমেদ, বিআরটিএর সাবেক চেয়্যারম্যান আইয়ুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, দুর্ঘটনা রিসার্স ইনস্টিটিউট বুয়েটের সাবেক পরিচালক ড. মাহবুব আলম তালুকদারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয় বা নেওয়ার কথা বলা হলেও জবাবদিহির জায়গা নিশ্চিত করা হয় না। আমাদের এখানে যাঁরা নীতিনির্ধারণ করেন, তাঁরাই আবার মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি। জবাবদিহির ব্যাপারে যে অনাগ্রহ রয়েছে, এর মূলে রয়েছে এই স্বার্থের সংঘাত রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ