Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

টিকফা বাস্তবায়নে অনাগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৮:৪৭ পিএম

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত টিকফা চুক্তি বাস্তবায়নে কোন আগ্রহ দেখায়নি যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে গত বৃহষ্পতিবার অনুষ্ঠিত ট্রেড এন্ড কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা)-এর চতুর্থ বৈঠকে বাংলাদেশ এই চুক্তি বাস্তবায়নের জোর দাবি করলেও এ বিষয়ে কোন আশ্বাস দেয়নি তারা। বৈঠকে দুই পক্ষ পারস্পরিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার কথা বললেও জেনারাইলজড সিস্টেমস অব প্রেফারেন্স বা জিএসপি নিয়েও অবস্থান পরিবর্তনের আভাস মেলেনি।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য সম্প্রসারিত করারও অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বালি মিনিস্ট্রিয়াল সিদ্ধান্তের আলোকে ডিউটি-ফ্রি বাজারের সুবিধার কথাও জানানো হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের মুখপাত্র শামিম আহমাদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের নার্স ও ধাত্রীদের অন্যান্য সেবামূলক খাতে অংশগ্রহণ করার প্রক্রিয়া সহজ করার আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মার্কিন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।’
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন উপবাণিজ্য প্রতিনিধি মার্ক লিন্সকোট ও বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব শুভাশিষ বোস। বাংলাদেশের ১২ সদস্যের প্রতিনিধির মধ্যে আরও ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন সচিব মইনুল ইসলাম, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা সেল-এর মহাপরিচালক মুনির চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য প্রকাশ দেওয়ান এবং বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা।
২০১৩ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র টিকফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে দুই দেশ।
ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর)-এর পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়সহ সামগ্রিক শ্রম সংস্কার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে তারা আশা করে দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির আরও অগ্রগতি হবে।’
মার্কিন কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে পণ্য রফতানির বিষয়ে আলোচনা করেছেন, বিশেষ করে তুলা ও ওষুধ। এছাড়া বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষা, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও ডিজিটাল অর্থনীতি তৈরির ওপরে জোর দিয়েছে তারা।
কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘পিউ রিসার্চ’ মার্কিন সরকারের ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন’ এক প্রতিবেদনে বলে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য বিক্রি করতে ২৩২ দেশের মাঝে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ শুল্ক দিতে হয়। তাদের হিসাবে, বাংলাদেশের প্রায় সকল পণ্যের উপরে গড়ে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক আদায় করা হয় কম্বোডিয়ার কাছ থেকে (১৪ দশমিক ১ শতাংশ)। এরপর রয়েছে শ্রীলঙ্কা (১১ দশমিক ৯ শতাংশ), পাকিস্তান (৮ দশমিক ৯ শতাংশ), ভিয়েতনাম (৭ দশমিক ২ শতাংশ), চীন (২ দশমিক ৭ শতাংশ), জাপান ও জার্মানি (২ শতাংশ)।
এ থেকে এটা পরিষ্কার, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। একই সঙ্গে দু’দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে স্থবিরতার কারণে এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নেবার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের ভালো খাতায় নেই। তবে উভয় দেশের একে অপরের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হলে যেসব চ্যানেলের মাধ্যমে তা প্রকাশ পাবে, তার একটা হলো টিকফা। সূত্র- ইউএসটিআর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ