Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে যান্ত্রিক গলদে দুর্ভোগ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বিদ্যুৎ যাতনায় অতিষ্ঠ বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসী। শরৎকালেও কড়া রোদের তেজে ভ্যাপসা গরমে ঘামে যখন মানুষ কাহিল তখন ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লোডশেডিং জনদুর্ভোগকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। শহর-নগর থেকে গ্রাম-জনপদ সর্বত্রই বিদ্যুৎ সঙ্কট। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে এলএনজির উৎস থেকে গ্যাসের জোগান ধাপে ধাপে বৃদ্ধির ফলে শিকলবাহা ও রাউজান তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের সঞ্চালন, বিতরণ ও যান্ত্রিক ব্যবস্থায় নানামুখী গলদের কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
অধিকাংশ সাব-স্টেশনে ট্রান্সফরমার, ব্রেকার, সিটিসহ হরেক যন্ত্রপাতি বিগড়ে যাচ্ছে যখন-তখন। পুরনো জরাজীর্ণ যন্ত্রপাতি ও সঞ্চালন লাইন জোড়াতালি মেরামত করে নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া যাচ্ছে না। নগরী ও জেলার অনেক স্থানে সংস্কার কাজের জন্যও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। কাজ চলছে ঢিমেতালে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুৎ খাতের কারিগরি ও যান্ত্রিক ত্রু টি নিরসন করে অবকাঠামো সুবিধার উন্নয়নে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে ধীর গতিতে। এ অবস্থায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে দৈনিক গড়ে ৮ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকেনা। অসহনীয় গরমের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং ও বিভ্রাটের কারণে ফ্যানের বাতাস পাওয়াই যেন ভাগ্যের ব্যাপার। বিদ্যুৎ ও গরমের কষ্টের সাথে যোগ হয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা দৈনিক সাড়ে ৭শ’ মেগাওয়াট। লোডশেডিং করা হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৬৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কাগুজে হিসাবে লোডশেডিং কম মনে হলেও চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ত্রু টি-বিচ্যুতি, ট্রান্সফরমারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি অকেজো, পুরনো, জরাজীর্ণ বেহালদশার কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটই হচ্ছে বেশীমাত্রায়। বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ছে অনেক এলাকা। জোড়াতালি মেরামতেও কাজ হয়না।
বিদ্যুৎ বিভাগের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী ট্রান্সফরমার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার সুযোগে ‘বিদ্যুৎ বাণিজ্য’ করছে গ্রাহকদের জিম্মি রেখে। বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকরা বাধ্য হয়ে চাঁদা তুলে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের হাতে সেই টাকা তুলে দিয়ে ট্রান্সফরমার মেরামত করাচ্ছেন। ঘন ঘন কেনইবা ট্রান্সফরমার ও যন্ত্রপাতি বিগড়ে যাচ্ছে তা নিয়ে গ্রাহকদের প্রশ্ন ও সন্দেহ রয়েছে।
বিদুৎ বিভ্রাটে চট্টগ্রামে বিদ্যুত-নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য ও কল-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি তৈরি ও মেরামতের ওয়ার্কশপগুলো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী-দোকানিরা ক্ষতির শিকার। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম বিরক্ত। দিনে ও রাতে ডিজেল চালিত জেনারেটরের একটানা ‘ঘড় ঘড়’ আওয়াজে চট্টগ্রাম মহানগরীর অভিজাত বিপণিকেন্দ্র, মার্কেট, সরকারি-বেসরকারি অফিস পাড়া, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্রগুলো মোটর গ্যারেজে রূপ নিয়েছে।
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সরকারি সেবা খাতসমূহকে গতিশীল করতে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে ধারাবাহিক বৈঠকের কর্মসূচির আওতায় গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ বিভাগকে নিয়ে সিটি মেয়রসহ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আলোচনা করেন। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে সঞ্চালন, বিতরণ ব্যবস্থা, কারিগরি ও যান্ত্রিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা অবিলম্বে নিরসনের তাগিদ দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎ

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ