Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মতবিরোধ থাকলেও নির্বাচন করা কঠিন হবে না: সিইসি

নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় ধন্যবাদ পেলেন মাহবুব তালুকদার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ঠিক নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এসে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্য মতবিরোধ থাকলেও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে কোনো বাধার মুখে পড়তে হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এদিকে গতকালের সভায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি, তিনি বাকস্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে সিইসি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন
সাংবিধানিকভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনের জন্য করণীয় সব কিছুই করবে নির্বাচন কমিশন। কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। ভোটারদের নিরাপত্তা, প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলাসহ যাবতীয় বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। নির্বাচনের দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তাদের প্রভাবিত না হওয়ারও নির্দেশনা দেন তিনি। সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্রসহ তিন-চারটি বিষয়ে তারা কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। কোথায়, কীভাবে নির্বাচন সামগ্রী নেওয়া হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
স¤প্রতি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিইসি ও অন্য চার কমিশনারের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। টানা দেড় মাস কোনো বৈঠক না হওয়ার এটাও একটা কারণ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে কোনো কঠিন অবস্থার মুখে পড়তে হবে না। আরেক প্রশ্নের জাবাবে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, আমরা দেখি সংসদ সদস্যদের কিভাবে রাখেন। সরকারের অবস্থান কি থাকবে, এমপিদের অবস্থান কি থাকবে এটা নিয়ে আজকে কোনো কথা হয়নি।
আচরণবিধিতে কোনো পরিবর্তন আনবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আচরণ বিধিতে কিছু কিছু পরিবর্তনের উদ্যোগ নেব। তবে কি তা এখন মনে নেই। নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম তৈরি করেছেন। সামনে তিন-চারদিন পর আমাদের কমিশন সভা আছে। সেদিন এটি দেখা হবে। মাঠ কর্মকর্তারা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কি বলেছেন, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘তারা বলেছেন, তাদের যে দায়িত্ব সেগুলোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা, পুলিশের সহযোগিতা, জেলা পরিষদের সহযোগিতা এগুলো তারা প্রচুর পাচ্ছেন এবং তাদের এই পর্যন্ত যে প্রস্ততি তা ভালো। বৈঠকের আলোচ্য সূচি ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটার তালিকার সিডি যাচাই ও মুদ্রণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ এবং ক্ষেত্রমতে প্রতিষ্ঠানের বিশেষ সংস্কার, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত এবং প্রশিক্ষণের আয়োজন, নির্বাচনী দ্রব্যাদি সংগ্রহ, বিতরণ ও বাজেট প্রণয়ন বিবিধ।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসির অতিরিক্ত সচিব মো.মোখলেছুর রহমান, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ জেলা, আঞ্চলিক ও সিনিয়র জেলা অফিসারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার নির্বাচন কমিশনারদের সভায় বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা আপত্তি দিয়ে তা বর্জন করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এর আগে গত ৩০ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের সভা হয়। ওই সময় আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে আইন সংশোধনের প্রস্তাবে আপত্তি দিয়ে সভা ত্যাগ করেন মাহবুব তালুকদার। এরই মধ্যে সিইসি ও ইসি সচিবের একক কর্তৃত্ব নিয়েও অসন্তোষ জানান মাহবুব তালুকদারসহ অন্যরা।

তফসিলের পর এমপিদের আচরণবিধি হবে 
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সরকার কাঠামো দেখে এমপিদের জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন। তবে এরই মধ্যে আচরণবিধি সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সিইসি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি, মেয়ররা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রচার চালাতে পারবেন না। এ সময় সরকারি গাড়ি বা নির্বাচনি প্রচারের সময় সার্কিট হাউজে অবস্থান করতে পারবেন না। তবে এতেও সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে না বলে বরাবরই অভিযোগ বিএনপির। নির্বাচনকালীন সরকার দেখে নির্বাচন পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চায় কমিশন।
কে এম নূরুল হুদা জানান, সংসদ সদস্যরা কীভাবে নির্বাচনি প্রচার চালাবেন, তা নির্ধারণ করতে তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে জেলা নির্বাচনি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে কমিশন। এ সময় কর্মকর্তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেন সিইসি। মাঠ-পর্যায়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে বলে এসব কর্মকর্তারা কমিশনকে আশ্বস্ত করেছে বলে জানান সিইসি। সবার প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ