Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাল্টে যাচ্ছে কুমিল্লা ভূমি অফিসের আগের চিত্র

নেই ঘুষ নেই ভোগান্তি

প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : ভূমি অফিস মানেই ভোগান্তির আখড়া! জনসাধারণের মনে দীর্ঘদিন বাসা বেঁধে থাকা এই ধারণা পাল্টে দিচ্ছে কুমিল্লা সদর উপজেলার ভূমি অফিস। ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে ভোগান্তি ছাড়াই জমির নামজারি (মিউটেশন), জমি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য, পরামর্শ বিষয়ক কাক্সিক্ষত সুবিধা গ্রহণের জায়গাটি এখন সেবাগ্রহীতাদের হাতের নাগালে। কুমিল্লার সবকটি উপজেলার ভূমি অফিসের আগের চিত্র পাল্টে যাচ্ছে।
ভূমি অফিসে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হননি এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম। জমির নামজারি, ভূমিকর পরিশোধ, খাসজমি বরাদ্দ পেতে, জমি ক্রয়-বিক্রয় করার ক্ষেত্রে খোঁজখবর জানতে এবং রেকর্ড জানাসহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে এসে মানুষ কখনো দালালের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত টাকা গচ্চা দিয়েছে, কখনো বা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি দ্বারা ঘুষ, হয়রানীর শিকার হয়ে মাস বছর পার করে কাজটি সারিয়ে নিয়েছেন। ভূমি অফিস নিয়ে এমন নেগেটিভ ধারণা সেবাগ্রহিতাদের মন থেকে দূর করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা সহকারি ভূমি কমিশনারগণ। সেবাগ্রহিতাদের জন্য ভোগান্তি ছাড়া কাঙ্খিত সুবিধা নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোলের। তাঁর স্পষ্ট কথা- ভূমি অফিসে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না। তিনি বলেছেন ‘ভূমি অফিস ঘিরে জনসাধারণের যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে তা দূর করতে ভূমি অফিস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
কুমিল্লা সদর উপজেলা ভূমি অফিস ঘিরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোও সাধারণের জন্য খুলে দিয়েছে ভূমি সংক্রান্ত সেবার দরজা। শহর আর গ্রামের মানুষ এখন নিজ ভূমির কাজের কথা সরাসরি অফিসে এসে বলতে পারছেন সহকারি ভূমি কমিশনারকে। কুমিল্লা সদর উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর ভূমি অফিসসহ সাতটি অফিস রয়েছে। কুমিল্লা সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সবকিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। নগরীর রাজবাড়ি কম্পাউন্ড এলাকায় সদর উপজেলা ভূমি সহকারি কমিশনার কার্যালয়ে খোলা হয়েছে সেবাগ্রহিতাদের জন্য হেলপডেস্ক। অফিসের প্রবেশদ্বারের বারান্দায় লাগানো হয়েছে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহণের গাইডলাইন। তারমধ্যে সিটিজেন চার্টার টাঙানো, নামজারি, জমাখারিজ, জমা একত্রিকরণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী এবং এসব খাতে সরকারি খরচের বিবরণও দেয়া আছে বোর্ডে। কুমিল্লা সদরের রাজবাড়ি কম্পাউন্ডের ভূমি অফিসে নামজারি থেকে শুরু করে ভূমি সংক্রান্ত কাজে সেবা নিতে আসা মানুষগুলো পাল্টে যাওয়া কাজের ধরণে স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন ‘আগে এসব অফিসে এলে দালালরা ঘিরে ধরতো। এখন তো পরিবেশই পাল্টে গেছে। ঘুষ নেই, ভোগান্তি নেই।
কুমিল্লা সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রূপালী মন্ডল বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কঠোর নজরদারি ও দিক নির্দেশনায় ভূমি অফিসের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। সরকারি জমি রক্ষার ব্যাপারেও জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদেরকে দায়িত্বে সাথে ভূমিকা রাখার তাগিদ দিয়ে থাকেন।’ সহকারি কমিশনার (ভূমি) রূপালী মন্ডল আরও বলেন, ‘বর্তমানে সেবাগ্রহিতাগণ তাদের ভূমির নামজারির শুনানী ও নিষ্পত্তির তারিখ ও সর্বশেষ অবস্থা জানতে আমাদের এই অফিসে এসে ঘুরাঘুরি করতে হয় না। মোবাইল ফোনে ম্যাসেজে বা অনেক ক্ষেত্রে কল করেও জানিয়ে দেয়া হয়। ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজগুলোও মনিটরিং করা হয়ে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাল্টে যাচ্ছে কুমিল্লা ভূমি অফিসের আগের চিত্র
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ