Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এটা দানবের নয় মানবের দেশ

আলোচনা সভায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১:১০ এএম

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, আমি চাই দেশে একটা সম্মন জনক পরিস্থিতি তৈরী হোক। একটা ভারসাম্য তৈরী হোক। এটা দানবের নয় মানবের দেশ। এটাই হলো আমাদের পরিচয়। গতকাল শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা ও তার প্রতিবাদ প্রতিরোধ সংগ্রাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্য চাই। সেই ঐক্য আমি আওয়ামী লীগ নিয়েও চাই না, বিএনপিকে নিয়েও চাই না। তাদের থেকে সম দুরত্বে থেকে আমরা একটা জাতীয় ঐক্য তৈরী করতে চাই। সে জাতীয় ঐক্যে যদি কেউ আসতে চায়, তারা যদি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে আসবে। নানান খেল হচ্ছে নানান খেল হবে। এই সরকার কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে না। আমি চাই আওয়ামী লীগের জন্য যেন বঙ্গবন্ধু ধ্বংস না হয়। আপনারা নিজেনা ধ্বংস হতে চান। কিছুই বলার নাই।
তিনি বলেন, আপনারা ক্ষমতায় আছেন আপনারই শুধু দেশ প্রেমিক আর আমরা সবাই দেশদ্রোহী। সবাইকে আপনারা জামায়াত, বিএনপি ভাববেন? বিএনপিতো একটা বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাকে শত্রু ভাববেন? এগুলো ভাল নয়।
বঙ্গবীর বলেন, আমি চাই খালেদা জিয়া যাতে নিগ্রিহীত না হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারালে আমার কিছুই বলার নাই। কিন্তু তিনি ক্ষমতা হারালে সম্মান হারাবেন কিংবা নিগ্রিহীত হবেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যা যেমনি মেনে নিইনি। শেখ হাসিনাকে হত্যা করলেও তা আমি মেনে নিব না। এবং তাকে নির্যাতন করলেও মেনে নিব না।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের পৃথিবী দখল করার শক্তি থাকতে পারে কিন্তু বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বহিষ্কার করার শক্তি রাখে না। আওয়ামী লীগ আমাকে বহিষ্কার করার ৮দিন আগে আমি আওয়ামী লীগকে বহিষ্কার করে ছিলাম। কাদের সিদ্দিকীকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা আওয়ামী লীগের নেই।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু নির্মমভাবে হত্যার শিকার হওয়ার পর আমি যদি এর প্রতিবাদ করে আমরা বিহার জয় করতে না পারতাম যদি আমরা জয়প্রকাশ নারায়কণকে জয় করতে না পারতাম তাহলে জননেত্রী শেখ হাসিনাও ভারতে থাকতে পারতেন না। আমরা রাজনীতির জন্য আজকে এই সভার আয়োজন করি নাই। এখানে এসেছি বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাকে স্মরণ করতে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা প্রতিরোধ সংগ্রাম করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে তাদেরকে স্মরণ করতে। কিন্তু সামনে নির্বাচন, সমস্ত জাতি মেতে আছে সেই নির্বাচনকে নিয়ে।
বঙ্গবীর বলেন, গত পরশু নির্বোধ অপাদার্থ নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা নজির বিহীন। কোন ইসি সদস্যের কমিশনের মিটিং বয়কট করার ইতিহাস অতিতে না থাকলেও এবার তা হয়েছে। ইভিএম এই মহুর্তে হওয়ার কোন মানে নেই। যারা ইবিএম চালাবেন তারাও এটা শেখিন নাই। যারা ভোট দিবেন তারাও ইভিএমে ভোট দিতে জানেনা। এই ইভিএম চালু হলে এর অপব্যবহার রোধ করা যাবে না। এর আগের কমিশনরাও এই ইভিএম চালু করতে চেয়েছিল, কিন্তু তারাও পানেনি। এনিয়ে নির্বাচন কমিশনের আমাদেরকে আমন্ত্রণ করা হলে আমরা তাদেরকে এর ভুল ত্রু টিগুলো ধরে দিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন একটা জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এটা ঐক্যের ব্যপারও না অনৈক্যের ব্যপারও না। আমি বঙ্গবন্ধু নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছি যে কদিন বেঁচে থাকবো বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই রাজনীতি করে যাবো।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগের এক সভায় ড. কামাল হোসেনকে প্রচুর গালাগাল করা হয়েছে। কামাল হোসেন একটা ভাল লোক নাই বা হতে পারেন। কিন্তু তিনি যে মাপের একজন লোক তাকে কিছু বলার আগে একটু ভাষা জ্ঞান থাকার প্রয়োজন। জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, আপনার পাশের লোকগুলোকে ভাষা শেখান। বাংলা অভিধানে মানুষের সমালোচনা করার ভাষার অভাব নাই। একজন প্রবিন আইজিবীকে কি জঘন্য ভাষায় গালাগালি করা হলো।
বিশিষ্ট লেখক-বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড কোন গুপ্ত হত্যা ছিল না। এ হত্যাকান্ড ছিল একটি বড় রকমের জিঘাংসা। সে নেতার হত্যাকান্ডের পর একটি বিশাল দল ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সে দলের ভেতর থেকে যাদেরকে প্রতিবাদ করার কথা ছিল তারা তা করেনি। সৈয়দ আবুল মকসুদ আরো বলেন, বাংলাদেশে যদি মুক্তিযুদ্ধের তালিকা কলা হয় তাহলে তাতে এক নম্বরে থাকবে কাদের সিদ্দিকীর নাম।
ডাকসু’র সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনুসুর আহমদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা ও তার প্রতিবাদ-প্রতিরোধে যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে শীর্ষ পর্যায়ে চারবার সুপারিশ করেও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, সেদিন জীবন বাজি রেখে অর্ধাহারে অনাহারে থেকে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয় তাতে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর মান উজ্জ্বল হয়। বিশ্ববাসীর টনক নড়ে যে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে দেশের ভেতরে প্রতিবাদ প্রতিরোধ হচ্ছে।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম-সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীসহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

Show all comments
  • ইয়াসমিন ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:৩০ এএম says : 0
    সেটাই তো বুঝতেছি না
    Total Reply(0) Reply
  • দোলন ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:৩১ এএম says : 0
    আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুক
    Total Reply(0) Reply
  • Sayed, Muktijodhya Biman Sena ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৮:২৬ এএম says : 0
    What do you mean by that? Do you think you are still that Kader Siddiqui of 1971? That Kader Siddiqui already dead. No some political elites want to use you and some other SUSHIL personalites so that people like Dr Kamal Hossain and B Choudhury can come to power. But that dream will never come true. Because none of that front has any connection with the grass root people.
    Total Reply(0) Reply
  • syed al kaium, patuakhali. ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৬:৫৮ পিএম says : 0
    সরকারের উচিত নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে, সংসদ ও মন্ত্রীপরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। বিগত 10 বছরে সরকার যে সকল ভালো / খারাপ কর্মকান্ড করেছে তার প্রকৃত মূল্যায়ন সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সম্ভব হবে। একটা কথা একেবারে সত্যি দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ