Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দৌলতপুরে সারের উচ্চ মূল্যে দিশেহারা কৃষক

প্রতি কেজিতে অতিরিক্ত ২-৩ টাকা দিতে হচ্ছে : ডিলারদের সার বিতরণে অনিয়ম

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

আমনের চলতি ভরা মৌসুমে সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার। ফলে বিপাকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কৃষকরা। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত মূল্যে আমনের অতি প্রয়োজনীয় ইউরিয়া সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা

সূত্র জানায়, দৌলতপুরে বিসিআইসি অনুমোদিত প্রতি ইউনিয়নে একজন করে মোট ১৪ জন সার ডিলারের নাম রয়েছে সরকারি তালিকায়। তবে তা শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। সরেজমিন এসব ইউনিয়নেই পাওয়া যায় না কোন ডিলারদের সন্ধান। এ সুযোগে খুচরা সার ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার লোভে কৃষকদের কাছে উচ্চ মূল্যে সার নিতে বাধ্য করছে।

দৌলতপুর কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে দৌলতপুরে ১৮হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ও রোপা আমনের চাষ হয়েছে। আমনের চাহিদা অনুযায়ী বিসিআইসি‘র ইউনিয়ন ভিত্তিক ১৪জন ডিলারের বিপরীতে আগস্ট মাস থেকে চলতি অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৩ হাজার ২শত ৬০মেট্রিক টন ইউরিয়া বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষকদের মাঝে বিক্রয় করার কথা। কিন্ত তা না করে কৃষকদের প্রতি কেজি ইউরিয়া ২-৩ টাকা অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে হচ্ছে। উপজেলার পার্শ্ববর্তী সরুপপুর গ্রামের কৃষক পরিবারের ছেলে আব্দুল মমিন জানান, খুচরা সার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৯-২০ টাকা কেজি দরে ইউরিয়া সার কিনে আমন ধানে ব্যবহার করছি। এছাড়াও ফসপেটসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সারও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে। চকদৌলতপুর গ্রামের আমন চাষী জনি জানান গতকাল সে ১৯ টাকা দরে ইউরিয়া কিনে আমন ধান ক্ষেতে দিয়েছে। আড়িয়া গ্রামের কৃষক জগলুলও একই অভিযোগ করে বলেন, খুচরা বাজারে তাকে ২০ টাকা কেজি ইউরিয়া সার কিনতে হয়েছে।

এলাকাবাসির অভিযোগ, বিসিআইসি‘র ইউনিয়ন ভিত্তিক ১৪জন ডিলার থাকলেও এলাকায় তাদের কোনদিন দেখা পাওয়া যায় না। চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, তার ইউনিয়নে সারের ডিলার কে তার জানা নেই। তবে শুনেছি উপজেলার পুটু নাকি সারের ডিলার। তাকে কোনদিন এলাকায় দেখিনি। আর দৌলতপুর ইউনিয়নের মানুষ কিভাবে চিলমারী ইউনিয়নের সারের ডিলার হয়েছে এটা আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তিনি আরও জানান, ইউনিয়ন ভিত্তিক সারডিলার নিজ এলাকার না হওয়ায় তার এলাকার কৃষক খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে উচ্চমুল্যে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। একই অবস্থা খলিশাকুন্ডি ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে।
খুচরা সার বিক্রেতারা জানান, দৌলতপুরের বিসিআইসি‘র ডিলাররা অধিকাংশই কুষ্টিয়া জেলা শহরসহ দৌলতপুরের বাইরে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন। সারের বরাদ্দপত্র নিয়ে তারা কি করেন তা তারা জানেন না। যার কারণে খুচরা বিক্রেতাদের অন্য উপজেলা থেকে বেশি দামে সার কিনে আনতে হচ্ছে। ফলে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রয় করতে হচ্ছে তাদের।

এ বিষয়ে কয়েকজন ডিলারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের কাউকে পাওয়া যায় নি। তবে দৌলতপুর কৃষি অফিসার এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, ডিলারদের পর্যাপ্ত সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ডিলারদের সার্বক্ষনিক মনিটরিংও করা হয়ে থাকে। অপরদিকে বেশি দামে সার ক্রয় ও নিজ এলাকায় সার ডিলাররা অবস্থান না করার বিষয়ে দৌলতপুর সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা এবং সার ডিলারদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ