Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্ভাবনাময় সোনালি আঁশ

চিঠিপত্র

মোস্তফা কামাল গাজী | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৯ এএম

সোনালি আঁশ নামে পরিচিত পাট একসময় বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে চাষ হলেও অনেকটাই কমে গেছে এখন। আগের মতো এখন আর নদীর পারে, বিলের ধারে পাটক্ষেত চোখে পড়ে না। দিন দিন পঙ্গু হয়ে পড়ছে পাটশিল্প। মাত্র কয়েক দশক আগেও পাটই ছিল আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য। তখন বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের একমাত্র হাতিয়ারও ছিল এটি। তবে যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাব, জুটমিল মালিকদের অজ্ঞতা ও সরকারের উদাসীনতায় পাটশিল্পে আমরা আমাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারিনি। বর্তমানে এ শিল্প অন্যান্য পাট উৎপাদনকারী দেশের সঙ্গে ব্যাপক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে এ শিল্পে আগের মতো আধিপত্য আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারছি না। পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষস্থানীয় হওয়ায় আমরা বিশ্বব্যাপী পাটপণ্যের বহুমাত্রিক ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরতে পারি। পাটতন্তু দ্বারা আকর্ষণীয় শপিং ব্যাগ তৈরি করে খুব সহজেই পাশ্চাত্যের দেশে সুলভ মূল্যে রপ্তানি করা যায়। গবেষণা সংস্থাগুলোকে পাটপণ্য ব্যবহারে বৈচিত্র্য আনতে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হবে। কিভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পাট চাষ করা যায় এবং পাটকাঠি, পাটতন্তু, পাট, পাটপণ্যের বিপণন করা যায়, তা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চালাতে হবে। শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন কারখানায় শত বছরের পুরনো মেশিন অপসারণ করে নতুন মেশিন আনতে এখনই উদ্যোগী হতে হবে। পাটতন্তুর ব্যবহারেও ব্যাপক বৈচিত্র্য আনতে হবে। অ্যাগ্রো টেক্সটাইল, জিও টেক্সটাইল, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ও হোম টেক্সটাইলে পাটতন্তুর ব্যবহার বাড়াতে হবে। সরকার, মিল মালিক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এ খাতের সব অস্থিরতা দূর করতে হবে। বর্তমান সরকার পাট উৎপাদনে যথাযথ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চালিয়ে যাচ্ছে নানামুখী প্রচেষ্টা। ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়ে পাঁচটি বন্ধ পাটকল চালু হয়েছে। দেশের ভেতরে পাটজাত পণ্যের বাজার যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এর রপ্তানিও। একই সঙ্গে বর্তমান সরকার ৬ মার্চকে ‘জাতীয় পাট দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সরকারের এসব সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক, ভোক্তাসহ প্রায় চার কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনার পাট খাতের জীবন ফিরে এসেছে। পাট উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শ্রমিকের মূল্য কম এবং আবহাওয়া ও মাটি পাট চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় খুব সহজেই এ খাত বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে। এতে দেশে বেকারত্বের হার যেমন কমবে, তেমনি আমরা ফিরে পাব হারানো গৌরব।
সাভার, ঢাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন