Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাকৃবি ভিসির কার্যালয়ে মারমুখী কর্মকর্তারা

বাকৃবি সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভিসির কার্যালয়ে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০/৩৫ জন কর্মকর্তা। এসময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদের নেতারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিসির কার্যালয়ে হঠাৎই প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ও নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর নিজ কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। দুপুর ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা ভিসি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোন অনুমতি ছাড়াই হঠাৎ করে প্রায় ৩০/৩৫ জন কর্মকর্তা ভিসির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। তারা তাদের চলমান দাবি নিয়ে ভিসির সাথে কথা কাটাকাটি ও গালিগালাজ করতে শুরু করে। এসময় প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান অফিসারদের সবাইকে হট্টগোল না করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কথা বলতে ও আলোচনায় বসার কথা বলেন। এতে করে তারা আরও ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ ভিসির সামনেই প্রো-ভিসির দিকে তেড়ে যায় এবং গালিগালাজ করতে থাকে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মো. খাইরুল আলম নান্নু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল ভিসির সাথে খারাপ আচরণ করেন। এরপরে তারা নিজের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এসময় ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান খোকন এবং ভারপ্রাপ্ত ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোক্তার হোসেন উপস্থিত থাকলেও কোন প্রদক্ষপ নিতে দেখা যায় নি।
এই বিষয়ে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান বলেন, আমি অফিসার পরিষদের নেতাদের কথা বলতে এবং অন্যদের সাপ্লিমেন্ট করতে বলি। এতে ওরা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকের সামনে কর্মকর্তাদের এমন আচরণ নিয়মবহিভর্‚ত।
এরপর কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের হাত ধরে টানাটানি শুরু করে এবং কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় আমাকে তাদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করতে বলে। ভিসি স্যারের আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে থাকায় আমি তাদের সাথে যোগ দিতে পারি নি।
এ ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অফিসার পরিষদের যুগ্ন-সম্পাদক জিয়াউল হক টিটু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল, মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, সংস্থাপন শাখার মোহাম্মদ আশিকুল আলম বাচ্চু, এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের সেকশন অফিসার মো. মেহেদি হাসান রাসেল। এসময় তারা বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকী দেয় এবং ছবি মুছে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
সাংবাদিকদের সাথে কয়েকজন কর্মকর্তাদের এমন আচরণে দুঃখ প্রকাশ করে অফিসার পরিষদের সভাপতি মো. আরিফ জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টা অনাকাঙ্খিত এবং দুঃখজনক। বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের উপর ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন বিষয়ে দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। দাবিগুলো একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। হুট করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ বডির সাথে এ ধরণের উদ্যেত আচরণ কখনো কাম্য নয়। আমরা শিক্ষক সমিতি ও গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাকৃবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ