Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মাদারীপুরে ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে বাদী পক্ষকে বেঁধে রেখে নির্যাতন, পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৩:৪৭ পিএম

ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার হওয়ায় বাদীর আত্মীয়স্বজনকে আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে আসামী পক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের পশ্চিম রাস্তি গ্রামে। নির্যাতনের শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছে বাদীর আত্মীয় স্বজনরা।
শুক্রবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাব্বির নামে এক বখাটে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে এক কিশোরী। দুই বছর হয়ে গেলেও বিয়ে না করায় ১৯ জুলাই রাতে সদর মডেল থানায় সাব্বিরকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের নামে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে ভুক্তভোগী কিশোরী। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হওয়ায় দুপক্ষে সম্মতিতে বিয়ে হলেও মেয়েটিকে মেনে নেয়নি ছেলের পরিবার। তাই মামলাও তুলে নেয়নি বাদী পক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলার ২মাস পর প্রধান আসামী গ্রেফতার হলেও আসামী পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেয়া জন্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামীর পক্ষের স্বজনেরা বাদীর মামা বারেক মোড়ল ও তার পরিবারের সকল সদস্যকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ করেছে। এরপর পুলিশকে বিষয়টি জানালে তার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তারপর থেকে নির্যাতনের ভয়ে বারেক মোড়ল (বাদীর মামা) সহ তার পরিবার এলাকা ছাড়া হওয়ার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ধর্ষণ মামলার বাদী বলেন, প্রধান আসামী গ্রেফতারের পর থেকে আমার দুলাভাইকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেয়ার জন্য। আমি সাব্বিরের ৯ মাসের সন্তান গর্ভে নিয়ে অসহায় হয়ে দুলাভাইয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। আমি ও আমার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা চাই।
ধর্ষণ মামলার বাদীর ভগ্নীপতি সেলিম আহম্মেদ বলেন, আমাদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে আসামীর পক্ষের লোকজন। রাস্তি এলাকায় মামা- মামি ও তার মেয়েকে পার্শ্ববর্তী একটি ইটের ভাটায় আটকে রেখে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে, এরপর ৩-৪ ঘন্টা পর পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। ভয়ে এলাকা ছেড়ে সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে। তাই কোন অভিযোগ করতে পারছি না। তাদের পেলেই আইনগতভাবে অভিযোগ দেয়া হবে।
এব্যাপারে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সাব্বিরের বাবা মতলেব সরদার বলেন, আমিতো সবকিছু মেনে নিয়েছি, তারপরও কেন আমার ছেলেকে গ্রেফতার করলো। তাছাড়া আমরা কাউকে মারধর করি নাই। শুনছি স্থানীয় একটি ক্লাবের লোকজন ওদেরকে নিয়ে গিয়েছিল এর বেশী আমি জানি না।
মাদারীপুর সদর থানা এসআই বিল্টু দাস জানান, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা হওয়ার পর গত ৭ সেপ্টেম্বর আসামী সাব্বিরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাদী পক্ষের মামা-মামিকে বেধে রেখে মারধর করার কথা শুনি নাই। শুনেছি ঐ এলাকা একটি শালিস বসেছিল সেখানে একটু হাতাহাতি হয়েছে, আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে বাদী পক্ষের লোকজনকে ঐ খান থেকে নিয়ে আসি।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জানান, যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তারা থানা মামলা করলে আমরা আইনগত সহায়তা করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ