Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হাইকোর্ট বেঞ্চ শহীদুলের জামিন আবেদন শুনানিতে বিব্রত

চার দিন পর বিব্রত, আমরা হতবাক : শাহদীন মালিক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের জামিন আবেদন শুনতে বিব্রতবোধ করেছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিচারপতি মোঃ রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে বিব্রতবোধের এ ঘটনা ঘটে। আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে একজন বিচারপতি বিষটি শুনতে বিব্রতবোধ করেছেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য নতুন একটি বেঞ্চে পাঠাবেন। সেখানে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গতকাল হাইকোর্টের বেঞ্চে জামিন আবেদনটি শুনানির তালিকায় ছিল। আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। উপস্থিত ছিলেন ড. শাহদীন মালিক। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, অমিত তালুকদার ও অরবিন্দ কুমার রায়। পরে সারা হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি জানতে চেয়েছিলাম, বিষয়টি কয়েকদিন কার্যতালিকায় থাকার পর আজ কেন বিব্রতবোধ করছেন? আদালত বিব্রতবোধ করার কারণ বলেননি। এভাবে বিব্রতবোধ করা সত্যিই অস্বাভাবিক।
তিনি বলেন, আমরা আজ আদালতের কাছে বলেছি, আমাদের যে জামিন আবেদনটি আছে সেটি শুনানি করা হোক। সিদ্ধান্ত কী হবে সেটা আদালতের ব্যাপার। আমরা শুনানির সুযোগ চাই। এটা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। আমরা কারণ জানতে চেয়েছি কেন আমাদের আবেদন শোনা হবে না। পাঁচদিন ধরে আমাদের আবেদনটি কার্যতালিকায় রয়েছে। কোনো না কোনো কারণে শুনানি করা যায়নি। এক পর্যায়ে আমাদের বলা হল, বাস্তবতা আমাদের বুঝতে হবে। আমরা তখন আদালতে বলেছি, বাস্তবতা কি এটাই যে, একজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো যাবে, তাকে আটকে রাখা হবে। তার জামিন চাইতেই দেয়া হবে না, এটাই কি আমাদের বাস্তবতা?এই আইনজীবী বলেন, আমি জানি সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিককে তার অধিকারের সুরক্ষা পেতে এই আদালতে আসতে হবে। এখানে আসার পর যদি ফিরিয়ে দেয়া হয় তাহলে কোথায় যাব সেটা আমরা বুঝতে পারছি না।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত ৫ অগাস্ট পুলিশ শহীদুলকে গ্রেফতার করে। পরে উসকানিমূলক ও মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এ মামলা করে পুলিশ। ঢাকার হাকিম আদালত শহিদুলের জামিন আবেদন নাকচ করে দিলে তার আইনজীবীরা ১৪ অগাস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতে যান। বিচারক আবেদনটি ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য রাখলে তারা শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আরেকটি আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তা গ্রহণ না করলে ২৬ অগাস্ট শহীদুল আলমের অন্তর্বতীকালীন জামিন চেয়ে ওই আদালতেই ফের আবেদন করা হয়। আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ না করায় গত ২৮ অগাস্ট শহিদুলের জামিন আবেদন নিয়ে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আসেন। কয়েক দিন আটকে থাকার পর সোমবার আবেদনটি কার্য তালিকায় আসে। এরপর আদালত বিষয়টি আজকের শুনানির জন্য রাখে। কিন্তু মঙ্গলবার আদালত বিব্রতবোধ করায় শহিদুলের জামিন শুনানি আরও পিছিয়ে গেল।
হতবাক- ড. শাহদীন মালিক:
শহীদুল আলমের জামিন শুনানির বিষয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিব্রতের ঘটনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ড. শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এ মামলা নিয়ে হতবাক হলাম। এই মামলা নিয়ে বেশ কিছুদিন কথা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল সময়ও চেয়েছেন। বিব্রত হলে প্রথম দিনেই মামলাটির শুনানি নিয়ে বিব্রত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চারদিন পরে বিব্রত হওয়াতে আমরা হতবাক হয়েছি।
খাটো করে দেখার অবকাশ নেই- অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, শহীদুল আলম আন্তর্জাতিকভাবে অনেকের সঙ্গেই যুক্ত আছেন। তাই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে যদি স্পর্শকাতর, মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিষয়ে লাইভ পোস্ট করা হয় তবে এটাকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। শহীদুল আলমের জামিন শুনানিতে বিব্রত হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, শহীদুল আলমের মামলাটি আজ শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত ছিল। যখন তাদের আইনজীবী আবেদনটি শুনানির জন্য মেনশন করেন তখন দুই বিচারপতির মধ্যে একজন বিব্রতবোধ করেন। ফলে মামলাটি এদিন শুনানি সম্ভব হয়নি। বিব্রতের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আদালত কিছুই বলেননি। আমাদের কোর্টের মেটার অব প্র্যাকটিস অনুসারে বিব্রতের কারণ কখনও বলা হয় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শহীদুল

১৬ নভেম্বর, ২০১৮
১৫ নভেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ