Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্তন ক্যান্সার

প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্তন ক্যান্সার খুব পরিচিত। আমাদের দেশে খুব কমন। প্রতিবছর অনেকেই এই রোগে মৃত্যুবরণ করে। অথচ একটু সচেতন হলেই স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। স্তনের কিছু কোষ যখন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে তখন স্তন ক্যান্সার হয়। অধিকাংশ মহিলাদের জন্য এই রোগ একটি আতঙ্কের কারণ। স্তন ক্যান্সার হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। এরমধ্যে আছে : ১। স্তনে একটি পি-ের মতো অনুভব হয়। পি-ের আকার বিভিন্ন রকম হতে পারে। ২। স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত বের হয়। সবসময় রক্ত যে বের হয় তা নয়। বিভিন্ন নিঃসরণ হতে পারে। ৩। স্তনের ত্বকে পরিবর্তন দেখা দেয়। ৪। স্তনের আকার ও আকৃতির পরিবর্তন হয়। ৫। স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যেতে পারে। ৬। স্তনের বোঁটার চামড়ার পরিবর্তন হয়। ৭। স্তনের ত্বক কমলার খোসার মতো হয়ে যেতে পারে।
স্তন ক্যান্সার রোগনির্ণয় সহজ। চিকিৎসক ভালোভাবে ইতিহাস নিয়ে এবং স্তন পরীক্ষা করে সহজেই এটি ধরতে পারেন। শতভাগ নিশ্চিত হবার জন্য ল্যাব পরীক্ষা করতে দেন। সচরাচর যেসব পরীক্ষা করা হয় তার মধ্যে আছে : ১। মেমোগ্রাম বা স্তনের এক্স-রে, ২। ব্রেস্ট আলট্রাসাউন্ড, ৩। এফ এন এ সি (ঋঘঅঈ), ৪। বায়োপসি (ইরড়ঢ়ংু), ৫। রক্তের পরীক্ষা, ৬। বুকের এক্স-রে, ৭। কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি স্ক্যান, ৮। পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফি স্ক্যান, ৯। ব্রেস্ট ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমাজিং
কার জন্য কোন পরীক্ষা লাগবে তা একজন চিকিৎসকই ঠিক করবেন। সুতরাং নিজে নিজে পরীক্ষা না করে একজন চিকিৎসককে দেখাতে হবে।
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় স্তন অপারেশনের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি অন্যান্য চিকিৎসাও দেয়া হয়। যেমন কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি অথবা রেডিও থেরাপি। তবে সবার জন্য এক চিকিৎসা নয়। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন চিকিৎসা লাগে। তাই ভালো একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এবং সার্জনের কাছে চিকিৎসা হওয়া উচিত।
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে সাধারণত বয়স যখন পঞ্চাশের পরে যায় তখন। মেদবহুল শরীর এবং যারা অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে তাদের স্তন ক্যান্সার বেশি হয়। তাই ওজন কমাতে হবে। পরিশ্রম করা অভ্যাস করতে হবে। যাদের পরিবারে আরও মহিলাদের স্তন ক্যান্সার আছে এবং অল্প বয়সে মাসিক শুরু বা অধিক বয়সে মাসিক শেষ হয়েছে তাদের স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশি। একেবারেই গর্ভবতী না হওয়া, অধিক বয়সে প্রথম গর্ভধারণ, বুকের দুধ না খাওয়ানো, যাদের জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হয়েছে এবং যারা স্তনে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মুখোমুখি হয়েছে তাদের স্তন ক্যান্সার বেশি হয়। বাচ্চাকে তাই নিয়মিত বুকের দুধ দিতে হবে। বেশি বয়সে মা হলে স্তন ক্যান্সার ছাড়াও অন্য সমস্যা হয়। এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শাকসবজি ও ফলমূল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এগুলো বেশি করে খেতে হবে।
স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের জন্য একটি কার্যকরী পদ্ধতি হলো নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করা। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। অনেকে স্তনে সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে চায় না। এটি মোটেও ঠিক নয়। বর্তমানে অনেক মহিলা চিকিৎসক আছেন। তাই স্তনে কোন চাকা বা পি- দেখা গেলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। তাতে অনেক জটিলতা এড়ানো যায়।
ষ ডাঃ মো. ফজলুল কবির পাভেল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্তন ক্যান্সার

২৭ এপ্রিল, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন