Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পুলিশ এখন গায়েবি তথ্য উৎপাদনের কারখানা

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

পুলিশ এখন গায়েবি তথ্য উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, পুলিশ গত এক মাসে চার হাজারের বেশি ‘গায়েবি’ মামলায় বিএনপির সাড়ে তিন লাখ নেতা-কর্মীকে আসামি করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন-পুলিশের কাছে নাকি তথ্য আছে বিএনপি আন্দোলনের নামে নাশকতার ছক আঁকছে। সেজন্যই হাতিরঝিল থানায় বিএনপি মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের নামে মামলা হয়েছে। ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বলতে চাই-আপনাদের মতো আপনাদের পুলিশ’রাও এখন গায়েবী তথ্য উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। আপনাদের পুলিশ এমনই যে, ঐ মামলায় বর্ণিত ভাংচুর হওয়া গাড়ীর নম্বর জানে না। আর সমীক্ষার বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটের হারের প‚র্বাভাস দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে ‘গায়েবী পরিসংখ্যান ব্যুরোর অধিকর্তা’ বলেও অভিহিত করেছেন রিজভী। গতকাল (বুধবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গত এক মাসে ৪ হাজার ১০৮টি মামলায় ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪ হাজার ৪৮৩ জনকে। এর মধ্যে এজহারভুক্ত জ্ঞাত আসামির সংখ্যা ৮৪ হাজার ৭৮৩ এবং অজ্ঞাত হচ্ছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ২৪২ জন। অনেক মামলায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপি নেতার নামেও মামলা দেয়া হয়েছে, হজ্বে থাকাকালীন অবস্থায়ও মামলা দেয়া হয়, হাসপাতালে শায়িত ৮৩ বছর বয়স্ক বিএনপি নেতার নামে এবং বিদেশে থাকলেও মামলা দেয়া হয়। পুলিশ বলেছে-মগবাজারে ঘটনা ঘটেছে, অথচ সাংবাদিক’রা সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জেনেছে যে, ঐ এলাকায় গাড়ী ভাংচুর বা ককটেল বিস্ফোরণের কোন তথ্য প্রমাণ তারা পায়নি। এমনকি ঐ এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও গাড়ী ভাংচুর বা ককটেল বিস্ফোরণের কথা জানে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে। এমন ‘খয়ের খাঁ’ পুলিশ এখন আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় আশীর্বাদ।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ইচ্ছায় বিরোধী দল দমন করতে দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে গঠিত পুলিশের জুড়ি মেলা ভার। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র চায় না, আওয়ামী লীগ চায় আনুগত্যতন্ত্র। সেজন্য আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর একনিষ্ঠ অনুগত পুলিশ দেশজুড়ে গ্রেফতার আর মামলার জাল বিছিয়ে বিরোধী কন্ঠস্বর নীরব রাখতে চাচ্ছে। বর্তমানে দেশজুড়ে গোরস্তানের নীরবতা আর কবরের ভিতরের অন্ধকারের শান্তিতে ক্ষমতাসীনরা উৎফুল্লু, উল্লসিত। এজন্য বাংলাদেশে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের ভোটারবিহীন গণতন্ত্রের শাসন দীর্ঘস্থায়ী করতে পুলিশ বিএনপিসহ বিরোধী দলকে খতম করতে লাগামছাড়া অভিযান চালাচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, তাঁর পরিবারের লোকেরা কারাগারে তার সাথে দেখা করেছেন। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা দেখে স্বজন’রা ব্যথিত হয়েছেন। তাঁকে চিকিৎসাহীন অবস্থায় রাখা হয়েছে। বাম হাত-পা, হাতের আঙ্গুল নড়াচড়া করতে কষ্ট হচ্ছে। ফিজিওথেরাপিও একরকম বন্ধই করে দেয়া হয়েছে। তাঁর জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ফিজিওথেরাপিষ্ট ব্যবস্থা করা হয়নি। দেশনেত্রীকে গভীর স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে রাখাটাই যেন সরকার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই জন্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র কব্জা করে ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। এটা আইনী লেবাসে প্রতিহিংসা পূরণের নমূনা। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দানুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে তড়িৎ চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবী জানান।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, মুনির হোসেন প্রমুখ। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ