Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রকল্প হলেও বাস্তবায়নে ঝুলন্ত দশা কাটছে না

দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর চালচিত্র পর্ব-১

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ভয়াবহ ভাঙনে উদ্বিগ্ন নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বর্ষা মৌসুম বিদায় নিলেও মধ্যাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল পর্যন্ত নদী ভাঙন পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে মন্ত্রণালয় হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রকল্প-প্রস্তাবনার অনুমোদন বাস্তবায়নও হতাশাব্যঞ্জক। নানা ধরনের জটিলতায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ঝুলে থাকছে মাসের পর মাস। ফলে একের পর এক জনপদ নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে।
বরিশালের কীর্তনখোলার ভাঙন থেকে চরবাড়িয়া ও মহানগরীর বেশ কিছু এলাকার ভাঙন রোধে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৩৩১ কোটি টাকার একটি ডিপিপি একনেক-এর অনুমোদন লাভের পরে নানা দীর্ঘসূত্রিতায় এখনো বাস্তবায়নের কাজই শুরু হয়নি। নদী শাসন প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী পুণঃগঠন করা হচ্ছে। কিছু প্রকল্প-প্রস্তাবনা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাষ্টে প্রেরণ করা হয়েছে অর্থের চাহিদা দিয়ে।
আবার কিছু প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন ও অধিকতর যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রকল্প কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির বিবেচনাধীন বলে জানা গেছে। আবার কিছু প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনের প্রি-একনেক ও কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির বিবেচনাধীন রয়েছে। তবে বেশীরভাগ প্রকল্পের অগ্রগতিই আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে নেই। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন হবে পাঁচ সহস্রাধিক কোটি টাকা।
বরিশাল মহানগরী ও সংলগ্ন চরবাড়িয়া এলাকায় কীর্তনখোলা নদীর ভয়াবহ ভাঙনরোধে প্রায় ৩৩১ কোটি টাকার প্রকল্প গত বছর সেপ্টেম্বরে একনেকে অনুমোদন লাভ করে। কিন্তু বছর পার হতে চলেছে। কিন্তু প্রকল্প এখনো বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। ‘ডিপার্টমেন্টাল প্রকিউরমেন্ট মেথড’এ ভাঙনরোধ প্রকল্প বাস্তবায়নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান প্রাক্কলিত মূল্য অপেক্ষা বেশি অর্থ দাবী করায় বিষয়টি নিয়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চলতি বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরুর ব্যাপারে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
প্রকল্পের জন্য বিগত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ টাকা ফেরত গেছে। প্রকল্পের আওতায় কীর্তনখোলা নদীর প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় সিসি ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষা ছাড়াও ৫.৬০ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের নকশানুযায়ী বেলতলা ফেরিঘাটের বিপরীত প্রান্তে কীর্তনখোলা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের একটি বড় অংশ ড্রেজিং করে কেটে ফেলা হবে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে ২৩টি প্যাকেজে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও এক বছরে অগ্রগতি শূণ্য।
এদিকে গত ৯ এপ্রিল একনেকের সভায় মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া-গোবিন্দপুর রক্ষা প্রকল্প অনুমোদন লাভ করে। ৩৮৬ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় সিসি ব্লক দিয়ে ২.৮৭ কিলোমিটার তীর রক্ষা ও নদী শাসন কাজ করা হবে। এর ফলে ওই এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী মেঘনা ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। কিন্তু গত প্রায় ৬ মাসে প্রকল্পটির কোন বাস্তব অগ্রগতি নেই। (আগামীকাল শেষ পর্ব)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ