Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইউপির নির্বাচন পরবর্তী খুলনায় চরমপন্থী উত্থান

প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে ঃ সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ শিকারে নেমেছে নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠনগুলো। তাদের মোটা অংকের চাঁদা আদায়ের মূল টার্গেট পরাজিত ও বিরোধী দল-মতের প্রার্থীরা। আবার বিজয় প্রার্থীরা ভবিষ্যতের পথের কাটা দূর করতে জনপ্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যায় ভাড়া করছে চরমপন্থীদের। গত ২২ এপ্রিল দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ হাজী তমিজউদ্দিন সড়কের বাসিন্দা ফরিদউদ্দিন মানিকের কাছে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা নিতে এসে হাতেনাতে তিনজন গ্রেফতারের পর খুলনায় চরমপন্থীদের উত্থানের ব্যাপারটি আলোচনায় আসে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জীবনে বেঁচে থাকতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার হাজী তমিজউদ্দিন সড়কের বাসিন্দা ফরিদউদ্দিন মানিক।
তিনি সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল হোতাদের মুখোশ উন্মোচন ও তাদের গ্রেফতারপূর্ব দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল দুপুর ২টার দিকে বাসার কাজের লোক পান্না মিয়ার কাছে একটি দিয়ে চিঠির খাম দিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তি। চিঠিতে পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্টপার্টি, এমএল (জনযুদ্ধ) প্যাডে কম্পিউটার কম্পোজে চরমপন্থী সংগঠনের পরিচয়ে ৫লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে কাজের লোক পান্না মিয়া ও তার মোবাইলে ০১৮৫৫ ৯৬৬৩৫৯ নম্বর দিয়ে কল করে দাবিকৃত চাঁদার ৫লাখ টাকা চায়। টাকা না দিলে তাকে ও তার পরিবারের সকলকে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে বাসায় তাদের টাকা নিতে আসতে বলা হয়। সে মোতাবেক গত ২২ এপ্রিল দুপুর আড়াইটার দিকে লাল রংয়ের ১৫০সিসি একটি পালচার মোটর সাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল ১৯-৬৯৭৮) যোগে বেলাল হাওলাদার (৩৫), আমিনুল ইসলাম (২৯) ও মোঃ ফরহাদ (৩০) বাসায় এসে তার কাছে চাঁদার টাকা চায়। এসময় প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাদের আটক করে পুলিশে সোর্পদ করা হয়। এঘটনায় ওইদিনেই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের খেজুরবাড়ীয়া গ্রামের হাজী ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে মোঃ বেলাল হাওলাদার (৩৫), শরণখোলার রায়েন্দা গ্রামের ডাঃ আব্দুল বারেক আকনের ছেলে মোঃ আমিনুল ইসলাম (২৯) ও বিবাড়ীয়ার সরাইলের শোলাবাড়ীর আব্দুল হালিমের ছেলে মোঃ ফরহাদ (৩০) সহ ৩/৪জনকে আসামী করা হয়। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূলরহস্য উদ্ঘাটিত হবে বলে দাবি করেন তিনি।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে কতিপয় দু®কৃতিকারী আমাকে হত্যা করতে এই চরমপন্থী ক্যাডারদের ২০ লাখ টাকায় ভাড়া করেছে বলে গ্রেফতারকৃতদের মোবাইলে আলাপোনে জানতে পেরেছেন তিনি। ফলে গ্রেফতারকৃত রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ওই অর্থদাতা মূল চক্রান্তকারীদের মুখোশ উন্মোচন এবং তাদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে সকলের সহায়তা চাইলেন ভুক্তভোগী ফরিদ উদ্দিন মানিক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এস আই আলমগীর হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০দিনের রিমান্ড চেয়েছিলাম। কিন্তু আসামীরা অসুস্থ্যতার অযুহাত তোলায় রিমান্ড নামঞ্জুর করেন আদালত।
খুলনার রেঞ্জ ডিআইজি এসএম মনির-উজ-জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, খুলনা এখন অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক ভাল। খুলনার ডুমুরিয়া, রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া এক সময়ে চরমপন্থী জনপথের কুখ্যাতি ছিল। কিন্তু এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। দু’একটি বিশৃঙ্খল ঘটনার জন্য চরমপন্থী উত্থান বলাটা ঠিক নয়। তবুও পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউপির নির্বাচন পরবর্তী খুলনায় চরমপন্থী উত্থান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ