Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আমন ও চা আবাদে সুবাতাস

তিতলির প্রভাবে বৃষ্টি কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি

মিজানুর রহমান তোতা, নাছিম উল আলম, চট্টগ্রাম ব্যুরো ও আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

এ বছর পুরো বর্ষাকাল অনাবৃষ্টি ও তীব্র খরার দহনে অতিবাহিত হয়েছে। এখন ঘূর্ণিঝড় তিতলির সুবাদে আশ্বিনের শেষ প্রান্তে এসেই দেশজুড়ে বর্ষণের ফলে বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলের উঁচু-নিচু টিলা এবং উপত্যকাময় জমিতে আমনে পানিসেচের অভাব পূরণ হবে। প্রকৃতির অপার দান ‘অসময়ের’ এই রহমতের বৃষ্টিপাতের ফলে পরিপুষ্ট হবে আমন আবাদ। শীতকালীন শাক-সবজি ক্ষেত-খামারও বৃষ্টিতে হচ্ছে সতেজ। তবে কোথাও কোথাও প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সবজির আবাদ।
খরতপ্ত আবহাওয়ার কবলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৩০টি চা বাগানে দীর্ঘদিন আবাদ-উৎপাদন চরম মন্দাদশা বিরাজ করছির। অবশেষে আশ্বিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়েই টানা ভারী বর্ষণের ফলে সজীব হয়ে উঠেছে। এতে করে বৃদ্ধি পাবে চা পাতার আহরণ-উৎপাদন। আশ্বিনের বর্ষণে পরিবেশ-প্রকৃতি নতুন করেই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবারের ভরা বর্ষায় (আষাঢ়-শ্রাবণ মাস) এমনকি বর্ষার শেষেও (ভাদ্র মাস এবং আশ্বিনের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত) স্মরণকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে তীব্র অনাবৃষ্টির কবলে পড়ে সমগ্র বাংলাদেশ। গত সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন) মাসে সারাদেশে বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিক হার ও পরিমানের তুলনায় ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে আগস্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র) মাসে ভরা বর্ষা মৌসুমেই সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত হয় ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ কম। এর ফলে দেশে পর পর দুই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৪০ শতাংশই কম বৃষ্টিপাত হয়। চলতি অক্টোবর মাসে দেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড়-টিলা, উপত্যকাময় উঁচু-নিচু জমিতে আশ্বিনের শেষ প্রান্তের এই বর্ষণের ফলে আমন ফসল ও চা বাগানগুলোতে আবাদ-উৎপাদনে বইছে সুবাতাস। চট্টগ্রামের কৃষক ও চা শিল্প মালিক-শ্রমিকদের মাঝে খুশীর আমেজ তৈরি করেছে রহমতের বৃষ্টি।
যশোর : ঘুর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। রাতারাতি তরতাজা হয়ে উঠেছে রোপা আমন ধান। এই চিত্র বর্ণনা করলেন যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকজন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তা। সবাই বলেছেন, রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হবার আশা করা হচ্ছে। অথচ ক’দিন আগেও রোপা আমন ধান নিয়ে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা ছিলেন মহাদুশ্চিন্তায়। মাটির রস একেবারে শুকিয়ে গিয়েছিল। অতিরিক্ত খরচ করে সম্পুরক সেচ দিয়ে রোপা আমন ধান রক্ষা করতে হয়েছে।
এদিকে, গোটা উত্তরাঞ্চলসহ রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের আমন আবাদ খরার কবলে পড়েছিল। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং প্রচন্ড রোদ ও দাবদাহে কোনো কোনো এলাকায় আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি এতাটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল যে, ক্ষেতের ধান বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছিল। তিতলির প্রভাবের বৃষ্টি সে আশঙ্কা থেকে কৃষকদের রক্ষা করেছে। এখন সবাই বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
অন্যদিকে, নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি চায়ের জন্য বয়ে এনেছে সুবাতাস। কখনো কখনো মুষলধারে ও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি চা গাছের স্বাস্থ্যের জন্য উর্বরতা দান করছে। বয়ে নিয়ে যাচ্ছে সুদূরপ্রসারী উৎকৃষ্ট ফলাফল। ইতোমধ্যে ঠান্ডা আমেজ বইতে শুরু করেছে চা বাগানের এলাকাজুড়ে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ চন্ডিদাস কুন্ডু গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, এই বৃষ্টির কারণে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে। বেশীরভাগ এলাকায় ধান এখন ফ্লাওয়ারিং স্টেজে। এই সময় প্রচুর পানি লাগে ধানে। আমি গোটা অঞ্চলে সার্বক্ষণিক মনিটরিংএ আছি। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, তিতলির প্রভাবে বৃষ্টি হলেও আমাদের অঞ্চলে কোথাও ঝড়ো হাওয়া হয়নি। শুধু বৃষ্টি হয়েছে। থেমে থেমে এবং পরিমাণ মতো হয়েছে। যা ধানের জন্য খবুই উপকার হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মেহেরপুরের উপ পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বললেন, বরাবরই অক্টোবর রোপা আমনের জন্য কমবেশী ধাক্কা সামাল দিতে হয়। এবার বড় ধরণের ধাক্কা থেকে কৃষকরা রক্ষা পেয়েছেন। আমরাও স্বস্তিবোধ করছি। ক’দিন একেবারে সবসময় মাঠের দিকে নজর রাখতে হতো। কৃষকরাও বৃষ্টির আগে ক’দিন ধরে এসে বলতেন, রোপা আমন ধানের অবস্থা তো খারাপের দিকে যাচ্ছে। তিতলীর প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় মুহূর্তে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। তিনি বলেন, আমরা কৃষকদের সুখ দুঃখের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বড় দুশ্চিন্তায় ছিলাম রোপা আমন ধান নিয়ে। আর মাত্র মাসখানেকের মধ্যে রোপা আমন ধান কৃষকের ঘরে উঠে যাবে।
যশোর অঞ্চলের কৃষকরা জানান, এবার রোপার আমনে তারা ভালো লাভবান হবেন বলে আশা করছি। ধানের চেহারা খুবই ভালো। কোন রোগবালাই নেই। আল্লাহ সময়মতো বৃষ্টি দিয়েছে। আমরা খুব খুশী। কোন চিন্তা আর এখন নেই আল্লাহর রহমতে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, রোপা আমনের গড়পরতা সমস্যা খুব একটা হয়নি। অন্যান্যবার অক্টোবরের শুরুতেই যেভাবে ধানে ব্লাস্ট রোগসহ পোকা মাকড়ের উপদ্রব হয়তো-তা থেকে এবার রক্ষা পাওয়া গেছে। আর কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, যশোর, খুলনা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে চলতি মৌসুমে ৬লাখ ৮২হাজার ৬৮৪ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়। এর মধ্যে উফসী জাতের ৬লাখ ৬হাজার ৭৯২ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৭৫হাজার ৮৯২ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭লাখ ৭১হাজার ৫২৯ মেট্রিক টন চাল।
বরিশাল : ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ ভারতের উড়িষ্যা-অন্ধ্র উপক‚লে আঘাত হানলেও বাংলাদেশের আমনের জন্য বয়ে এনেছে আশির্বাদ । যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্যও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ১০ বেশী জমিতে আমন আবাদ হলেও উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের অনেক এলাকায় বৃষ্টির অভাবে বিপুল পরিমান জমিতে সেচ দিতে হচ্ছিল। ফলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ভালো ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকের ঘুম হারাম। পানির অভাবে অনেক জমি ফেটে চৌচির যায়। সে বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাচ্ছে আমন ফসল। তবে এ ঝড়ের প্রভাবে সাগর কিছুটা ফুসে ওঠায় উপক‚লের কিছুস্থানে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি অনেক আমনের জমিকে প্লাবিত করেছে। তবে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এসব পানি সরে গেলে তেমন কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
চলতি আমন মৌসুমে দেশের ৫৩ লাখ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৩৭ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে সে লক্ষ্য অতিক্রম করে দেশে প্রায় ৫৫ লাখ হেক্টরে আমন আবাদ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলেও ৭ লাখ ১২ হাজার হেক্টর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় কাছাকাছি আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টনের কাছে।
ঘূর্ণিঝড় তিতলি বয়ে নিয়ে আসা বর্ষণ সারা দেশের মত গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান খাদ্য ফসল আমনসহ আগাম রবি ফসলের জন্যও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদরা। গত তিন দিনে বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কলাপাড়াসহ উপক‚লের অনেক এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল ৬০-৭০ মিলিমিটার।
আবহাওয়াবিদদের মতে, চলতি বছরটি সাম্প্রতিককালের উষ্ণতম সময় পার করছে বাংলাদেশেসহ গোটা উপমহাদেশ। বৃষ্টিপাতের ঘাটতির কারণে আমনের ফলন ঝুঁকিতে পড়েছিল। এসময়েই তিতলি’র বর্ষণ ইতিবাচক ফল দেবে আমনসহ সব ফসলে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলে আমনের থোর আসতে শুরু করেছে। আগামী মাস খানেকের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধান বের হয়ে মাস দেড়েকের মধ্যে সোনালী ধান কৃষকের মুখে হাসি ফোটাবে। এবারের আমন উৎপাদন লক্ষ্য অতিক্রম করে দেশে অন্তত দেড় কোটি টন চাল পাবার প্রত্যাশা করছেন দায়িত্বশীল কৃষিবিদরা।
আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা : টানা দুদিন বৃষ্টির পর বগুড়ার আদমদীঘির ৬ টি ইউনিয়ন ও সান্তাহার ১টি পৌরসভার আমন ধানের মাঠ যেন সবুজ বিছানায় পরিপূর্ন। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু সবুজ আর সবুজের সমারহ। এ এলাকার কৃষকের মনে দোলা দিচ্ছে এক নতুন আমেজ। বৃষ্টির কারণে ‘শস্য ভান্ডার’ খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় এবারও আমন ধান আবাদের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১২হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে রোপা অমন ধান চাষ করা হেেয়ছে। এর মধ্যে ছাতিায়নগ্রম ইউনিয়নে ২১৮৫ হেক্টর, আদমদীঘি সদর ইউনিয়নে ১৮৮০ হেক্টর,চাপাপুর ইউনিয়নে ২১৬০ হেক্টর,কুন্দুগ্রাম ইউনিয়নে ২১ শো হেক্টর, নশরৎপুর ইউনিয়নে ১৭ শো হেক্টর এবং সান্তাহার পৌরসভা ও ইউনিয়ন মিলে ২২শো হ্ক্টের জমিতে হাইব্রিট, ব্রি-ধান-১১, ৩৪, ৬২, ৪৯, স্বর্ণা-৫, রনজিত, পায়জাম সুুগুন্দিসহ বেশ কয়েক জাতের আমন ধান রোপন করা হয়। এবার উপজেলায় বন্যা না হওয়ায় নিম্মাঞ্চলে কৃষকদের লাগানো ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। ফলে চারা লাগানো পর দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গত বছরের তুলনায় এবার এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ধান ক্ষেতে তেমন কোন রোগবালাই দেখা যায়নি। আমন ধানের গাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা সার্বক্ষনিক জমিতে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন। এখন সবুজে ঘেরা আমনের মাঠ দেখে যেন এক মূহুর্তের জন্যেও বিশ্রাম নেয়ার ফুরসত নেই কৃষকদের। যেদিকে চোখ যায় সেদিক সুধু সবুজের অপরুপ সমারহে মাঠেমাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের পাতা। কৃষকদের মনে দুলছে আনন্দে। ইতিমধ্যে অনেক জমিতে আগাম জাতের ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে।
অপরদিকে, হঠাৎ বৃষ্টিতে চা আবাদে সুবাতাস বয়ে এনেছে। শ্রীমঙ্গলের শ্রীবাড়ি চা বাগানের একজন কর্মকর্তা বলেন, চায়ের জন্য সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত অবশ্যই মঙ্গলজনক এবং তা আগাম সুফল বয়ে আনবে। এই সুফলটা হলো, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে যে খরা হয় সেই খরা কাটতে সাহায্য করবে এই বৃষ্টি। চা গাছের মাটিতে ময়েশ্চার তৈরি হয় তা ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, তারপর আরেকটি উপকারে আসবে এই বৃষ্টি সেটা হলো, যারা ইয়াং-টি বা নতুন চা গাছ লাগিয়েছে সেই গাছের জন্য অধিক উপকার বয়ে আনবে। ইরিগেশন (সেচ) করতেই হবে। কিন্তু বিশাল এলাকা ইরিগেশন দিয়ে ইয়াং-টি বা নতুন চা গাছের পানি দেওয়া কাভার করা খুব কঠিন ব্যাপার। আর রিমুট এরিয়ার জন্য ইরিগেশন তো আর জটিল ব্যাপার। তাই প্রাকৃতিক এই বৃষ্টিপাত সেচের জন্য অতি উত্তম।
স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত এবং পানি ছিটিয়ে সেচ দেওয়ার পার্থক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চা গাছে প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাত এবং ইরগেশনের মাধ্যমে পানি ছিটানো এই দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাতে ড্রপিয়ের একটি কন্টিনিউয়েশন থাকে। এই ড্রপিং-কন্টিনিউয়েশন থাকার ফলে চা গাছগুলো তার প্রয়োজনীয় পানিটুকু শোষণ করে নিতে পারে। কিন্তু ইরগেশনে সেটা সম্ভব হয় না।
হরিণছড়া চা বাগানের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা যে ইয়াং-টি লাগিয়েছি এটার জন্য এই বৃষ্টিপাত খুব সাপোর্ট দেবে। তাদেরকে পানিশূন্যতার হাত থেকে বাঁচাবে। বড়চেয়ে বড় উপকার হবে আমাদের চা বাগানের পাহাড়ি ছড়াগুলোর। কারণ এই মৌসুমে চা বাগানের ছড়াগুলো শুকিয়ে যায়। এই বৃষ্টিপাতের ফলে চা বাগানের ছড়াগুলোতে পানি জমা হবে এবং প্রায় মাসখানেক তা আমাদের সাহায্য করবে। এই পানিগুলো আমরা আমাদের ইরিগেশনে ব্যবহার করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, এই বৃষ্টিপাতের সুদূরপ্রসারী উপকারিতার অন্যতম উপকারটি হলো, এই বৃষ্টিপাতের ফলে পরবর্তী মৌসুমে তাড়াতাড়ি কুঁড়ি গজাবে। এখন যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এর ফলে চা গাছের মাটি পানি ধরে রেখে পরবর্তী খরা পর্যন্ত চা গাছগুলোকে খরা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাবে। ইয়াং-টি, ম্যাচিউর-টি বা নার্সারি-টি সব চা গাছের জন্যই এ বৃষ্টিপাত উপকারী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ