Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কঠিন সময়ে জার্মানি

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

হঠাৎ কি যে হলো! এক বছর আগের প্রবল পরাক্রমশালী সেই জার্মানি যেন শুধুই স্মৃতি।

চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ব্যর্থতার আবর্তে প্রবেশ গত বিশ্বকাপের আগে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে খেলতে নেমে রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ গেল। এরপর ইউরোপের নতুন প্রতিযোগিতা উয়েফা নেশন্স লিগে জয় তো দুরে থাক একটি গোলও করতে পারেনি তারা। পরশু রাতেও নেদারল্যান্ডসের কাছে জোয়াকিম লো’র দল হেরেছে রেকর্ড ব্যবধানে।

আমস্টার্ডামে ম্যাচটি ৩-০ গোলে হেরেছে জার্মানি। হেরেছে না বলে উড়ে গেছে বলাই শ্রেয়। ডাচদের বিপক্ষে যে এটাই জার্মানদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। জার্মানদের বিপক্ষে কমলাদের জয়টাও এসেছে ১৬ বছর পর। আর এতকিছু ঘটেছে জার্মানির ডাগআউটে লো’র রেকর্ড (১৬৮) ম্যাচের দিনে।

২০১৪ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের করুন দশা বোঝাতে আরো একটু পিছনে যেতে হবে। গত দশ ম্যাচের ছয়টিতেই হেরেছে তারা। ১৯৮৫ সালের সেই পশ্চিম জার্মানির পর এই প্রথম এক বর্ষপঞ্জিকায় পাঁচ ম্যাচের বেশি হারল জার্মানি। গত দুই বছরে ১২ ম্যাচে জয় মাত্র তিনটি। এর মাঝে একটি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে সুইডেনের বিপক্ষে, বাকি দুটি সউদী আরব ও পেরুর বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো সুইডেনের বিপক্ষে টনি ক্রুসের সেই চোঁখ ধাঁধানো ফ্রি-কিক গোলের পর আর কোন গোলই করতে পারেনি জার্মানরা।

দলের এমন দশায় কোচকে নিয়ে সমালোচনা হবেই। সমালোচনা শুরু হয়েছে অবশ্য বিশ্বকাপের পর থেকেই। বিশ্লেষকদের মতে ১২ বছর ধরে কোচিং করানোর পর জার্মানিকে দেয়ার মত আর কিছুই নেই লো’র। এরপরও লো’র উপর আস্থা রেখেছিলেন দেশটির ফেডারেশন কর্তারা। তবে এহেন অবস্থা চলতে থাকলে কতদিন তা বজায় থাকবে সেটাই বড় প্রশ্ন। সবকিছু বুঝছেন লো নিজেও। পরশু ম্যাচ শেষে বাস্তবতা শিকার করে নিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি জানি এই হারের পর একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আমাদের এখন এই বিতর্ক মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। পরবর্তী দুই দিন আমি পুরোপুরি ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য দলকে প্রস্তুত করায় মনোযোগ দেব। আমি জানি এমন ফলের পর বিতর্ক হতেই পারে। ফুটবলে এটিই স্বাভাবিক। আজকের ম্যাচে আমরা বেশ কিছু গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি।’

ধারাবাহীক ব্যবর্থতার কারণ হিসেবে দলে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন রো, ‘হারের পর আপনি সম্প্রতিক ম্যাচগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন ছেলেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল। আর যদি বলেন গোল করতে পারছি না কেন? এর উত্তর দেয়া কঠিন, আমরা পরিস্কার সুযোগ তৈরী করছি।’

এদিন সুযোগ তৈরী করেছেন বলতে দ্বিতীয়ার্ধে লেরয় সানে ও হুলিয়ান ড্রক্সলার মাঠে নামার পর। প্রথমার্ধে জার্মানদের কোনঠাসা করে আক্রমণের ধার দেখায় নেদারল্যান্ডস। সফরকারী দলটি গোলও পেয়ে যায় ৩০তম মিনিটে, ফন ডিকের হেডে। ৫৭তম মিনিটে সানে-ড্রক্সলার একসাথে মাঠে নামার পর কিছুটা চেনা রুপে ফেরে জার্মানি। কিন্তু কয়েকবার সুযোগ তৈরী করতে পারলেও গোলের দেখা পায়নি। উল্টো শেষ দিকে রক্ষণের ভুলে দুই গোল খেয়ে বসে তারা। দ্রুত পাল্টা আক্রমণে উঠে ৮৬তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান মেম্ফিস ডিপে। আর যোগ করা সময়ে রেকর্ড জয় নিশ্চিত করেন জর্জিনিও উইজনালডাম। এর কিছুক্ষন আগে ডিপের একটি শট ক্রসবারে কাঁপিয়ে ফিরে না এলে আরো বড় লজ্জায় পড়তে হত প্রতাপশালী জার্মানিকে।

টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচ থেকে জার্মানির অর্জন মাত্র এক পয়েন্ট। সমান ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেদারল্যান্ডস, চার পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফ্রান্স। পরের ম্যাচে আরো কঠিন পরীক্ষা লো’র সামনে। স্টেডি ডি ফ্রান্সে মঙ্গোলবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আরো বড় পরীক্ষা লো’র। সেই ম্যাচে জয়ের প্রত্যয় লোর কণ্ঠে, ‘পরের ম্যাচে আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়তে হবে। হল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচেও ছিনিয়ে আনতে হবে জয়।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জার্মানি


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ