Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে লাভ নেই

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:২১ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। উত্তরপাড়া থেকে কেউ সাড়া দেবেন না। তাদের কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। এমন মানসিকতা কারো নেই। তবে কেউ এসে আমাকে মেরে ফেললে ফেলতে পারে। যেমনটি পচাত্তরে করেছিল।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সরকারের কোন উন্নয়ন দেখেন না তারা চোখ থাকতে অন্ধ। তাদের মনের দরজা বন্ধ। এ সরকারের ভাল কাজ তারে চোখে পড়ে না। যারা মানুষ হত্যা করে, গ্রেনেড হামলা করে, অর্থ লুটপাট করে তারাই আশায় থাকেন যদি কিছু একটা হয়। কিন্তু উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। যুক্তফ্রন্টকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের স্বাগত জানাই। তারা রাজনীতি করুক। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটা প্লাটফরম তো থাকা দরকার। কিন্তু অন্যকিছু ভাবলে তাদের আশা পূরণ হবে না। যুক্তফ্রন্ট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তারা অভিযোগ করেছে তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়া হয়নি। আসলে সেখানে আরও কেউ জনসভা করতে চেয়েছিল। তাই হয়তো যাচাই বাচাই করতে গিয়ে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ডিএমপিকে বলব, তাদের যেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়া হয়, প্রয়োজনে স্থায়ী একটা মঞ্চ করে দেওয়া হবে যেন তারা ৬০-৭০ জন মিলে গলা ফাটিয়ে বক্তৃতা করতে পারেন। প্রয়োজনে লোকও দেব।
শেখ হাসিনা বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবে। আমি ছয় মাস পর পর সার্ভে রিপোর্ট করছি। আমাদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্রার্থীদের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। দু’একজন বাদে অধিকাংশ এমপিদের অবস্থা ভাল।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপির জাতিসংঘ সফর ও ভারতের বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এর সঙ্গে ফোনালাপের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, নাটক করার করার কী, মিথ্যাচার করার দরকার কী? এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষন্ন হয়। কেউ দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করলে বরদাশত করা হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকাতে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এত টাকা তারা পেলেন কোথায়? এর আগে তারা জয়কেও হত্যাচেষ্টা করেছিল। যারা অর্থ লুট করে, এতিমের টাকা মেরে খায় দেশবাসিকে বলব তাদের পরিহার করুন।
আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের গ্রেফতার সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে একজন আতেল তো আল জাজিরা টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিলেন, এখানে নাকি গণহত্যা চলছে। আল জাজিরা ক্ষমা চাইল তাদের ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য। আবার কেউ ফেসবুকে বললেন, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। তিনি যেখান থেকে বললেন, পেছনে তো অন্য সাইনবোর্ড ছিল। দরজিপাড়ায় স্কুলড্রেস বানানোর ধুম পড়ে গিয়েছিল; পলাশীতে ভীড় আইডি কার্ড বানানোর। এদের অপপ্রচারের কারনে আমার পার্টি অফিসে হামলা হল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হল। যারা গুজব রটিয়েছে মিথ্যাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেবই।
প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর রুদ্ধদার বৈঠক শুরু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে বসেছি, দুর্নীতি করতে নয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দূর্নীতি করতে নয়, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সরকার কাজ করছে। পদ্মাসেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি তখন বলেছিলাম- আমি দূর্নীতি করতে ক্ষমতায় বসিনি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে বসেছি। নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং আমরা তা করছি।
গতকাল সকালে গণভবনে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) ২২তম জাতীয় কনভেনশনের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কি পেলাম, কি পেলাম না, তার চিন্তা না করে আগামী প্রজন্ম যেন সুন্দর জীবন পায় সেই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের দেশকে আগে গড়ে তুলতে হবে। দেশ যতো এগিয়ে যাবে, যত উন্নত হবে, তত বেশি সুফল ভোগ করা যাবে। তাই এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।
দক্ষ মানবসম্পদের চেয়ে কোন সম্পদই বড় নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এজন্য জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।
তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকার প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সুন্দর আগামীর জন্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারসহ সকলকে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০০টির কাজ শুরু করা হয়েছে। এছাড়া ৪টি সরকারি মহিলা পলিটেকনিক ও ২৩টি বিশ্বমানের নতুন পলিটেকনিক স্থাপনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারি কর্মচারিদের বেতন ১২৩ ভাগ বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রত্যেকের কাজের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়েছি, কর্মক্ষেত্রে কাজের পরিবেশ যাতে সুন্দর হয় সে ব্যবস্থা আমরা করেছি এবং সর্বোপরি এত বেশি প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি এবং কাজ করে যাচ্ছি যার সুফল বাংলাদেশের জনগণ পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামগুলোকে আরো উন্নত করতে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে, শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছানো হবে। গ্রামেও যেন মানুষ উন্নত বাড়িঘর করতে পারে সেজন্য ঋণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।ঢাকাকে আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরো ঢাকাজুড়ে আমরা সার্কুলার রোড করবো, এই সার্কুলার রোড হবে মাটিতে নয় আকাশ জুড়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হবে। ঢাকা অত্যাধুনিক শহর হিসেবে গড়ে উঠবে। আইডিইবি সভাপতি প্রকৌশলী একেএমএ হামিদ অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল থেকে কাকরাইল আইডিইপি ভবনের উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ কাজ এবং ভবনটির সম্মুখে রক্ষিত স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যও উদ্বোধন করেন।



 

Show all comments
  • টুটুল ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৩:৫৩ এএম says : 3
    একদম ঠিক কথা বলেছেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ