Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারতপন্থী পিডিপি’কে প্রত্যাখান করেছে ভুটানের ভোটাররা

প্রথম দফা নির্বাচনে ডিএনটি দল জয়ী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:১০ পিএম

ভুটানের নির্বাচনে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতপন্থী পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) বড় রকমের বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। গত শনিবার অনুষ্ঠিত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ (ন্যাশনাল এসেমবিø-এনএ) প্রথম দফা নির্বাচনে দলটি বিজয় লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের এই ফল পর্যবেক্ষক ও রাজনীতিবিদ নির্বিশেষে সবাইকে বিস্মিত করেছে। খবর সাউথ এশিয়ান মনিটর।
ভুটান নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্যমতে প্রধানমন্ত্রী শেরিং টবগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) নির্বাচনী ফলাফলে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে নবাগত রাজনৈতিক দল ড্রুক নিয়ামরাপ শোগপা (ডিএনটি)। দলটি মোট ২ লাখ ৯১ হাজার ৫৮ ভোটের মধ্যে ৯২ হাজার ৭২২ ভোটে (৩১.৫% ভোট) বিজয়ী হয়েছে। সরকার বিরোধী ড্রুক ফুয়েনসাম সগপা (ডিপিটি) ৯০ হাজার ২০ ভোট (৩০.৬% ভোট ) পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর ক্ষমতাসীন দল পিডিপি ৭৯, ৮৮৩ ভোট (২৭.২% ভোট) পেয়ে রয়েছে তৃতীয় স্থানে। নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ৬৬.৩% ভোট পড়েছে। ২০১৩ সালে পড়েছিলো ৫৫.৩%।
ভুটানের সাধারণ নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম রাউন্ডে সবেচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই দল চ‚ড়ান্ত রাউন্ডে অংশ নেবে। ফলে পিডিপি’কে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে। ভুটানের সংবিধান মোতাবেক সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত দল দুটি ১৮অক্টোবর চ‚ড়ান্ত দফা ভোটে অংশ নেবে।
ধারণা করা হচ্ছে এবার সর্বোচ্চ ভোট পড়ার কারণ পোস্টাল ব্যালট এবং এটাই ফলাফল নির্ধারণে ভ‚মিকা রেখেছে। পোস্টাল ব্যালট ম‚লত আমলা, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও তাদের পরিবার, কর্পোরেট কর্মচারি, প্রবাসী ভুটানি ও বিশেষ প্রয়োজনসম্পন্ন ভোটারদের জন্য।
এদিকে নির্বাচনী ফলাফল বিষয়ে নয়াদিল্লী কোনো মন্তব্য করেনি। চূড়ান্ত ভোট অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তা করবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে সূত্র জানায়, নির্বাচনে যেই বিজয়ী হোক না কেন, নয়াদিল্লী তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ বন্ধ হওয়ার পর প্রথম পোস্টাল ব্যালটের ফলাফল আসা শুরু হলেই বুঝা যায় ডিএনটি বেশ ভালো করেছে। ২০১৩ সালের নির্বাচনের প্রাথমিক রাউন্ডে ডিএনটি বাদ পড়েছিল। প্রাথমিক রাউন্ডে তখনকার ক্ষমতাসীন দল ডিপিটি পেয়েছিলো ৪৫% ভোট। আর পিডিপি পেয়েছিলো ৩৩%। কিন্তু চ‚ড়ান্ত রাউন্ডে পিডিপি বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।
ডিএনটি’র দলীয় প্রধান লোতে শেরিং একজন ইউরোলজিস্ট। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় ধনী-গরিব বৈষম্য কমিয়ে আনা ও বেকারত্ব মোকাবেলার উপর গুরুত্ব দেন। প্রথম রাউন্ড থেকে পিডিপি বিদায় নেবে এটা কেউ ভাবতে পারেনি। লোতে বলেন, ‘আমরাও খুব অবাক হয়েছি। পিডিপি ভালো করবেই বলে আমাদের ধারণা ছিলো।’
নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার এক ঘন্টার মধ্যে পিডিপির প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে পরাজয় মেনে নেন।
ভারত কি ফ্যাক্টর?
২০১৩ সালে ভুটানের নির্বাচনে ভারত ফ্যাক্টর বেশ প্রভাব ফেলেছিলো। চ‚ড়ান্ত দফা ভোট গ্রহণের আগে ভুটানে রফতানি করা জ্বালানি তেল ও রান্নার গ্যাসের উপর ভর্তুকি প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। ফলে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয় ভুটানবাসীকে। ভারত-বিরোধী হিসেবে পরিচিত তৎকালিন ক্ষমতাসীন দল ডিপিটিকে বিদায় করতে নয়াদিল্লি কাজটি করেছিলো বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়। ডিপিটি’র প্রধানমন্ত্রী জিগমে থিনলে ২০১২ সালে রিও ডি জেনেরোতে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও-এর সঙ্গে সাক্ষাতসহ আরো কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, যা ভারতের পছন্দ হয়নি। নির্বাচনের ফলাফলেও এর প্রভাব দেখা যায়। ক্ষমতায় আসে পিডিপি।
তবে এবারের নির্বাচনে ভারতের সঙ্গে ভুটানের সম্পর্কের বিষয়টি তেমন আলোচনায় ছিলো না। অবশ্য নির্বাচনী প্রচারণায় ডিপিটি’র বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি ঘটানোর চেষ্টার অভিযোগ করে পিডিপি। তবে ডিপিটি বলে আসছে যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটি ‘সবসময় দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে রাখতে হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতপন্থী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ